হবিগঞ্জের মাধবপুরে ওরশকে কেন্দ্র বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে বিএনপির স্থানীয় একটি কার্যালয়।

শুক্রবার রাতে উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের  কালিকাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- অ্যাডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল (৪২), মোশাহিদ (৪২), সাজু (৩২), সাদেক (৩২), মামুন (২৩), হুদয় (২০), রাহুল (২৫), ইব্রাহিম (৪০), সোহেল (২৫), আবু কালাম (৩০), জামিল চৌধুরি, মনির (২৩), তানভির (২২) ও সোহান (২৪)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিকাপুর কবরস্থানের ওরশ পালনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বাঘাসুরা ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল ও যুবদল নেতা নজরুল গাজীর লোকজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে কয়েক দফায় ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩  জন আহত হন।

এ সময় স্থানীয় বিএনপির একটি অফিস ভাঙচুর করা হয়। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিএনপির অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতরা একে অপরকে দায়ী করছে।

বাঘাসুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল বলেন, তার লোকজন কোনো অফিস বা ছবি ভাঙচুর করেননি। অসৎ উদ্দেশ্যে নজরুল গাজীর লোকজন এটি করেছে। তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে।

এদিকে যুবদল নেতা নজরুল গাজী দাবি করেন, সজলের লোকজন জড়ো হয়ে অতর্কিতভাবে অফিস ও দলীয় প্রধানের ছবি ভাঙচুর করেছে। 

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এ ঘটনায় কেউ এখনো অভিযোগ দেননি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ব এনপ র র ল কজন স ঘর ষ রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি

তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই। 

শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।  

কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।

বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন। 

নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।

ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।

ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে। 

কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে। 

তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়। 

বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ