চট্টগ্রামে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের পরিবেশ ও জলবায়ুর ক্ষতিকারক আর্জেন্ট এলএলসি-এর সঙ্গে করা সাম্প্রতিক তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন এবং বিডব্লিউজিইডি-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে টেকসই শক্তিতে রূপান্তরের আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এমনিতেই বৈদেশিক ও এলএনজি-নির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থার কারণে বিদ্যুতসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাবে এবং যার চুড়ান্ত পরিণতি জনজীবনে অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়বে। বক্তারা বাংলাদেশে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ অগ্রাধিকার দেবার জোর দাবি জানান।

আরো পড়ুন:

সাভারে ২টি সড়ক অবরোধ করে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ 

সড়কে আলু ফেলে কৃষকের বিক্ষোভ

ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘‘আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা থেকে মুক্ত হতে হবে। এই এলএনজি চুক্তি শুধু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থরক্ষা করবে, অথচ সাধারণ জনগণকে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা বইতে হবে।’’ 

বিক্ষোভ শেষে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রদানের দাবি জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব চকবাজার থানা সভাপতি আবদুল আলীম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সুফিয়া কামাল ফেলো ও নারী নেত্রী সায়মা হক, বিশিত নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক জান্নতুল ফেরদৌস প্রমুখ। 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ, পুরোনো শিল্পে বাড়তি ব্যবহারে নতুন দাম

ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের তীব্র আপত্তির পরও বাড়ল গ্যাসের দাম। নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৩৩ শতাংশ। প্রতি ইউনিটে ১০ টাকা বাড়তি দিতে হবে তাদের। পুরোনো শিল্পকারখানায় অনুমোদিত লোডের বাইরে অতিরিক্ত ব্যবহারে দিতে হবে বাড়তি দাম। প্রতিশ্রুত শিল্প গ্রাহকদের অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহারে বাড়তি দাম দিতে হবে।

আজ সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, দেশের গ্যাস কমার সঙ্গে সঙ্গে এলএনজি আমদানি বাড়তে থাকে। এলএনজির বাড়তি দাম দিতে গিয়ে চাপে পড়ে পেট্রোবাংলা। তারা ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। তবে গণশুনানিতে বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারী দাম বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।

দাম বাড়ানো হলেও এর সপক্ষে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বিইআরসি। দাম বৃদ্ধিতে সরকার কত টাকা বাড়তি আয় করবে, তা জানে না কমিশন। সাধারণত কোম্পানিগুলোর রাজস্ব চাহিদা হিসাব করে বিইআরসি। এরপর ঘাটতি পূরণে সরকার ঘোষিত ভর্তুকির ভিত্তিতে মূল্য সমন্বয় করা হয়।

কিসের ভিত্তিতে দাম বাড়ানো হলো— এমন প্রশ্নের জবাবে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব চাহিদা ধরলে দাম অনেক বেশি বাড়াতে হতো। তাই ভোক্তার জন্য সহনীয় রাখতে ৩৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভর্তুকিরও হিসাব করা হয়নি।
রাজস্ব চাহিদা যাচাই ছাড়া এভাবে দাম বৃদ্ধি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে করা হয়েছে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের প্রেসক্রিপশনে করা হয়নি।

নতুন ও পুরোনো শিল্পে আলাদা দাম রেখে যে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে, এটা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে কিনা; এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, বিইআরসির আইনি আওতার মধ্যে থেকেই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিনিয়োগ কমার বিষয়টা এখনই বলা যাবে না। নতুন বিনিয়োগে প্রভাব পড়বে কিনা তা নজরে রাখা হবে। নতুন যারা আসবে, তারা যদি দেখে তাদের পোষাবে, তাহলে তারা আসবে। তারা বিকল্প জ্বালানিও ব‍্যবহার করতে পারে।

দাম ঘোষণার সময় বলা হয়, শুনানিতে অংশগ্রহণকারীরা দাম বৃদ্ধির বিরোধিতা করে ‘সিস্টেম লস’ কমাতে বলেছিল। এটা দ্রুত কমানো খুব কঠিন। এ নিয়ে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে সব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন মূল্যায়ন করা হবে। পেশাদার নিরীক্ষক নিয়োগ করে আয়-ব্যয়ের যথার্থতা যাচাই করা হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি বাড়াতে বলা হয়েছে।

বিইআরসির আদেশ বলছে, শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে (ক্যাপটিভ) ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ছিল ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। এটি বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা। আর শিল্প সংযোগে গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০ টাকা। নতুন এ দাম আজ থেকেই কার্যকর হবে। ১৩ এপ্রিল এর পরে যত গ্যাস সংযোগ অনুমোদন করা হবে, তাদের বাড়তি দাম দিতে হবে। এর আগ পর্যন্ত যেসব সংযোগ আবেদনের চাহিদাপত্র ইস্যু করা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহারে নতুন দাম। আর পুরোনো শিল্প গ্রাহকেরা অনুমোদিত লোডের বাইরে যতটুকু ব্যবহার করবেন, ততটুকুর নতুন দাম দিতে হবে।

এর আগে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের কথা বলে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শিল্পে ১৫০ থেকে ১৭৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয় শিল্পে গ্যাসের দাম। শিল্প ও ক্যাপটিভে প্রতি ইউনিটের দাম করা হয় ৩০ টাকা। পরে গত বছর ক্যাপটিভে দাম বাড়িয়ে করা হয় ৩১ টাকা ৫০ পয়সা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ, পুরোনো শিল্পে বাড়তি ব্যবহারে নতুন দাম