আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন ২০১১ সালে। সব ধরনের ক্রিকেট ছাড়েন আরও ২ বছর পর। এর পর থেকে কোচিংয়েই মনোযোগী রাহুল দ্রাবিড়। তাঁর অধীনেই ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত।

সেই দায়িত্ব অবশ্য ছেড়েছেন বিশ্বকাপ জেতার পরই। কোচিং ছেড়েছেন, তবে ক্রিকেট ছাড়েননি। সম্প্রতি ক্রিকেটার দ্রাবিড়কেই আবার মাঠে দেখা গেছে। সেটাও নিজের ছেলের সঙ্গে। তাই তাঁর মাঠে ফেরার গুরুত্বটা একটু বেশিই।

৫২ বছর বয়সী দ্রাবিড় খেলেছেন শ্রী নাসুর মেমোরিয়াল শিল্ড তৃতীয় বিভাগের একটি ম্যাচে। সেখানে বিজয়া ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছেন দ্রাবিড় ও তাঁর ছেলে অন্বয় দ্রাবিড়। এত দিন পর মাঠে ফিরে অবশ্য দ্রাবিড় ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আউট হয়েছেন ৮ বলে ১০ রান করে।

তবে তাঁর ছেলে অন্বয় পেয়েছেন ফিফটি, করেছেন ৬০ বলে ৫৮ রান। বাবা–ছেলের ম্যাচে অবশ্য সেঞ্চুরি করে আলো নিজের দিকে কেড়ে নিয়েছেন স্বপ্নিল ইয়েলভে। ৫০ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। তাঁর ইনিংসে ভর করেই ইয়াং লায়ন্সের বিপক্ষে বিজয়া ক্রিকেট ক্লাব তোলে ৭ উইকেটে ৩৪৫ রান।

আরও পড়ুনসাকিব এবার নতুন দলে, খেলতে পারবেন তো৫৬ মিনিট আগে

দ্রাবিড়ের ছেলে অন্বয় উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান। ২০২৩-২৪ সালের বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন অন্বয়। অনূর্ধ্ব–১৬ এই টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচে অন্বয় করেন ৩৫৭ রান। এর আগে অনূর্ধ্ব–১৪ রাজ্য লিগের একটি টুর্নামেন্টে বিজয়া ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ রান করেন অন্বয়।

রাহুল দ্রাবিড়ের ছেলে সামিত দ্রাবিড় ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংটাও পারেন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ