২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের আকাশে দেখা যাবে যেসব চমক
Published: 22nd, February 2025 GMT
ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে আকাশ আগের তুলনায় বেশি পরিষ্কার থাকবে। শহরের বাইরে গ্রামের আকাশে তারার উপস্থিতি বাড়বে। রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পেরিয়ে দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত আকাশে বিচিত্র সব চমক দেখা যাবে। এ সপ্তাহের আকাশে যা যা দেখা যাবে, সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।
২২ ফেব্রুয়ারি
সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৮টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত শুক্র গ্রহ স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। এ ছাড়া মঙ্গল গ্রহ দিবাগত রাত ৩টা ৫৪ মিনিট পর্যন্ত ও বৃহস্পতি গ্রহ দিবাগত রাত ১টা ১১ মিনিট পর্যন্ত দেখা যাবে আকাশে। শনি গ্রহ ও ইউরেনাস আকাশে দেখা গেলেও বেশ কষ্ট হবে দেখতে। অন্যদিকে নেপচুন গ্রহ আকাশে থাকলেও সন্ধ্যা ৭টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত দেখতে অনেক কষ্ট হবে। বৃহস্পতি গ্রহের পাশে টাওরাস নামের তারকা দেখা যাবে। ঠিক রাত ১১টা ৬ মিনিটে টাওরাসের কিছুটা দূরে বিটেলগেউস নামের ওরিয়ন তারকাপুঞ্জের উজ্জ্বল তারকার অবস্থান থাকবে। তার কিছুটা দূরে লুব্ধক বা সিরিয়াস এ তারকা দেখা যাবে।
২৩ ফেব্রুয়ারি
রাত ৮টা ৩০ মিনিট ঠিক মাঝখানে উজ্জ্বলভাবে শুক্র গ্রহ অবস্থান করবে। দিবাগত রাত ১টা ৭ মিনিটে বৃহস্পতি গ্রহ ও দিবাগত রাত ৩টা ৫০ মিনিটে মঙ্গল গ্রহ ঠিক মধ্য আকাশে অবস্থান করবে।
২৪ ফেব্রুয়ারি
আকাশে স্পষ্টভাবে মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ দেখা যাবে।
২৫ ফেব্রুয়ারি
আকাশে রাত আটটার পরে শুক্র, মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলে দেখা যাবে। এদিন রাত ১১টা ৬ মিনিটে বৃহস্পতি গ্রহের ঠিক ওপরে মঙ্গল গ্রহের অবস্থান দেখা যাবে।
২৬ ফেব্রুয়ারি
এদিন পশ্চিমাকাশে স্পষ্টভাবে মঙ্গল গ্রহ দিবাগত রাত ৩টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে ঠিক মধ্য আকাশে মঙ্গল গ্রহের অবস্থান দেখা যাবে।
২৭ ফেব্রুয়ারি
রাত ১১টা ৬ মিনিটে পূর্বের আকাশে আর্কটুরাস, দক্ষিণ–পশ্চিম আকাশে সিরিয়াসে এই তারকার অবস্থান থাকবে।
২৮ ফেব্রুয়ারি
এদিন রাত ৯টায় মঙ্গল গ্রহ উত্তর আকাশে ও ৮টা ৩০ মিনিটে বৃহস্পতি গ্রহ উত্তর–পশ্চিম আকাশে অবস্থান করবে। পশ্চিম আকাশে টাওরাস ও বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান কাছাকাছি থাকবে রাত ১১টার পরে।
সূত্র: বিবিসি স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিন, অ্যাস্ট্রোনমি, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ও স্কাই ম্যাপস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অবস থ ন অবস থ ন ক র ত ১১ট
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টাপাল্টি আন্দোলনে উত্তাল কুয়েট, বাড়ছে সেশনজট
উত্তাল হয়ে উঠেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাস। উপাচার্যকে অপসারণের দাবির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। উপাচার্যকে অপসারণ করা না হলে সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আর বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি না হলে ক্লাসে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। এদিকে গত প্রায় ২ মাস ধরে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাড়ছে সেশনজট।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা চত্বরে জড়ো হন একশ’র মতো শিক্ষার্থী। এরপর সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণের সময় দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগানো হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, মঙ্গলবার তারা তালা ভেঙে ৬টি হলে উঠলেও কর্তৃপক্ষ খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেয়নি। ২ মাস হল বন্ধ থাকায় ধুলাবালি জমেছে। এর ফলে তারা বিপাকে পড়েছেন। তারপরও উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
মিছিল শেষে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবিলম্বে উপাচার্যকে অপসারণ, শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন উপাচার্য নিয়োগ করে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করতে হবে। যদি এটা করা না হয় তাহলে আমাদের ‘নতুন জুলাই’ হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের এই যুদ্ধ হবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নজরুলের বিরুদ্ধে, যেসব ছাত্র উপদেষ্টা আমাদের রক্তের বিনিময়ে আজকে ক্ষমতায় বসেছে তাদের বিরুদ্ধে।
এদিকে ‘কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক উপাচার্যকে হয়রানি ও তাকে অপসারণের অপচেষ্টার’ প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন কুয়েটের অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দুপুর ২টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি দুর্বার বাংলা চত্বরে গিয়ে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধনে কুয়েটের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম এম এ হাশেম বলেন, ছাত্ররা ভুল পথে আছে। তারা তালা ভেঙে হলে ঢুকে আইন লঙ্ঘন করেছে। তালা ভাঙা তাদের উচিত হয়নি। কারণ তালা দেওয়া হয়েছিল সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সালাউদ্দিন ইউসুফ বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের দিন উপাচার্যের গায়ে ছাত্রদের হাত তোলা ঠিক হয়নি।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শাহিদুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের ১ দফা দাবি আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের এক দফা দাবি হচ্ছে যেসব ছাত্র দোষী সাব্যস্ত হবে, তারা শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কেউ ক্লাসে ফিরে যাব না।
সেকশন অফিসার ইমদাদুল বলেন, উপাচার্যকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আমার সামনেই মারধর করা হয়। ছাত্ররা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে, এই রকম গালিগালাজ আমার জীবনে আমি শুনিনি। স্যারকে রক্ষা করতে গেলে আমাকেও মারধর করে।
কুয়েটের কর্মচারী ইমদাদ মোড়ল বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক দাবি মানতে রাজি না। কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যকে মারধর, গালাগাল এবং তার গায়ে থু থু দিয়েছিল। এখন তাকে অপসারণের টার্গেট নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে।
এ দিকে কুয়েটে আগে থেকেই প্রায় দেড় বছরের সেশনজট রয়েছে। এর উপর গত ২ মাস কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি। এ অবস্থা চলমান থাকায় বাড়ছে সেশনজট। আগামী ২ মে হল খোলা ও ৪ মে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
কুয়েটের শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ বলেন, ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ভর্তি হই। ইতোমধ্যে ৫ বছর পার হয়ে গেছে। আমরা ১ বছর ৩/৪ মাস সেশনজটের মধ্যে আছি। কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হবে, পরীক্ষা হবে তা অনিশ্চিত। ফলে সেশনজট আরও বাড়ছে।
২০১৯ ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দেড় বছর সেশনজট ছিল। আরও ২ মাস পিছিয়ে গিয়েছি। গত ৪ মার্চের মধ্যে পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর আমাদের চাকরিতে ঢোকার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পরীক্ষা বাকি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে দেড় শতাধিক আহত হন। এরপর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে কুয়েটের আবাসিক হল ও একাডেমিক কার্যক্রম।