বিকেলে ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হন রাইসুল, রাতে পাওয়া যায় লাশ
Published: 22nd, February 2025 GMT
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় গতকাল শুক্রবার রাতে যে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের একজন রাইসুল ইসলাম (২৮)। বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আবদালপুর ইউনিয়নের পিয়ারপুর গ্রামে। বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলের দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার।
রাইসুলের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, রাইসুল কোনো সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কেন, কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, তা বলতে পারছেন না। তবে সম্প্রতি এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলছিল তাঁর।
গতকাল রাত ১১টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর মাঠের মধ্যে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের হানিফ আলী, তাঁর শ্যালক লিটন হোসেন ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের রাইসুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার বিষয়ে চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর নেতা কালুর নাম দিয়ে দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হয়।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে এই এলাকায় তাঁরা একাধিক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ইবি থানার পিয়ারপুর ও শৈলকুপায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাঠের মধ্যে শ্মশানঘাট এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যার পর ফেলে রাখা হয়েছে। তাঁরা এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান তিনজনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পাশে তাঁদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল পড়ে আছে।
আরও পড়ুনস্থানীয়রা রাতে কয়েকটি গুলির শব্দ পান, তবে ভয়ে বের হননি কেউ৫ ঘণ্টা আগেরাইসুলের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বাবার নাম আরজেদ আলী ও মায়ের নাম রেহেনা পারভিন। ঠিকানা সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রাম। তবে তাঁর বাবার বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মানিকদিয়াড় গ্রামে। মাত্র আড়াই বছর বয়স থেকে পিয়ারপুর গ্রামে নানা ইব্রাহীম সরদারের বাড়িতে মায়ের সঙ্গে চলে আসেন। সেখানে তাঁর বাবাও থাকতেন। দুই মাস আগে তিনি মারা গেছেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে পিয়ারপুর গ্রামে রাইসুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা-নানিসহ স্বজনেরা আহাজারি করছেন। প্রতিবেশীরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। নানা ইব্রাহীম হোসেন নির্বাক হয়ে বসে আছেন। পাশে বসে কেঁদেই যাচ্ছেন নানি কদ ভানু।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাইসুলের মা রেহেনা পারভিন জানান, গতকাল বিকেল পর্যন্ত রাইসুল বাড়িতেই ছিলেন। বিকেল পাঁচটার কিছু সময় পর তাঁর মুঠোফোনে কল আসে। রাইসুল ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তির উদ্দেশে বলেন, ‘বড় ভাই আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।’ এই বলে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে যান তিনি। এরপর রাত নয়টার দিকে কল দিলে নম্বর বন্ধ পান।
গুলিতে নিহত রাইসুল ইসলামের নানি কেঁদেই যাচ্ছিলেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের বাড়িতে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল র র উপজ ল র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভক্তের মুখের ওপর উদ্যাপন করতে চান রোনালদো
নিজের ‘আইডল’ বা আদর্শের সামনে গোল করে তাঁর মতো করে উদ্যাপন নিশ্চিতভাবে দারুণ কিছু। কদিন আগে তেমনই এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন রাসমুস হয়লুন্দ।
নেশনস লিগে পর্তুগাল–ডেনমার্কের শেষ আটের ম্যাচে গোল করার পর রোনালদোর সামনেই তাঁর মতো করে ‘সিউ’ উদ্যাপন করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাচ তারকা রাসমুস হয়লুন্দ।
সেদিনের পর থেকে হয়লুন্দের উদ্যাপন নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। হয়লুন্দ অবশ্য বলেছেন, অপমান বা অসম্মান করার উদ্দেশ্যে না, তিনি শুধু নিজের আদর্শকে অনুকরণ করেছেন।
আরও পড়ুন‘ভক্তে’র কাছে হার রোনালদোর, হার এমবাপ্পেরও, জিতল জার্মানি২১ মার্চ ২০২৫হয়লুন্দ বলেছেন, ‘এটা আমার আদর্শের জন্য। এটা এমন না যে আমি তাকে ব্যঙ্গ করছি বা তেমন কিছু। আমি সব সময় বলেছি, আমার জন্য এবং আমার ফুটবল ক্যারিয়ারে সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
২২ বছর বয়সী হয়লুন্দের এই উদ্যাপন এবং তাঁর কথার জবাব দিয়েছেন রোনালদোও। হয়লুন্দের উদ্যাপনে অসম্মানজনক কিছু খুঁজে না পেলেও সেই উদ্যাপন ফিরিয়ে দিতে প্রত্যয়ী ‘সিআর সেভেন’। রোনালদো বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য সমস্যা না। আমি জানি এখানে অসম্মানজনক কিছু ছিল না। আর পৃথিবীতে সে শুধু একা না যে আমার মতো উদ্যাপন করেছে। এটা বোঝার মতো যথেষ্ট বুদ্ধি আমার আছে। এটা আমার সম্মানেই করা।’
এরপরই অবশ্য আসল কথাটা বলেছেন রোনালদো, ‘আশা করি আগামীকাল (আজ রাতে) আমিও তাঁর সামনে উদ্যাপন করতে পারব। এটা দারুণ হবে। আমি আনন্দিত যে আমার উদ্যাপন তাঁর পছন্দ হয়েছে।’
আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ফিট থাকতে বিশেষ যে খাবার খাচ্ছেন রোনালদো১৮ মার্চ ২০২৫হয়লুন্দ অবশ্য আগেও রোনালদোর প্রতি নিজের মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেছিলেন, ‘আমি বাড়িয়ে বলছি না। তবে ক্রিস্টিয়ানো আমার কাছে সবকিছু। ক্রিস্টিয়ানোর কারণেই আমি ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করি। আমি ঘুমাতে যাওয়ার আগে নানা ধরনের শারীরিক কসরত করি শুধু ক্রিস্টিয়ানোর জন্য। কারণ, আমি রোনালদোর মতো হতে চাই।’
আরও পড়ুনমেসি ও রোনালদো এখন কত টাকার মালিক১৪ মার্চ ২০২৫ডেনমার্কের বিপক্ষে ফিরতি লেগে আজ রোনালদোদের সামনে চ্যালেঞ্জটা ঘুরে দাঁড়ানোর। প্রথম লেগে ১–০ গোলে হারায় এখন বেশ চাপেও আছে তারা। তবে যেকোনো মূল্যে আজ রাতে দলের জয় চান রোনালদো, ‘এটা শুধু আমার গোল করার ব্যাপার না। আমি শুধু চাই পর্তুগাল ম্যাচটা জিতুক। যদি আমি না খেললে দল জেতে, তাই হোক।’