গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা, স্কুলছাত্রের মৃত্যু
Published: 22nd, February 2025 GMT
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাসে পিকনিকে যাওয়ার পথে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাশেদুল ইসলাম (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দার মাঘমারা এলাকার সরিষাবাড়ী-জামিরা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাশেদুল ইসলাম সরিষাবাড়ী ব্যারিস্টার আব্দুল সালাম তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ও সাতপোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গাজীপুর সাফারি পার্কে পিকনিকে যাচ্ছিল একটি বাস। বাসটি সোনাকান্দার বাঘমারা মোড়ে পৌঁছালে বাসের জানালা দিয়ে মাথা বের করে রাশেদুল ইসলাম। এ সময় একটি কাঁঠালগাছের সঙ্গে তার মাথা লেগে সে গুরুতর আহত হয়।
আহত রাশেদুলকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বাসের চালককে আটক ও বাসটি জব্দ করে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সকালে স্কুলের ১১৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের নিয়ে গজীপুরের সাফারি পার্কের উদ্দেশে যাত্রা করি। প্রথম বাসটি সোনাকান্দার মোড়ে পৌঁছালে রাশেদুল বাসের জানালা দিয়ে মাথা বের করে। মোড় ঘোরার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সে গুরুতর আঘাত পায়।
সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাসের চালককে আটক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।