অনভিজ্ঞ অজি বোলিংয়ের সামনে ইংল্যান্ড
Published: 22nd, February 2025 GMT
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরেই এখন আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির যত উত্তেজনা। তবে তার আগে আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দুপুর তিনটায় মাঠে নামছে অন্য দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড। লাহরে এই মহারণের আগে অজি শিবির যেন অনেকটাই স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো মলিন। মূল বোলিং আক্রমণের কেউই নেই অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে।
মাস খানেক আগেই ইংল্যান্ডের সাদা পোষাকের কোচ ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম নিয়েছেন ওয়ানডে দলের দায়িত্বও। তবে রঙিন পোষেকে এই কিউই কোচের শুরুটা বেশ মলিন; পাননি লাল বলের মতো শুরু থেকে সফলতা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আজ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখোমুখি হওয়ার আগে ইংলিশরা ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে ভারতের বিপক্ষে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়াও সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে এসেছে।
আরো পড়ুন:
‘যেভাবে খেলতে চেয়েছিলাম সেভাবে আমরা পারিনি’
বড় জয়ে শুরু দ.
অস্ট্রেলিয়া শিবির থেকে চোটের কারণে সবার আগে ছিটকে গিয়েছিলেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ। এরপর সেই পথ অনুসরণ করেন অজিদের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এবং আরেক পেসার জশ হ্যাজলউড। এসবের মাঝে হঠাৎ করেই ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দেন অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস। সবশেষ সেই দলে নাম লেখান মিচেল স্টার্ক। তাই এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে বেশ ভাঙাচোরা দল নিয়েই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে ক্যাঙ্গারুরা।
অস্ট্রেলিয়া মূল তিন বোলার স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউড ছাড়া ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের আদো কোন পরীক্ষা নিতে পারে কিনা সেই গুঞ্জন ভাসছে চারদিকে। স্কোয়াড থেকে ছিটকে পড়াদের ক্রিকেটারদের বদলে দলে এসেছেন নাথান এলিস, শন অ্যাবট, বেন ডোয়ারশিস, স্পেনসার জনসন ও জ্যাক ফ্রেজার–ম্যাগার্ক। বদলি ক্রিকেটাররা নিঃসন্দেহে প্রতিভাবান, তবে সমস্যা হচ্ছে এরা সবাই মূলত টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ। তাই একদিনের ক্রিকেটে এত বড় মঞ্চে পারফর্ম করার চাপটা থাকছেই তাদের উপর।
তিন নিয়মিত ও অভিজ্ঞ পেসারকে ছাড়া। এক যুগ পর এই প্রথম ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচে তিনজনের একজনও নেই। গত ১২ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া যে দুবার বিশ্বকাপ জিতেছে, দুটিতেই ছিলেন তাঁরা তিনজন। তাদের বদলিদের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা যে ১৯৭৯ সালের পর আইসিসি টুর্নামেন্টে সর্বনিম্ন!
দুই দলেরই ব্যাটিং খুব শক্তিশালী। বিশেষ করে স্টিভ স্মিথ, ট্রাভিস হেড, অ্যালেক্স ক্যারি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে খানিকটা এগিয়ে থাকবে অজিরা। অন্যদিকে ভারতের বিপক্ষ খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও ব্যান ডাকেট, জো রুট, হ্যারি ব্রুক ও জশ বাটলাররা খুব একটা পিছিয়ে নেই।
এই দুই দল এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১৬১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে অস্ট্রীলিয়া ৯১ জয় নিয়ে এগিয়ে আছে, অন্যদিকে ইংল্যান্ডের জয়ের সংখ্যা ৬৫টি। টাই হয়েছে ২টি ম্যাচ এবং ফলাফল আসেনি ৩ ম্যাচে। তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৫ দেখার ৩টি জিতে এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড।
হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া এই দুই দলের মহারণে শেষ হাসি কারা হাসবে তা বলা মুশকিল। তবে এই ম্যাচটা যারা জিতবে, নিঃসন্দেহে তারা এগিয়ে যাবে সেমি ফাইনালের পথে।
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
১২ বছর পর নেই ৩ জনের কেউ, অস্ট্রেলিয়ার এবার কী হবে
মিচেল স্টার্ক নেই, প্যাট কামিন্স নেই, নেই জশ হ্যাজলউডও। অস্ট্রেলিয়া আজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অভিযান শুরু করছে তিন নিয়মিত ও অভিজ্ঞ পেসারকে ছাড়া। এক যুগ পর এই প্রথম ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচে তিনজনের একজনও নেই। অথচ গত ১২ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া যে দুবার বিশ্বকাপ জিতেছে, দুটিতেই ছিলেন তাঁরা তিনজন।
স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউডকে না পাওয়াটা ‘বিগ লস’ই মনে হচ্ছে স্টিভেন স্মিথের। তিন অভিজ্ঞ পেসারের বদলে যাঁরা দলে আছেন, তাঁদের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা যে ১৯৭৯ সালের পর আইসিসি টুর্নামেন্টে সর্বনিম্ন!
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন পেসারের মধ্যে সবার আগে ছিটকে গেছেন হ্যাজলউড। ডানহাতি এ পেসার নিতম্বের চোটে ভুগছেন। এরপর হাঁটুর চোটে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায় কামিন্সেরও। কামিন্স শুধু পেস আক্রমণের একজনই নন, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কও। তাঁর জায়গায় অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্মিথকে।
হ্যাজলউড, কামিন্স ছিটকে গেলেও স্টার্ক চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে ছিল সপ্তাহ দু-এক আগেও। এমনকি বাঁহাতি এ পেসার কোনো চোটেও পড়েননি। আচমকাই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়ে দেয়, স্টার্ক নিজেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। যদিও ঠিক কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউড—এ তিনজনকে ছাড়া অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলেছে ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। সেবার কামিন্স ও হ্যাজলউড দলেই ছিলেন না। আর দলে থাকলেও লন্ডনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে খেলানো হয়নি স্টার্ককে। অস্ট্রেলিয়া একাদশে খেলিয়েছিল মিচেল জনসন, ক্লিন্ট ম্যাকাই ও জেমস ফকনারদের। তবে ১৭ জুন দ্য ওভালের ম্যাচটির পর ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্টের সব ম্যাচেই স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজলউডের মধ্যে অন্তত একজন খেলেছেনই।
এর মধ্যে ২০১৫ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে ছিলেন স্টার্ক, হ্যাজলউড। আর ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ছিলেন তিনজনই, নিয়েছেন ৭ উইকেটও। এ দুই বিশ্বকাপের মাঝে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে ছিলেন তিনজনই, ২০১৯ বিশ্বকাপে স্টার্ক ও কামিন্স।
তিন অভিজ্ঞ পেসারের জায়গায় অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে আছেন শন অ্যাবোট, স্পেনসার জনসন ও নাথান এলিস, যাঁরা অভিজ্ঞতায় বেশ পিছিয়ে। স্টার্ক, হ্যাজলউড ও কামিন্সদের সম্মিলিত ৩০৮ ম্যাচে শিকার মোট ৫২৫ উইকেট, অ্যাবোট-জনসন-এলিসদের ৪০ ম্যাচে ৪৭। ১৯৭৯ বিশ্বকাপের পর আর কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ এত কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিল না।
ভয়ের জায়গা আছে আরও একটি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের পর এখন পর্যন্ত স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজলউডকে ছাড়া মোট ২৮টি ওয়ানডে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া, জিততে পেরেছে মাত্র ১০টি। সব মিলিয়ে তিন অভিজ্ঞ পেসারের না থাকাটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ক্ষতি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্মিথের কথায়ও যা ফুটে উঠেছে, ‘তাদের না থাকা অবশ্যই বড় ক্ষতি। নিঃসন্দেহে তারা বিশ্বমানের পারফরমার। দলের জন্য অনেক বছর ধরে অবদান রেখে এসেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তারা এখন সঙ্গে নেই। আমাদের যা আছে তার দিকেই মনোযোগ দিতে হবে।’