জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন মুস্তাকিন আহমেদ। বয়স ২০ বছর হলেও তিনি অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো নয়। তার উচ্চতা মাত্র ২৮ ইঞ্চি।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতার হার মানাইনি এ স্বপ্নবাজ। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি জবি ‘এ’ ইউনিটভুক্ত বিজ্ঞান বিভাগের সর্বশেষ শিফটের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। 

ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা অর্জনের প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকায় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্নকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।

মুস্তাকিন বলেন, “আমি সবসময় চেয়েছি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়েই এখানে এসেছি।"

ভর্তি পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় অনেক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের নজর কাড়েন তিনি। তার আত্মবিশ্বাস ও শিক্ষার প্রতি আগ্রহ দেখে সবাই মুগ্ধ হয়েছেন। পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনসিসির পক্ষ থেকে তার জন্য বিশেষ সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তিনি নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারেন।

মুস্তাকিন বলেন, “শারীরিক উচ্চতা আমার জন্য কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। আমি বিশ্বাস করি, মনের উচ্চতাই আসল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া আমার স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন পূরণে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সবার ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেলে আমি আরো এগিয়ে যেতে পারব।”

জবি বিএনসিসির ইনচার্জ তৌফিক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে বিএনসিসি কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মুস্তাকিনের যাতে কোন সমস্যা না হয়, সে ব্যাপারে বিশেষ নজর রেখেছিলাম। তার মতো মেধাবী ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থীরা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কলকাতায় ঈদের নামাজের আগে স্বাধীন ফিলিস্তিনির দাবিতে মিছিল

সারা ভারতসহ পশ্চিমবঙ্গে পালিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এ উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের জামাতে সামিল হন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয় কলকাতার রেড রোডে। নামাজে ইমামতি করে কাজি ফজলুর রহমান। লাখো মুসল্লি এতে অংশ নেন। এছাড়াও নাখোদা মসজিদ, টিপু সুলতান মসজিদ, পার্ক সার্কাস, ময়দান, খিদিরপুরসহ রাজ্যের অসংখ্য মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষেই একে অপরকে আলিঙ্গন, কুশল বিনিময় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। 

তবে ঈদের নামাজ শুরুর আগেই স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দাবি করে কলকাতায় সংহতি মিছিলে অংশ নেন মুসল্লিরা। হাতে ব্যানার এবং স্লোগানে স্লোগানে মুখর ছিল মিছিলটি। বিশাল মিছিল নিয়ে কলকাতার রেড রোডে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা। বড়দের পাশাপাশি অনেক বাচ্চারাও সেই মিছিলে শামিল হয়। 

ওই মিছিলে অংশগ্রহণকারী শেখ আমির নামে এক মুসুল্লি জানান, ‘আজকে আমাদের খুশির দিন, আনন্দের দিন। কিন্তু ফিলিস্তিনে আমাদের ভাই-বোনেদের সঙ্গে যে অন্যায় হচ্ছে তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তারাও যেন শান্তিতে থাকতে পারেন। আমরা যেভাবে পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালন করছি, ঠিক সেভাবে তারাও যেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ পালন করতে পারেন। আমি যেমন আমার বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে এসে নামাজ আদায় করছি, ঠিক তারাও যেমন এ রকম করতে পারেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে অত্যাচার এবং জুলুম হচ্ছে। নিরপরাধ বাচ্চাদের হত্যা করা হচ্ছে সেটা কি অপরাধ নয়? ইসরায়েলের উচিত ওই বাচ্চাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা। ইসরায়েলের আক্রমণে যেসব বাচ্চারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমরা আজ রাস্তায় নেমেছি।’ 

পরে রেড রোডের ঈদের নামাজে অংশ নেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ খান, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও মমতার ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা প্রমুখ। 

পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ঈদ পালিত হচ্ছে দিল্লি, লখনৌ, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই, জম্মু-কাশ্মীর, ভোপাল, পাটনাসহ দেশের প্রতিটি শহরে। দিল্লির জামা মসজিদে হাজার হাজার মুসল্লি নামাজে অংশ নেন। 

সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের নাগপুরে দুইটি গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে ঈদ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল নাগপুর, মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্রের বড় শহরগুলোতে। নাশকতা এড়াতে দিল্লিসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ শহরেই ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি।

এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও এই মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেও দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ