ফের আলোচনায় বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র
Published: 22nd, February 2025 GMT
রাশিয়ার সঙ্গে ফের আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠকটি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ এ তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় তিন বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের প্রস্তুতির লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মস্কো ও ওয়াশিংটন তাদের প্রথম আলোচনা করেছে।
আরআইএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরবর্তী বৈঠকটি তৃতীয় কোন দেশে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণে একমত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে তিনি রাশিয়ান বা আমেরিকান পক্ষ থেকে বৈঠকে কারা যোগ দেবেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি।
আরো পড়ুন:
শান্তি আলোচনার ‘তাস’ রাশিয়ার হাতে রয়েছে: ট্রাম্প
ট্রাম্প অপতথ্যের জগতে রয়েছেন: জেলেনস্কি
রিয়াবকভ বলেন, “তথাকথিত উত্তেজনার বিষয়গুলো সমাধানে আলোচনা করার জন্য উভয় পক্ষের ‘নীতিগত চুক্তি’ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আজ আমরা দুটি সমান্তরাল, কিন্তু অবশ্যই, কিছুটা হলেও, রাজনৈতিকভাবে আন্তঃসংযুক্ত পথের মুখোমুখি: একটি হলো ইউক্রেনীয় বিষয়, অন্যটি দ্বিপাক্ষিক।”
তিনি আরো বলেন, “যখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে উন্নতির জন্য দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে পাই, তখন কৌশলগত স্থিতিশীলতা ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে একটি সংলাপ সম্ভব।”
রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্য নিয়েও আলোচনা করতে পারে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, গত সপ্তাহের প্রাথমিক বৈঠকটি মূলত রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকে মূল ফোকাস ছিল, যা ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে পৌঁছানোর দিকে ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ ছিল।
ক্রেমলিন এই সপ্তাহে বলেছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এই মাসে মুখোমুখি বৈঠক সম্ভব। উভয় প্রেসিডেন্টই বলেছেন, তারা মুখোমুখি আলোচনা করতে চান।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।