ইসরায়েল আজ শনিবার গাজা থেকে আরও ছয়জন জিম্মিকে গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এর আগে গতকাল দেশটি অভিযোগ করেছে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হামাস যে চার জিম্মির মরদেহ ফেরত পাঠিয়েছে, তাদের একজনের সঙ্গে কোনো জিম্মির মিল পাওয়া যায়নি। আর এ ঘটনায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে জটিলতা বেড়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কর্মকর্তাদের মতে, গত মাসে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তানুসারে প্রথম ধাপে ৩৩ জন জীবিত জিম্মিকে হস্তান্তর করার কথা ছিল। এরই মধ্যে বেশির ভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকি ছয় জীবিত জিম্মিকে আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ওই ছয় জিম্মির মধ্যে এলিয়া কোহেন (২৭), তাল শোহাম (৪০), ওমরশেম তোভ (২২) ও ওমর ওয়েনকার্টকে (২৩) ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় গাজায় ধরে নিয়ে যান হামাসের সদস্যরা। আর হিশাম আল-সায়েদ (৩৬) ও আভেরা মেঙ্গিস্তু (৩৯) প্রায় এক দশক আগে পৃথকভাবে গাজায় প্রবেশ করার পর হামাসের হাতে আটক হয়েছিলেন।

ওই ছয় জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ৬০২ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের এই বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া সর্বশেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হলেও এটি শেষ হতে যাচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলে কেফির বিবাস ও এরিয়েলের সঙ্গে তাঁদের মা জিম্মি শিরি বিবাসের মরদেহ ফেরত পাঠানোর কথা ছিল হামাসের। কেফির ও এরিয়েলের মরদেহ শনাক্ত করা গেলেও শিরির মরদেহের স্থলে অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। অজ্ঞাতনামা মরদেহ হস্তান্তরের মাধ্যমে হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।

আরও পড়ুনহামাসের হস্তান্তর করা চার মরদেহের একটি কোনো জিম্মির নয়, দাবি ইসরায়েলের২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

তবে হামাস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত শিরি ও তাঁর দুই ছেলের মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের পর শিরির দেহ অন্য মরদেহের সঙ্গে মিশে গেছে বলে মনে হচ্ছে। শুক্রবার দলটি আরেকটি মৃতদেহ হস্তান্তর করেছে। ইসরায়েলি ফরেনসিক কর্মকর্তারা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য তদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

আরও পড়ুনইসরায়েলে বাসে বিস্ফোরণের পর পশ্চিম তীরে বড় অভিযানের নির্দেশ নেতানিয়াহুর২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র মরদ হ ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হবে ৫০ জিপ

জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কিনবে সরকার। প্রতিটি অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির মিৎসুবিশি পাজেরো (কিউএক্স) জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৫০টি জিপ কিনতে মোট ব্যয় হবে ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

সূত্র জানিয়েছে, জনপ্রশাসনের কাজে গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ডিসি ও ইউএনওর কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ২০০টি জিপ গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে পিপিআর ২০০৮ এর ৭৫ ও ৭৬ বিধি মোতাবেক ডিপিএম পদ্ধতিতে প্রতিটি জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হিসেবে ২০০টি জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৩০৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীন সরকারি সড়ক পরিবহন শাখার মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দকৃত ৩৭৭ কোটি টাকা থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করা হবে।

অর্থ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই তারিখে জারিকৃত ৪৯৪ নম্বর স্মারক অনুসারে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা (রেজিট্রেশন, ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ) নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে জারি করা ৭৪৯ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে একই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা (রেজিস্ট্রেশন, ভ্যা ও ট্যাক্সসহ) নির্ধারণ করা হয়।

জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জেলা ও উপজেলাতে দপ্তর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদেরকে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, পরিদর্শন, তদারকি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানাবিধ সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হয়। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গ্রেড-১ বা গ্রেড-২ পর্যায়ের কর্মকর্তা না হলেও দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজন ও প্রকৃতি বিবেচনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০টি অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৩১ জুলাই জারি করা ৪৯৪ নম্বর স্মারকের শর্ত শিথিল করে অর্থ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট তারিখে ৫২ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির ২৬১টি জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৩৮১ কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। ইতোপূর্বে যেহেতু শর্ত শিথিল করে অর্থ বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজন ও প্রকৃতি বিবেচনায় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে ৭৪৯ নম্বর স্মারক অনুযায়ী অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়া যৌক্তিক হবে বলে প্রতীয়মান হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীন সরকারি মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দকৃত ৩৭৭ কোটি টাকা থেকে অর্থ বিভাগের ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবরের জারি করা ৭৪৯ নম্বর স্মারক অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ২০০টির পরিবর্তে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এর প্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী ডিসি এবং ইউএনওর কার্যালয়ে সবকারি কাজে ব্যবহারের জন্য ৫০টি জিপ গাড়ির প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কেনার জন্য (অনূর্ধ্ব ২৭০০ সিসি) ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে শর্তসাপেক্ষে সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

শর্তগুলো হচ্ছে: 
ক. গাড়ি কেনার আগে পুরাতন গাড়িগুলো অকেজো ঘোষণা সংক্রান্ত বিআরটিএর পরিদর্শকদলের অনুমোদনের অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে। 

খ. গাড়ি কনডেমনেশন-সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্ত/কার্যবিবরণীর অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

গ. অকেজো ঘোষণাকৃত গাড়িগুলোর বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমাদান-সংক্রান্ত ট্রেজারি চালানের কপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

ঘ. গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং এ বিষয়ে সকল বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

সূত্র জানিয়েছে, ৫০টি জিপ কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহম্মেদ।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হবে ৫০ জিপ
  • হামাসের হস্তান্তর করা চার মরদেহের একটি কোনো জিম্মির নয়, দাবি ইসরায়েলের
  • বিশ্বকাপ ফাইনালের চুমু–কাণ্ডে রুবিয়ালেসের জরিমানা
  • আপেল, কমলা, আঙুরসহ তাজা ফলের শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ