জুলাই হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলছেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাচ্ছে। যাঁদের রক্তের ওপর দিয়ে দেশ নতুন করে স্বাধীন হলো, তাঁদের হত্যার বিচারের কথা কেউ বলছেন না।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ নামের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা এ কথাগুলো বলেন। তিনজন উপদেষ্টা নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো.

সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, ‘এই সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না, ভাই হত্যার বিচার চাই। দেশে কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন।’

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাঁদের সরকার। কিন্তু তাঁরা শহীদ পরিবারের কষ্ট বুঝতে পারছে না। হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ ও হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের অনেককেই এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ‘পুলিশ আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেল আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পেলাম না।’

আক্ষেপ করে শাহিনা বেগম বলেন, ‘কান্না করতে করতে এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। তবুও ছেলে হত্যার বিচার পাচ্ছি না।’

ভাই হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নাবিল হোসেন। তিনি বলেন, ১৮ জুলাই তাঁর ভাই সোহেল রানা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলন করেছিলেন। পুলিশ তাঁকে গুলি করে হত্যার পর বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে। আজও ভাইয়ের কবর শনাক্ত করতে পারেননি।

নাবিল হোসেন বলেন, ‘আর কোনো আশ্বাস নয়, রায়েরবাজারে যে ১১৪ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে কবর দেওয়া হয়েছে, তাঁদের শনাক্ত করতে হবে। যাঁরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র সদস

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়াকাটায় জলকেলিতে মাতলেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা

পবিত্র জলে গাঁ ভিজিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে রাখাইনদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন রাখাইন মার্কেটে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম।  

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন রাখাইন জনগোষ্ঠী। 

আরো পড়ুন:

বৈশাখে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস 

রঙে-আলোয় উজ্জ্বল বর্ষবরণ

বর্ষবরণের জলকেলি উৎসব উপলক্ষে নাচে-গানে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা। পরে তারা মাঠের মধ্যে রাখা একটি নৌকার পানি একে অপরের শরীরে ছিটিয়ে জলকেলিতে মেতে ওঠেন।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা অং চো বলেন, “কক্সবাজার থেকে এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য এসেছি। নাচ, গান আর জলকেলি উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি। দিনটি আমাদের দারুন কেটেছে। প্রতিবছর এ অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।” 

কেরানিপাড়ার রাখাইন তরুণী ম্যাসুয়েন বলেন, “বর্ষবরণ উপলক্ষে দিনভর নানা আয়োজন ছিল। এখানে সব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। বিশেষ করে জলকেলির সঙ্গে নাচ আর গান দারুনভাবে উপভোগ করেছি। এমন আয়োজন করার জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”

কলাপাড়ার ইউএনও রবিউল ইসলাম বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে ও রাখাইনদের সহযোগিতায় তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছে। রাখাইনদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও থানা পুলিশের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।”

পটুয়াখালী রাখাইন বুড্ডিস ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমং তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সরকারি মোজাহার উদ্দিন অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ফাতেমা হেরেন, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, মহিপুর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম ও কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান। 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ