সুনামগঞ্জে শিরনির আয়োজন নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ৩০
Published: 22nd, February 2025 GMT
গ্রামে শিরনির আয়োজন করা নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরভোগ গ্রামের গবাদিপশু যাতে রোগবালাইয়ে আক্রান্ত না হয়, এ জন্য প্রতিবছর সবাই মিলে শিরনির আয়োজন করেন। এবার শিরনির আয়োজন নিয়ে গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিএনপির সমর্থকেরা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আয়োজনে যুক্ত না করায় গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়।
গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি নূর মিয়া বলেন, গ্রামের সবাই মিলেই প্রতিবছর এই শিরনির আয়োজন করেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সুফি মিয়া, আবদাল মিয়াসহ কয়েকজন ঝামেলা করায় এবার তাঁদের যুক্ত করা হয়নি। আজ সকালে শিরনি প্রস্তুত করে বিতরণের সময় মসজিদের মাইকে আবদাল মিয়ার পক্ষের লোকজন এই শিরনি বাতিল বলে ঘোষণা দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে গ্রামের মাঠে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হন।
নূর মিয়া বলেন, আবদাল মিয়া ও সুফি মিয়া আওয়ামী লীগের লোক। তাই গ্রামের লোকজন শিরনিতে তাঁদের রাখেননি। তাঁরা মাইকে ঘোষণা দেওয়ার পরই উত্তেজনা দেখা দেয়, পরে মারামারি হয়। এতে তাঁদের পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের সুনামগঞ্জ ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতা আবদাল মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নিজে আহত জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান। কিন্তু পরে একাধিকবার কল করলেও ধরেননি।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম য় স ঘর ষ ব এনপ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।