জলবায়ু সহনশীল কৃষি ব্যবস্থায় বাকৃবিতে নতুন গবেষণা প্রকল্প
Published: 22nd, February 2025 GMT
বাংলাদেশের কৃষিখাতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এবং মাটির স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। ‘বাংলাদেশে মাটির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য উন্নয়ন ও রূপান্তর: কৃষকদের সঙ্গে ও কৃষকদের জন্য স্থিতিশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ’ শীর্ষক এ গবেষণায় কৃষকদের সরাসরি সংযুক্ত করে তাদের মাটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
গবেষণা প্রকল্পটি যৌথভাবে পরিচালনা করছে গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর), সাস্টেইনেবল এগ্রিকালচার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় গবেষণা প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় এসব তথ্য দেন অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর) প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের প্রধান এবং বাকৃবির কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড.
গবেষণার মূল লক্ষ্যের বিষয়ে অধ্যাপক ড. বিপ্লব সাহা বলেন, “এ গবেষণার মাধ্যমে কৃষকদের সরাসরি সম্পৃক্ত করে মাটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। দেশের কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার কারণে উৎপাদন সংকটে পড়ছেন। বিশেষ করে রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি জমিতে খরার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। খরাপ্রবণ এ তিনটি জেলা নিয়ে বর্তমানে কাজ করা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “খরাপ্রবণ এলাকার পাশাপাশি বন্যাপ্রবণ এলাকা নিয়েও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় উন্নত গবেষণা এবং মাটির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য কৃষকদের কাছে সহজবোধ্যভাবে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। কৃষকরা যাতে মাটির স্বাস্থ্য ও গুণগত অবস্থা জেনে ফসল উৎপাদনে টেকসই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। সেজন্যই তাদের সঙ্গে নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করা হবে।”
গবেষণার পটভূমি এবং গবেষকদের প্রত্যাশা সম্পর্কে এসিআইএআর এর প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. চেংরং চেন বলেন, “কৃষক আমাদের এ গবেষণার কেন্দ্র। এ প্রকল্পের আওতায় মাটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা, কৃষকের ভাষায় তথ্যের রূপান্তর, মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কাজ করা হবে। আমরা এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে চাই, যা কৃষক, গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সমন্বয় ঘটাবে।”
কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নীল মেইনজিস, সয়েল রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা ও কৃষি অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মাসুম আহমাদ।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “পরিবেশের প্রতিটি উপাদান একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। কোন একটি উপাদানের গুণগত মান খারাপ হলে তা কোন না কোন সংকেত দেয় এবং শেষ পর্যন্ত প্রাণী ও মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ গবেষণায় কৃষকরা সরাসরি যুক্ত থেকে মাটির গুণাগুণ সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। কৃষকদের জন্য এবং তাদের সম্পৃক্ত করে এ ধরনের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত। পাশাপাশি, মাটির স্বাস্থ্য নির্ধারণে কম খরচের কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষকদ র প রকল প জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠাল তুরস্ক
যুক্তরাজ্যের সরকারি সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সাংবাদিক মার্ক লোয়েনকে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্ক। তিনি দেশটিতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করছিলেন। লোয়েনকে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে বিবিসি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে।
বিবিসি বলেছে, লোয়েনকে বুধবার ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার করা হয়। চলমান বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে কয়েক দিন তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এক বিবৃতিতে বিবিসি বলেছে, ‘আজ (বুধবার) সকালে বিবিসি নিউজের প্রতিবেদক মার্ক লোয়েনকে ইস্তাম্বুল থেকে ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। যে হোটেলে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে আগের দিন তুলে এনে তাঁকে ১৭ ঘণ্টা আটক রাখা হয়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে মার্ক লোয়েন তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হওয়ায় তাঁকে তুরস্ক ছাড়তে বলা হয়।’
দেশজুড়ে চলা সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ১ হাজার ৮৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তুরস্কের ১১ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।
আরও পড়ুনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই একরেম ইমামোগলু২৬ মার্চ ২০২৫রোববার রাতে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ব্যাপকতা বাড়ে। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারীকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এর আগে ২০ মার্চ বিক্ষোভ দমনে পিপার স্প্রে ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।
ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর ইমামোগলুকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।