নাজমুল হোসেন শান্ত ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ভারতের বিপক্ষে জিততে হলে টপঅর্ডার ব্যাটারদের বড় ইনিংস খেলতে হবে। অথচ তাঁকে নিয়ে তিন টপঅর্ডারের কেউই ভালো করতে পারেননি। উল্টো ৩৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলী। ১৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে শোভন স্কোরে নিয়ে গেছেন তারা। ক্যারিয়ারে মেডেন সেঞ্চুরিও করেছেন হৃদয়। এই লড়াকু ব্যাটিং করে দু’জন প্রশংসিত হয়েছেন দল হেরে গেলেও। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের কাছ থেকে বাহাবা পেয়েছেন হৃদয়-জাকের। গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচেও এ দুই ব্যাটারের ওপর আস্থা রাখতে চান তিনি। রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪ ফেব্রুয়ারির ম্যাচেও হয়তো একাদশে থাকছেন না মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটাররা নিয়মিত রান করছেন না অনেক দিন ধরে। সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম বা নাজমুল হোসেন শান্তরা দ্রুত আউট হলে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু হয় মিডল অর্ডারে। ভারতের বিপক্ষে মিডল অর্ডারের শুরুটাও ভালো ছিল না মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিমের আউটে। ৮.

৩ ওভারে পাঁচ উইকেট হারালে দুশ্চিন্তা বাড়ে। হৃদয়-জাকের জুটি গড়ার পরও তাই বড় স্কোর হয়নি। বাশারের মতে, ‘টপঅর্ডার ব্যর্থ হলে কিছু করার থাকে না। তাওহিদ হৃদয় ও জাকের অবিশ্বাস্য একটি জুটি গড়েছে। আসলে ১০ ওভারে ৩৫ রানে পাঁচ উইকেট পড়ে গেলে যতই ভালো খেলেন, বেশি দূর যেতে পারবেন না। টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় ম্যাচটা হাতছাড়া হয়েছে। আমার মনে হয় না, আমরা বোলিং খারাপ করেছি। কন্ডিশন বিবেচনা করে হয়তোবা আরেকটা স্পিনার বেশি নিতে পারত। ফাস্ট বোলাররা ভালো করায় স্পিনার কম নেওয়া।’

বোলিং লাইনআপে নাহিদ রানাকে না দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে। ভারতের কাছেও আতঙ্কের নাম তিনি। অথচ পেস বিভাগে জায়গা হয়নি রানার। ব্রেক থ্রু পাওয়ার জন্য হলেও রানাকে খেলানো যেত বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচক বাশার, ‘তৃতীয় সিমার খেলালে আমি নাহিদ রানাকে খেলাতাম বা একজন স্পিনার বেশি নিতাম। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মাঝের উইকেট না নিতে পারলে রান ডিফেন্ড করা কঠিন। অথবা অন্যরা তিনশ রান করে ফেলবে। এখনকার ব্যাটাররা শেষ ১০ ওভারে ১০০ রান করে। তাই কম রানে প্রতিপক্ষকে আটকাতে হলে মাঝের উইকেট নিতে হবে। আমাদের উইকেট টেকিং বোলার ছিল নাহিদ। এই বিবেচনায় অবশ্যই নাহিদ রানাকে নেওয়া উচিত ছিল।’ হালকাপাতলা চোট থাকায় ভারতের বিপক্ষে খেলা হয়নি ৩৯ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহর। 

পরের ম্যাচে খেলার সম্ভাবনাও কম দেখেন সাবেক নির্বাচক বাশার, ‘মাহমুদউল্লাহর ইনজুরিটা অত বড় নয়। ও ফিট হলে কোথায় খেলবে চিন্তার বিষয়। হৃদয় এবং জাকের খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। হৃদয় ফিট থাকলে, পাঁচটা বোলার লাগবেই। আমার মনে হয় টিম ম্যানেজমেন্টকে এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

টপঅর্ডারে রান চান শান্ত

পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে গতকাল উদ্বোধন হলেও বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু আজ ভারতের বিপক্ষ ম্যাচে। নিরপেক্ষ ভেন্যু আরব আমিরাতের দুবাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। যে ম্যাচ ঘিরে বাড়তি উত্তাপ ছড়াচ্ছে মরুতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, গ্রুপ প্রতিপক্ষ এবং নিজেদের দল নিয়ে গতকাল অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে। তিনি বলেন, কন্ডিশনে মানিয়ে নিয়ে ভালো ক্রিকেট খেলে ম্যাচ জিততে চেষ্টা করবেন। 

ভারত, পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশ ফেভারিট না। এটা বাড়তি সুবিধা? 
শান্ত:
এই টুর্নামেন্টের আটটি দলই মানসম্পন্ন। ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো স্মৃতিও আছে আমাদের। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কয়েকটি ম্যাচও জিতেছি। আমরা কাল পরিকল্পনামতো খেলতে পারলে এবং স্কিল কার্যকর করতে পারলে, ভালো ম্যাচ হবে।

বাংলাদেশ দলে বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার আছেন। বেশি অলরাউন্ডার থাকা কি দলের জন্য ভালো?
শান্ত:
অলরাউন্ডার সব সময় দলে ভারসাম্য আনে। আমাদের কয়েকজন ভালো অলরাউন্ডার আছে। আশা করি, তারা কাল পারফর্ম করবে এবং দলের জন্য খেলবে। 

নাহিদ রানার মতো ফাস্ট বোলার আছেন। পেস বোলিংয়ে কার্যকর হওয়ার ব্যাপারে কতটা আত্মবিশ্বাসী?
শান্ত:
আমরা গত কয়েক বছর কয়েকজন মানসম্পন্ন ফাস্ট বোলার পেয়েছি। নাহিদ রানা, তাসকিন আহমেদ যেভাবে বোলিং করছে, তা দলকে অনেক হেল্প করে। অধিনায়ক হিসেবে আমার চাওয়া, তারা গতি কাজে লাগিয়ে দলের জন্য কার্যকর বোলিং করবে। আমি খুশি, আমাদের দারুণ একটি ফাস্ট বোলিং ইউনিট আছে। এখানে কৃত্রিম আলোতে বল সুইং করবে। তারা ভালো জায়গায় বল করতে পারলে দল লাভবান হবে। 

বিপিএলের কারণে ওয়ানডে খেলা হয়নি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ব্যাটারদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে কিনা? 
শান্ত:
আমার মনে হয় না কোনো সমস্যা হবে। এই সংস্করণে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি। বিপিএলের কয়েকজন ব্যাটার খুব ভালো করেছে। তারা অনেক রান করেছে, যেটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে। 

পাকিস্তানের মতো দুবাইয়েও কি হাই স্কোরিং ম্যাচ হতে পারে?
শান্ত:
পাকিস্তানের মতো এই ভেন্যুতে রান হবে। সম্প্রতি আমরা পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। আমরা জানি, উইকেট কেমন হবে। তবে আমরা জানি, ক্রিকেটার হিসেবে কখন, কোথায়, কীভাবে মানিয়ে নিয়ে গেম খেলতে হবে। আমার মনে হয় না, এটা কঠিন হবে। আমি নিশ্চিত, ছেলেরা জানে এ দুই ভেন্যুতে কীভাবে ক্রিকেট খেলবে। 

বাংলাদেশের পেস ইউনিট গড়ে ওঠার পেছনে কোচদের কী ধরনের ভূমিকা রয়েছে?
শান্ত:
আমার মনে হয় উইকেট এবং বল পরিবর্তন করায় এটা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এখন ডিউক বলে খেলা হয়। লোকাল এবং বিদেশি অনেক কোচ আছেন, যারা বোলারদের উত্থানে সাহায্য করেছেন। তারা ফাস্ট বোলারদের উজ্জীবিত করেছেন কীভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। 

ভারতের বিপক্ষে নাহিদ রানার খেলার তেমন অভিজ্ঞতা নেই। তাঁর জন্য মানিয়ে নেওয়া কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে?
শান্ত:
ভারতের বিপক্ষে সম্প্রতি একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে রানা। কিছুটা অভিজ্ঞতা আছে। কাল তাকে ভালো খেলতে হবে। আমি যতটা বুঝি, সে প্রতিপক্ষ নিয়ে খুব বেশি ভাবে না। নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা নিয়ে ভাবে। কাল যদি খেলে আশা করব, দলের ভালোর জন্য সে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। 

নিজেদের মধ্যে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ৩৩০ প্লাস রান করেছিলেন। এই টুর্নামেন্টে ওই ধরনের রান হতে পারে। এ ধরনের স্কোর করতে কতটা প্রস্তুত আছেন?
শান্ত:
উইকেট যে রকম থাকবে, ওই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব আমরা। আমার মনে হয়, ওপরের দিকে যারা ব্যাটিং করে, তাদের লম্বা ইনিংস খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। যখন ওপরের শুরুটা ভালো করতে পারব, তখনই বড় রান করা সম্ভব। অবশ্যই কালকে উইকেট কন্ডিশন মেলানোর পর ওইভাবে আমরা ব্যাটিংটা করার চেষ্টা করব। আর অতীতে আমরা অনেক বড় বড় রান করেছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ওই সামর্থ্যটুকু আছে। প্রস্তুতির দিক থেকে আমরা ভালো অবস্থানে আছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টপঅর্ডারে রান চান শান্ত