কুয়েটে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
Published: 22nd, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের ছাত্রকল্যাণ কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন আবাসিক হলের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণের পর আবার ছাত্রকল্যাণ কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্ররাজনীতির কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ছাত্ররাজনীতির দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, বিএনপির দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস একসাথে, চলে না চলে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, হামলার ঘটনার চার দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। সরকারের একজন প্রতিনিধি আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে আসেননি। ছয় দফার প্রতিটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘোষণা দেন।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের উপাচার্য রাজনীতিমুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতির অনুপ্রবেশের অপচেষ্টায় জড়িত। ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের আক্রমণ থেকে তিনি আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পরও ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন তিনি। যথোপযুক্ত প্রমাণ থাকার পরও কুয়েট ছাত্রদল, স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে তিনি স্বীকার করেননি।’
সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে আরেকজন বলেন, হামলার ঘটনায় যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। ছবি প্রদর্শনীর মাধ্যমে হামলার দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো না। তাঁরা স্বাভাবিক শিক্ষাক্রমে ফিরে যেতে চান। প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানান তিনি।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তার আগে বিকেলে ‘রক্তাক্ত কুয়েট ১৮.
গত মঙ্গলবার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতে সংবাদ সম্মেলন করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, সহ–উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার বেলা একটার মধ্যে দাবি পূরণের সময় বেঁধে দেন তাঁরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পেলে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ওই ঘটনার তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ওই ঘটনায় বুধবার রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে কুয়েট প্রশাসন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রকল য ণ র জন ত র উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
শিরোনামহীনের ‘প্রিয়তমা’ প্রশংসা কুড়াচ্ছে
শিরোনামহীনের ‘বন্ধ জানালা’, ‘হাসিমুখ’ কিংবা ‘ইচ্ছে ঘুড়ি’ গান শুনতে শুনতে একজন শ্রোতা বিষাদের সাগরে ভেসে যেতে পারেন! গানগুলো কখনো শ্রোতার ধমনিতে রক্ত সঞ্চালনা বাড়িয়ে দেয়, কখনো গহীন নিশীথিনীর মতো গম্ভীর করে তোলে। এমন আরো বেশ কটি গান রয়েছে দেশের জনপ্রিয় এই দলটির।
নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে যাত্রা শুরু করে শ্রোতাদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলে শিরোনামহীন। এখনো স্টেজে পারফর্ম করছে। তবে প্রায় তিন দশকের জার্নিতে নানারকম ঘাতপ্রতিঘাতের মুখোমুখি হয়েছে দলটি। মাঝে তেমন সাড়া জাগানো গানও উপহার দিতে পারেনি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছে দলটির নতুন গান ‘প্রিয়তমা’।
“প্রিয়তমা, চোখে চোখ রেখে/কথা হোক নিরবে/ কিছু কথা এভাবেই নির্বাক/ একান্তে নিবিড়ে/ ঝাঁঝালো বাতাসে বেদনায় নীল ঠোঁট/ অজস্র বেলীফুল হাতে অভিমান/ ম্রিয়মাণ বিকেলে/ পৃথিবীর মিথ্যে স্বপ্নের আড়ালে/ অযথাই কি নিভে যায় আলো/ শেষ বিকেলে?”— এমন কথার গানটি রচনা করেছেন জিয়াউর রহমান। সুর করেছেন কাজী আহমেদ শাফিন।
আরো পড়ুন:
অ্যাকাপেলায় একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’
হৃদয় খানের সংসার ভাঙার গুঞ্জন
দলটির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গানটি মুক্তির পর ভূয়সী প্রশংসা করছেন নেটিজেনরা। আপ্লুত হয়েছেন অনেকে। নাঈম নামে একজন লেখেন, “শুরুটাই মনে ছুয়ে দিল। বাকিটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।” সাদ্দাম সিকদার লেখেন, “গান আর অ্যালকোহলে একটা দারুণ মিল রয়েছে, দুটোই যত পুরোনো হয় ততই নেশা বারে।” মিউজিক ভিডিও ও গানের সুখ্যাতি করে নাসিফ হাসান লেখেন, “সত্যি কথা বলতে, যেরকম লোকেশন ও গান কম্পোজিশনে একেবারে অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।”
গালিব লেখেন, “অনবদ্য সৃষ্টি হবে এটা। প্রসঙ্গত, সব গানই কবিতা, সব কবিতাই গান না, শিরোনামহীন মানেই সব কবিতায় গান, সব গানই কবিতা। ধন্যবাদ শিরোনামহীন!” রাতুল লেখেন, “প্রথম শুনলাম! এই অবেলায়-এর পর এটা বেস্ট মনে হচ্ছে! অসাধারণ! চোখের জল বের করে আনার মতো একটা গান! লাভ ইউ শিরোনামহীন-ব্রাদারস।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে গানটির কমেন্ট বক্সে।
‘প্রিয়তমা’ গানটি মুক্তির পর কেটে গেছে পাঁচ দিন। এরই মধ্যে প্রায় ৫ লাখ ৭৪ হাজারের বেশি দেখা হয়েছে গানটির ভিডিও। এক বিবৃতিতে শিরোনামহীন জানিয়েছে, “প্রিয়তমা’ ৫ দিনে ৫ লাখ। সারা বিশ্বের ইউটিউব মিউজিক ট্রেন্ডিংয়ে চলে এসেছে টপ থার্টিনের ভিতর। শেয়ার করে বাংলা গান ছড়িয়ে দিন সারা বিশ্বের দুয়ারে। সবাইকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।”
ঢাকা/শান্ত