পাকিস্তানিদের বাংলাদেশ ভ্রমণে ‘ভিসা ক্লিয়ারেন্স’ লাগবে না
Published: 22nd, February 2025 GMT
পাকিস্তানের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন আর ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগে বাংলাদেশের ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স নিতে হতো পাকিস্তানিদের। এই ক্লিয়ারেন্স ছাড়া তাদের ভিসা দেওয়া সম্ভব ছিল না।
সম্প্রতি এই নিয়ম প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং এখন পাকিস্তানিরা ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই ভিসা পাচ্ছেন।
২০২৪ সালে পাকিস্তানিদের জন্য ২ হাজার ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই ভিসা ইস্যু করা হতো। এখন এই নিয়ম বাতিল হয়েছে।
এদিকে, পাকিস্তানও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে। সম্প্রতি পাকিস্তান ১২৬টি দেশের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশও আছে।
পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য যেকোনো দেশের নাগরিকরা যাতে সহজেই বাংলাদেশে আসতে পারেন, সে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগে একজন পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিককে বাংলাদেশি ভিসা পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। এমনও হয়েছে ভিসাপ্রার্থীর আবেদন অনুমোদন পেতে বছরও পার হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
তিনি বলেন, “আগে এক জন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিক সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভিসার আবেদন করার পর তা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতো। সেখান থেকে সেটা আসত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এই মন্ত্রণালয় সেটা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠাত একটি গোয়েন্দা সংস্থায়। সেই গোয়েন্দা সংস্থা ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পর ওই ব্যক্তি বাংলাদেশে প্রবেশ করার ভিসা বা অনুমতি পেতেন।”
বর্তমান সরকারের এ উদ্যোগের ফলে এখন আর সময়ক্ষেপণ হবে না। পাকিস্তানি বা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য কোনো দেশের নাগরিক বাংলাদেশে আসার ভিসা পাবেন কি না, সেটা শুধু সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের বিবেচনার বিষয় হিসেবে থাকবে। ভিসা দেওয়া এবং প্রত্যাখ্যান করার এখতিয়ার এখন থেকে তাদের হাতেই থাকবে।
পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা ইস্যু সহজ করা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, তাদের ভিসাপ্রাপ্তি সহজ করতে এর আগে সুরক্ষা সেবা বিভাগের জারি করা (১১/০২/২০১৯ তারিখ) আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য দেশের নাগরিকদের ভিসার আবেদন বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিশন সরাসরি নিষ্পত্তি করতে পারবে।
এর আগে ২০১৯ সালে পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত যেকোনো দেশের নাগরিককে ভিসা দেওয়া প্রসঙ্গে জারি করা আদেশে বলা হয়েছিল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পৃথিবীর যেকোনো দেশের নাগরিককে সুরক্ষা সেবা বিভাগের ‘অনাপত্তি’ নিয়ে ভিসা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হলো।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রী সংখ্যায় ২০১৯ সালকে ছাড়াল বিমান পরিবহন খাত, করোনার পর এই প্রথম
অবশেষে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে বিশ্বের বিমান পরিবহন খাত। ২০২৪ সালে বিমানে চলাচল করা যাত্রীর সংখ্যা ২০১৯ সালের স্তর অতিক্রম করেছে।
এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল (এসিআই) ওয়ার্ল্ডের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যানুসারে, গত বছর প্রায় ৯৫০ কোটি যাত্রী উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেছে। ২০১৯ সালের কোভিড-১৯ মহামারি সময়ের তুলনায় যা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের তুলনায় যা ৯ শতাংশ বেশি। খবর সিএনএন।
প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত ১০ বিমানবন্দরের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। সেই তালিকায় এবারও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার রাজধানী আটলান্টায় অবস্থিত ডেলটা এয়ারলাইনস হাবটি ২৭ বছরের মধ্যে ২৬ বার শীর্ষস্থান দখল করেছে। গত বছরের মতো এবারও দ্বিতীয় স্থানে আছে আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তৃতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ।
চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে জাপানের রাজধানী টোকিওর হানেদা ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে ষষ্ঠ স্থানে।
সপ্তম ও অষ্টম স্থানে আছে যথাক্রমে তুরস্কের ইস্তানবুল ও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ও’হেয়ার বিমানবন্দর। নবম স্থানে আছে ভারতের নয়াদিল্লি বিমানবন্দর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ বহরের সম্প্রসারণ, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও বৈশ্বিক সংযোগ বৃদ্ধির কারণে ইস্তানবুল ও নয়াদিল্লি বিমানবন্দরের দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে।
বিমানবন্দরগুলোর প্রবৃদ্ধির বিষয়ে এসিআই ওয়ার্ল্ডের মহাপরিচালক জাস্টিন এরবাচি বলেন, ‘ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে; ভারত, চীন, লাতিন আমেরিকা ও কিছুটা আফ্রিকায়। উন্নত দেশগুলোয় (উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ) প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা কমবে। শিল্পটি এখনো অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলোর উৎপাদন বিলম্বের মতো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশ্বব্যাপী উড়োজাহাজ চলাচল ২০৪৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে প্রত্যাশা এসিআই ওয়ার্ল্ডের।
নজরে পড়ার মতো অগ্রগতি হয়েছে ১০ম স্থানে থাকা চীনের সাংহাই পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। ২০২৩ সালে ২১তম স্থান থেকে ৪১ শতাংশ যাত্রী বৃদ্ধির মাধ্যমে একলাফে ১০ম স্থানে উঠে এসেছে এই বিমানবন্দর।
২০২৪ সালে বিমানের যাত্রী বাড়লেও এসিআই বলছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বিমান কোম্পানিগুলোর উৎপাদনে বিলম্বসহ আরও কিছু কারণে এই খাত গত বছর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। চলতি বছর যেভাবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে, তাতে এবার কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা দেখার অপেক্ষায় আছে এই খাত।
করোনা মহামারির সময় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সবচেয়ে আক্রান্ত হয় বিমান চলাচল খাত। ২০২০ সালে এই খাতের ক্ষতি হয় ১৭৫ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এই খাত। টিকাদান ও পরবর্তী পর্যায়ে কোভিড-১৯ আর বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় বিমান চলাচল বেড়েছে।