আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ম্যাচে কাল (রোববার) মুখোমুখি হচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচটি দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় শুরু হবে।

টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে জয় ভীষণ জরুরি পাকিস্তানের জন্য। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬০ রানে হেরে বিপাকে পড়েছে স্বাগতিক দল। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে ভারত।

দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক কারণে কেবলমাত্র আইসিসি ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) টুর্নামেন্টেই মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দুই দল কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি। ফলে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণীয় এ লড়াই নিয়ে উত্তেজনার শেষ নেই। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে কয়েক মিনিটের মধ্যেই। স্টেডিয়ামে থাকবেন ২৫ হাজার দর্শক, আর বিশ্বের লাখো ক্রিকেটপ্রেমী টেলিভিশনে উপভোগ করবেন হাইভোল্টেজ এই ম্যাচ।

এবারের আসরে নিউজিল্যান্ড দুই ম্যাচ খেলে ২ জয় নিয়ে শীর্ষে আছে। ভারতও সমান ২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে, তবে রান রেটে পিছিয়ে। পাকিস্তান এখনো পয়েন্টের খাতা খুলতে পারেনি, তাই সেমিফাইনালে যেতে হলে জয় ছাড়া বিকল্প নেই বাবর আজমদের জন্য। পাকিস্তানের ব্যাটার সালমান আগা বলেন, ‘টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে ভারতের বিপক্ষে জিততেই হবে। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই, জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব।’

পাকিস্তান শিবিরে দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে পুরো আসর থেকে ছিটকে গেছেন বাঁহাতি ব্যাটার ফখর জামান। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১১৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন তিনি। তার পরিবর্তে দলে যোগ দিয়েছেন ইমাম-উল-হক।

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে ভারতীয় দল। পেসার মোহাম্মদ সামি ৫৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন, আর ওপেনার শুভমান গিল অপরাজিত ১০১ রান করেছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে শামি বলেন, ‘পাকিস্তান ম্যাচ আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষা। সেরা পারফরম্যান্স দিতে হবে এবং তাদের চাপে রাখতে হবে।’

ওয়ানডেতে মুখোমুখি লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ১৩৫ ম্যাচে পাকিস্তান জয় পেয়েছে ৭৩টিতে, ভারত জিতেছে ৫৭টিতে। তবে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান ভারতের পক্ষে। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ছয় ওয়ানডের মধ্যে পাঁচটিতেই জয় পেয়েছে রোহিত শর্মার দল।

দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ

পাকিস্তান: মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), বাবর আজম, ইমাম-উল-হক, সৌদ শাকিল, তৈয়ব তাহির, ফাহিম আশরাফ, খুশদিল শাহ, সালমান আগা, উসমান খান, শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ।

ভারত: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সামি, আর্শদীপ সিং, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋষভ পান্ত।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইংলিস-ঝড়ে ৪ ঘণ্টাও টিকল না ইংলিশদের রেকর্ড

এই ম্যাচ এভাবেও হেরে যাওয়া যায়—ইংলিশরা নিশ্চিত এমনটাই ভাবছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল ইংল্যান্ড। চার ঘণ্টাও টিকল না সেই রেকর্ড। জশ ইংলিসের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ইংলিশদের রেকর্ড ভেঙে জয় দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু করল অস্ট্রেলিয়া।
লাহারে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৫১ রান করে ইংল্যান্ড, দলটির ব্যাটসম্যান বেন ডাকেটও গড়েন সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড। রানটা ১৫ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ২১ বছর আগে নিউজিল্যান্ডের নাথান অ্যাস্টল করেছিলেন ১৪৭ রান, ওই ম্যাচে দলীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডও গড়েছিল নিউজিল্যান্ড ৩৪৭ রান। কাল তাদের ওই দুই রেকর্ডই ভাঙে ইংল্যান্ড। এক ম্যাচে ভেঙে যাওয়া দুই রেকর্ডের পরেরটির জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে জো রুটকেও। অস্ট্রেলিয়ার ‘নতুন’ বোলিং আক্রমণের ওপর ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের ছড়ি ঘোরানোর ভিতটা ডাকেটের সঙ্গে মিলে গড়ে দেন রুটই। দলীয় ৪৩ রানের মধ্যেই ফিল সল্ট ও জেমি স্মিথকে হারিয়ে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। এরপর পথ হারিয়ে ফেলার শঙ্কাও জেগেছিল। কিন্তু ডাকেটের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ১৫৫ বলে ১৫৮ রানের জুটি গড়ে দলকে কক্ষে ফেরাতে সাহায্য করেন রুট। তিনি অবশ্য খুব বেশি দূর যেতে পারেননি, ৭৮ বলে ৬৮ রান করে ফেরেন রুট।
রুট দ্রুত থামলেও ডাকেট আউট হন ৪৮তম ওভারে গিয়ে। আউট হওয়ার আগে ১৪৩ বলে ১৭ চার ও ৩ ছক্কায় ১৬৫ রান করেছেন ইংল্যান্ডের ওপেনার। ডাকেটের আউটের পর ইংল্যান্ডের ইনিংসে আলোচনা ছিল সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটা তারা ভাঙতে পারে কি না। হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার, লিয়াম লিভিংস্টোনরা খুব বেশি রান করতে না পারলেও শেষ দিকে জফরা আর্চারের ঝড়ে রেকর্ডটি নিজেদেরই করে নিয়েছে ইংল্যান্ড। আর্চার ১০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ২১ রান। ১০ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন বেন ডোয়ারশিস।
বড় রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় পাথেয় হতে পারতেন যাঁরা—সেই ট্রাভিস হেড ও স্টিভেন স্মিথ ফেরেন দলীয় ২৭ রানেই। এরপর দলের পক্ষে হাল ধরা জুটিতে ৯১ বলে ৯৫ রান করেন ম্যাথু শর্ট ও মারনাস লাবুশেন। তাঁদেরও অবশ্য ফেরাতে পেরেছিল ইংল্যান্ড। শর্ট ৬৩ ও লাবুশেন ৪৭ রানে ফেরার পর ইংল্যান্ডের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ান আরেক ইংলিস। তবে জশ ইংলিস ৮৬ বলে ১২০ রান করে ইংল্যান্ডের হার নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন, ম্যাক্সওয়েল ১৫ বলে ৩২ রানে থাকেন অপরাজিত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৫১/৮ (ডাকেট ১৬৫, রুট ৬৮; ডোয়ারশিস ৩/৬৬, লাবুশেন ২/৪১, জাম্পা ২/৬৪)।
অস্ট্রেলিয়া: ৪৭.৩ ওভারে ৩৫৬/৫ (ইংলিস ১২০*, ক্যারি ৬৯, শর্ট ৬৩, লাবুশেন ৪৭; রশিদ ১/৪৩৭, লিভিংস্টোন ১/৪৭)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জশ ইংলিস।

সম্পর্কিত নিবন্ধ