আগামী সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়েছে নিহতদের পরিবার। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ নামের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি উঠে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতদের স্বজনরা বলেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাচ্ছে। কিন্তু এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন দেওয়া যাবে না। 
তারা বলেন, এই দুই হাজার হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে একজন হত্যাকারী পুলিশ কিংবা হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও দুই হাজার জন  গ্রেপ্তার হতো। কিন্তু নগণ্য কয়েকজনকে  গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো.

সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, এই সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না, ভাই হত্যার বিচার চাই। দেশে কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন।

নিহত সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বলেন, আমাদের সন্তানরা জীবন দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দল নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি করছে। অথচ আমাদের সন্তান হত্যার বিচারের কথা কেউ বলছে না।

নিহত সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, পুলিশ আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেল আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পেলাম না। কান্না করতে করতে এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। তবুও ছেলে হত্যার বিচার পাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনজন উপদেষ্টা নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়। সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে আছেন মো. মহিউদ্দিন, শহিদুল ইসলাম ভুইয়া এবং মো. মীর মোস্তাফিজুর রহমান। নির্বাহী পরিষদ কমিটিতে চেয়ারম্যান হয়েছেন মো. গোলাম রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক রবিউল আউয়াল ভুইয়া। কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছে আব্দুল্লাহ আল মারুফ ও জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা।  সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম মাহমুদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল হাওলাদার ও সহ সাধারণ সম্পাদক সাবিনা আক্তার রিমা।

এছাড়া কোষাধক্ষ্য হয়েছেন জারতাজ পারভীন ও  সহকোষাধক্ষ্য আবু হোসেন, জনসংযোগ সম্পাদক শিল্পী আক্তার, দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ও সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল মান্নান। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন রাহাত আহম্মেদ খান, ক্রিয়া সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কবির হোসেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার খান পলাশ এবং সহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাবরিনা আফরুজ সেবন্ধী।

নির্বাহী সদস্য হয়েছেন সামছি আরা জামান, মো. সাইদুল ইসলাম, মো. অব্দুল বাসার অনিক, স্বর্ণা আক্তার, রাজু আহমেদ, শাহিনা বেগম, ফারহানা ইসলাম পপি, খালেদ সাইফুল্লাহ, রাজু আহমেদ, মো. সুমন মিয়া, আহমেদ লামিয়া, পাপিয়া আক্তার শমী এবং এম. এ. মতিন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য হয় ছ ন ইসল ম গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘সংযোগ’ বদলে দিয়েছে মাতৃত্বের প্রথম অভিজ্ঞতা

প্রসবোত্তর যত্ন ও পরিবার পরিকল্পনায় প্রথমবার মা-বাবা হতে যাওয়া দম্পতিদের সচেতন করতে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের ‘সংযোগ’ প্রকল্প। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান।

২০১৯ সাল থেকে নোয়াখালী ও মাদারীপুর জেলার আটটি উপজেলায় পরিচালিত এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব বাড়ানো, অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ কমানো এবং প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নসহ নানা কার্যক্রম চালানো হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নতুন মা-বাবাদের জন্য প্রি-ডিসচার্জ কাউন্সেলিং চেকলিস্ট, প্রথমবারের মায়েদের জন্য আমন্ত্রণপত্র, মাঠ পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, এবং ‘জিরো হোম ডেলিভারি’ ক্যাম্পেইনের মতো কার্যকর পদক্ষেপ প্রকল্পটিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে।

প্রধান অতিথি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ বলেন, “সংযোগ প্রকল্পের উদ্ভাবনী পদক্ষেপগুলোকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। কম বয়সে মাতৃত্বের ঝুঁকি কমাতে মাঠকর্মীদের আরও সক্রিয় হতে হবে।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারি ইউনিটের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। সংযোগ আমাদের সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পথ দেখিয়েছে।”

সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত বলেন, “সংযোগ প্রকল্প মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যে বাস্তব পরিবর্তন এনেছে। ছোট ছোট পদক্ষেপের বড় প্রভাব আমরা দেখেছি।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তনের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং অংশীদার সংগঠন রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টারের (রিক) প্রতিনিধি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্পটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং সহায়তায় ছিল সেভ দ্য চিলড্রেন ও রিক।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ