চট্টগ্রামে তালিকা থেকে বাদ সাড়ে ৬০ হাজার মৃত ভোটার
Published: 22nd, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
ভোটার হালনাগাদে তালিকা থেকে চট্টগ্রামের ৬০ হাজার ৪৮৫ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জানা যায় এসব ভোটার মৃত। এরমধ্যে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ২ হাজার ২৪ জন এবং ১৫ উপজেলা থেকে ৫৮ হাজার ৪৬১ জন মৃত ভোটার বাদ পড়েছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় ৪৯৯ জন, চান্দগাঁওয়ে ৬০৬ জন, কোতোয়ালী এলাকায় ১৯৮ জন, ডবলমুরিং এলাকায় ১৩১ জন, পাহাড়তলী এলাকায় ১০১ জন ও বন্দর এলাকায় ৪৮৯ জন মৃত ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
১৫ উপজেলার মধ্যে বোয়ালখালীতে ৮ হাজার ২২৭ জন, বাঁশখালীতে ৬ হাজার ৮০৬ জন, আনোয়ারায় ৫ হাজার ১০৩ জন, সীতাকুণ্ডে ৪ হাজার ৪৮৮ জন, ফটিকছড়িতে ৩ হাজার ৮৫৭ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৩ হাজার ৬৪২ জন, পটিয়ায় ৩ হাজার ৬৩৪ জন, হাটহাজারীতে ৩ হাজার ৬২১ জন, লোহাগাড়ায় ৩ হাজার ৫৬২ জন, মিরসরাইয়ে ৩ হাজার ৫৫৭ জন, সাতকানিয়ায় ৩ হাজার ১৭ জন, সন্দ্বীপে ২ হাজার ৯৪৯ জন, রাউজানে ২ হাজার ৪০৩ জন, চন্দনাইশে ২ হাজার ১৭৩ জন এবং কর্ণফুলীতে ১ হাজার ৪২২ জন মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়।
নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ শেষে এলাকাভিত্তিক নিবন্ধন কেন্দ্রে ছবিসহ নিবন্ধন করা হচ্ছে। ইসির এ নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। এই সময়ে মধ্যে যারা বাদ পড়েছেন তারা অনলাইনে তথ্য পূরণ করে নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন। এর আগে, গত ৫ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশন।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
লিবিয়ায় দালাল চক্রের নির্যাতনে মৃত্যু, ইতালি যাওয়া হলো না রাসেলের
পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ভিটেমাটি বিক্রি করে প্রবাসে পাড়ি জমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার তরুণ মো. রাসেল মিয়া (২৫)। অবৈধপথে দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে তাঁর ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই দালাল চক্রের নির্যাতনে লিবিয়ায় গতকাল শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে এক প্রবাসীর মাধ্যমে রাসেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবার। নিহত রাসেল নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের ধরমণ্ডল গ্রামের লাউস মিয়া ও আউলিয়া বেগমের বড় ছেলে।
রাসেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে রাসেল ছিল সবার বড়। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। পরিবারের শেষ সম্বল পৈতৃক ভিটা বিক্রি করে ও স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মোট ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একই গ্রামের দালাল লিলু মিয়ার মাধ্যমে তিনি লিবিয়ায় যান। কথা ছিল লিবিয়া থেকে তাঁকে ইতালিতে পাঠানো হবে। কিন্তু লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর তাঁকে স্থানীয় দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় নির্যাতন। দালাল চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে ভিডিও বাংলাদেশে পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন দফায় আরও ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সর্বশেষ কয়েক দিন আগে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি; কিন্তু টাকা দিতে না পারায় দালাল চক্রের সদস্যরা তাঁকে নির্যাতন করা শুরু করেন। এতে গতকাল শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়। আজ দুপুরে এক প্রবাসীর মাধ্যমে স্বজনেরা তাঁর মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন।
রাসেলের বাবা আউয়াল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জীবনের শেষ সম্বল বসতভিটা ও ফসলি জমি বিক্রি কইরা কয়েক ধাপে ৫০ লাখ টাকা দিছি। আরও টাকা চাইত। দিতে না পারায় আমার ছেলেরে হত্যা করছে দালাল লিলু মিয়া ও মাফিয়া চক্র।’ তিনি বলেন, ‘লিবিয়ায় যাওয়ার পর ছেলের কপালে জোটে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। মাফিয়া চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে একাধিকবার ভিডিও পাঠিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আরও ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে ছেলেকে হত্যা করেছে।’
রাসেলের মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানির পর গণমাধ্যমকর্মীরা ধরমণ্ডল গ্রামের দালাল লিলু মিয়ার বাড়িতে গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে পরিবার নিয়ে তিনি পলাতক। একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় লিলু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ধরমণ্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, রাসেলকে বাঁচাতে তাঁর পরিবার প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে। কিন্তু টাকা দিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে পারেনি। যারা মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। যাতে রাসেলের মতো আর কোনো তরুণের অকালে মরতে না হয়।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমে ওই তরুণের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরেছেন। ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।