কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অপসারণ দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 22nd, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণ করে নতুন নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এ দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠি প্রেরণ করেন তারা।
চিঠিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, আমরা কুয়েটের সব শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কুয়েট শাখা ছাত্রদলের ফর্ম বিতরণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেয়। কুয়েট ছাত্রদলের কর্মীরা হঠাৎ মিছিলে এসে ধাক্কা দেওয়াসহ শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়। ফলে ছাত্রদল ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা ধরে এ হামলা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কোন ধরনের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এজন্য আমরা শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করি। আল্টিমেটাম দেওয়ার পরেও আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় উপাচার্যের অপসারণ দাবি করছি।
উপাচার্যের অপসারণ দাবির কারণ হিসেবে চিঠিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজনীতি মুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের অপচেষ্টায় জড়িত থাকা, ছাত্রদল সন্ত্রাসীদের আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া, দেড়শতাধিক শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার পরও ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করা, যথাপযুক্ত প্রমাণ থাকা সত্বেও শিক্ষার্থীদের ওপর করা চিহ্নিত কুয়েট ছাত্রদল, স্থানীয় বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের হামলাকে স্বীকার না করা এবং হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ছয় দফা দাবি পূরণের পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার পরও তা মেনে না নেওয়া।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিভাবকহীন ও অনিরাপদ কুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় চলমান করার জন্য অতিদ্রুত নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে, যারা আমাদের পাঁচ দফা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে অভিভাবকত্বের দায়ভার নিবেন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য উপ চ র য র ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।