ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মো. সিফাত সিফাতুল্লাহর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকার তুহিন ছাত্রাবাস থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান।

মো.

সিফাত সিফাতুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা বরগুনা জেলার বামনা থানার ছনবুনিয়া গ্রামে। উদ্ধারের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

একই ছাত্রাবাসে থাকা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “সিফাত বেশ কিছুদিন ধরে বিষন্নতায় ভুগছিলেন। এ কারণেই হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।”

সিফাতের সহপাঠী হাসিব চৌধুরী বলেন, “সিফাত কিছুদিন ধরে নিয়ে বিষন্নতায় ভুগছিলেন। কিন্তু আমাদের কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কিছু শেয়ার করেনি। তিনি খুবই ভালো একটি ছেলে। নিয়মিত ধর্মচর্চা করেন। সিফাতের আকস্মিক মৃত্যুর খবর কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না।”

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “আমাদের এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটি ছাত্রাবাসে তার নিজ কক্ষে আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে তার রুমমেট আমাকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কল করে। শোনামাত্রই আমি থানা পুলিশকে কল করি এবং সেখানে গিয়ে দেখি গলায় গামছা পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ নামিয়ে দেখে ইতোমধ্যে মারা গেছে।

মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার বন্ধুবান্ধব ও বিভাগের শিক্ষকদের থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, সে খুবই হতাশায় ছিল। তার রুমমেট বাইরে গেলেই সে আত্মহত্যা করে।”

চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান (ওসি) জানান, তারা ঝুলন্ত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনো বলা যাচ্ছে না।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার প্রতিবাদ করে গাজাবাসীর জন্য রাইখানদের প্রার্থনা

গণহত্যার প্রতিবাদ করে জালিম ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে মজলুম গাজাবাসীর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছে পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।

গাজায় গণহত্যা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জন্য কুয়াকাটায় মাহা সাংগ্রাই জলকেলি উৎসবে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুক্রবার রাখাইন জলকেলি উৎসবের শুরুতে গাজায় গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: রাইজিংবিডি 

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে

অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি

শুক্রবার দুপুরে (১৮ এপ্রিল) কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন রাখাইন মাঠে জলকেলি উৎসবের প্রারম্ভে সবাই দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন।

রাখাইনদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গাজাবাসীর জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয় বলেও জানিয়েছেন সম্প্রদায়টির ধর্মগুরুরা।

গণহত্যা অভিযানে গাজা ও ফিলিস্তিন নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাখাইনদের এসব উদ্যোগ মানবতার জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সেখানকার মানুষ।

রাখাইন জলকেলি উৎসব দেখতে আসা কলাপাড়ার আলীপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন মিয়া বলেন, “আজ জলকেলি দেখতে রাখাইন মাঠে এসেছি। এখানে এসে একেবারেই অবাক হয়েছি। তারা অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজাবাসীর জন্য নীরবতা পালন করেছে।”

“নিপীড়িত গাজাবাসীর জন্য তাদের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে,” বলেন হোসেন মিয়া।

মহিপুর থেকে আসা মো. আবদুস সালাম বলেন, “এমনিতেই রাখাইনদের সঙ্গে আমাদের একটি সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আজ তারা গাজাবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছে। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো বেড়ে গেল।”

মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের উপাধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গাজাবাসীর জন্য প্রায়ই বিশেষ প্রার্থনা করি। শুধু গাজাবাসীই নয়, পৃথিবীর সকল দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই আমাদের প্রার্থনা।”

“ আমরা মানুষ হিসেবে সবাইকে সবার প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন উত্তম মহাথের।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “গাজাবাসীর প্রতি রাখাইন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে মানবতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতি তারা দেখিয়েছেন, এ জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

“রাখাইন সম্প্রদায় ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও মানবতার ধর্ম সবার এক। তাই রাখাইন সম্প্রদায় এই নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সম্প্রীতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল।”

শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাখাইন জলকেলি উৎসব, যাতে শামিল হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও।

উৎসব শুরুর দিন ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মেতে উঠতে দেখা যায় রাখাইনদের। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ করতে দেখা যায়। উৎসবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ঢাকা/ইমরান/রাসেল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ