প্রশাসনে ‘সুনামি’ ও এক অ–ভিআইপি উপদেষ্টা
Published: 22nd, February 2025 GMT
জনপ্রশাসনে প্রথম ‘সুনামি’ শুরু হয়েছিল ৫ আগস্টের পর। দ্বিতীয় সুনামি শুরু হলো অতি সম্প্রতি। তবে দুই সুনামির মধ্যে ফারাক আছে। প্রথমটি ছিল অনেকটা জোরজবরদস্তিমূলক। কারও মনে হলো, অমুক মন্ত্রণালয়ে পছন্দসই একজনকে বসাতে হবে। কিন্তু সেই পদে তো একজন আছেন। সাবেক সরকারের অপার মহিমায় পদ ছাড়া বহু কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিলেও এক পদে দুজনকে বসানোর কোনো সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে আগেরজনকে সরাতে হবে। সে জন্য একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে। এভাবে স্বৈরাচারের দোসর বলে অনেককে সরানো হয়েছে। আবার শূন্যস্থানে যাঁদের বসানো হয়েছে, তঁাদের নামেও একই অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ।
জনপ্রশাসনে রদবদল স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে ওএসডি করা কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর উদাহরণ খুব বেশি নেই। আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি-জামায়াতের দোসর কালিমা দিয়ে অনেক মেধাবী কর্মকর্তাকে ওএসডি করেছিল। ২৫ বছরের দোহাই দিয়ে অনেককে বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানো হয়। এর আগে বিএনপি সরকারের আমলেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
আলাপ প্রসঙ্গে একজন সাবেক সচিব বললেন, ঢালাও ওএসডি ও অবসরে পাঠানোর কাজটি শুরু হয় বিএনপির দ্বিতীয় সরকারের আমলে। আওয়ামী লীগ বা বিএনপির প্রথম সরকারের সময় কর্মকর্তাদের গায়ে রাজনীতির তকমা লাগানোর ঘটনা তেমন ছিল না। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিএনপি–জামায়াতের ট্যাগ লাগিয়ে অনেক বেশিসংখ্যক কর্মকর্তাকে ওএসডি করে রাখে এবং এক পর্যায়ে তাদের অবসরে পাঠিয়ে দেয়।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ জনকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে ৪ জন কর্মকর্তা। যাঁরা অবসরে গেছেন, তাঁরা ‘ভূতাপেক্ষভাবে’ পদোন্নতি পাবেন। ২০০৯ সাল থেকে গত বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বঞ্চিত দাবি করে ১ হাজার ৫৪০ কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এর মধ্যে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদনও ছিল। এ–সংক্রান্ত গঠিত একটি কমিটির সুপারিশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যে দেশে থানা পর্যায়ের একজন নেতা ও জেলা পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মকর্তা ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন, সেখানে সাখাওয়াত হোসেনের এ দৃষ্টান্ত অনুসরণীয় বলে মনে করি। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা যদি সত্যি সত্যি দেশটা বদলাতে চান, শুরুটা নিজেকে দিয়েই করতে হবে। ‘আপনি আচরি ধর্ম শেখাও অপরে।’এ হলো জনপ্রশাসনের একদিকের চিত্র। অপর দিকের চিত্র হলো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত তিনটি নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) সালে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা সাবেক জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাঁদের মধ্যে যাঁদের চাকরির বয়স ২৫ বছর হয়েছে, তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। অন্যদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে ২২ জন সাবেক ডিসিকে, যাঁরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ নানা পদে অতিরিক্ত সচিব ও সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর ওএসডি করা হয়েছে ৩৩ কর্মকর্তাকে। এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মুখ্য ভূমিকা থাকে, এটা সত্য। কিন্তু ভোটকেন্দ্রের মূল কাজটি তো করে থাকেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তারা। এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদেরও সক্রিয় ভূমিকা ছিল রাতের ভোটে। ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোটে’ আমলাদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দৌরাত্ম্য কম ছিল না। সে ক্ষেত্রে অন্যদের বাদ দিয়ে কেবল ডিসিদের শাস্তি দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা হলো দলীয় সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কারণ, দলীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ ও সাহস কেউ দেখাতে পারেননি। সেটা ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪–এর জন্য যেমন সত্য, তেমনি সত্য ১৯৯৬ সালের (১৫ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের জন্যও।
জনপ্রশাসনসচিব বলেছেন, অপরাধ করে কেউ ভবিষ্যতেও পার পাবেন না, শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু অতীতের অন্যায়ের বিচারের ক্ষেত্রে শুধু রিটার্নিং কর্মকর্তারা কেন শাস্তি পাবেন? অন্যরা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবেন? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ নির্বাচনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সবার আমলনামা খতিয়ে দেখা হোক। তদন্ত সাপেক্ষে তাঁদেরও বিচারের আওতায় আনা হোক।
ডেইলি স্টার–এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন আগামী অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছেন। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অক্টোবরেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। তিনি আগামী বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বিদায় নেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে সংশয় সন্দেহ আছে, তাঁর এ বক্তব্যের মাধ্যমে কাটবে কি না জানি না, এর আগে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তফসিলের বিষয়ে কিছু না বললেও ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। ওই সাক্ষাৎকারে সাখাওয়াত হোসেন সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়েও একটা বাস্তব ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানুষের প্রত্যাশা সরকারের গতি ৮০ কিলোমিটার হোক, আমরা হয়তো ৪০-৫০–এ চলছি।’ অর্থাৎ সরকারের জনপ্রত্যাশার অর্ধেক পূরণের অবস্থায় আছে।
উপদেষ্টাদের ক্ষমতাচর্চা সম্পর্কে রাজনৈতিক মহলে নানা রকম আলোচনা আছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্যদের বিষয়টা বলতে পারব না। আমার জন্য বরাদ্দ সরকারি গাড়ির বাড়তি ব্যবহার করি না, আমার পরিবারের কাউকে করতে দিই না।...বিদেশে গেলে ভিভিআইপি টার্মিনাল ব্যবহার করি না। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটেও ভিভিআইপি টার্মিনাল ব্যবহার করি না। লন্ডনে গিয়েছি, বিজনেস ক্লাসের টিকিট নিইনি, ইকোনমি ক্লাসে গিয়েছি। ভিআইপি টার্মিনাল ব্যবহার না করায় আমার সহকর্মীদের তো মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা। তাদের বলি, তোমরা যারা ভিভিআইপিতে যেতে চাও যাও, আমি সাধারণ লাইনে দাঁড়িয়ে যাব।’
যে দেশে থানা পর্যায়ের একজন নেতা ও জেলা পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মকর্তা ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন, সেখানে সাখাওয়াত হোসেনের এ দৃষ্টান্ত অনুসরণীয় বলে মনে করি। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা যদি সত্যি সত্যি দেশটা বদলাতে চান, শুরুটা নিজেকে দিয়েই করতে হবে। ‘আপনি আচরি ধর্ম শেখাও অপরে।’
● সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর য য় র একজন সরক র র আমল ল গ সরক র সরক র র স উপদ ষ ট ন সরক র র জন য বছর র ব এনপ ক ষমত আওয় ম ভ আইপ র সদস প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সন্জীদা খাতুন—শ্রদ্ধা ও সমীহের সঙ্গে উচ্চারিত একটি নাম
বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির জগতে শ্রদ্ধা ও সমীহের সাথে উচ্চারিত একটি নাম সনজীদা খাতুন। রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশত বছরে শান্তিনিকেতন থেকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতির জন্যে বাংলাদেশে তিনিই যোগ্যজন। সাধনা ও সংগ্রামের মিশ্রণে এ এক অনন্য জীবন। প্রায় আশি ছুঁই ছুঁই বয়সেও পথচলার সুদীর্ঘ এই ধারায় কখনও ছেদ পড়েনি, বরং উত্তরোত্তর নতুন নতুন দায় কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি।
সাহিত্য ও সংগীত সনজীদাআপার মূল দুই সঞ্জীবনী, সেই সূত্রে রবীন্দ্রনাথ প্রেরণার প্রধান উৎস, পথ চলার সহায় ও সঙ্গী।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিচিত্র সৃষ্টির পাশাপাশি ভাবনা ও কর্মে বাঙালিকে গ্রাম্যতার গণ্ডি কাটিয়ে নাগরিক বিশ্বপরিসরে উত্তরণের পথ দেখিয়েছেন। কবির মূল এই অভিপ্রায়ের সাথে আমাদের কৃষি-নির্ভর রক্ষণশীল সমাজের পরিচয়সাধন এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে তার উত্তরণের পথে অচলায়তন অন্তরে-বাহিরে, এবং তা দুস্তর ও বিস্তর। রবীন্দ্র-ভাবশিষ্যা সনজীদা খাতুন আজীবন সেই বাধাসংকুল দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে চলেছেন। অন্তর্নিহিত সাধকসত্তা তাঁকে সকল বাধা তুচ্ছ করে প্রয়োজনে একাই এগিয়ে চলার শক্তি দেয়। আর তাঁর স্বোপার্জিত সংগ্রামী সত্তা দিয়েছে সমমানাদের সংঘবদ্ধ করার প্রেরণা।
তাঁর সেই শক্তি ও প্রেরণার সার্থক প্রকাশ ছায়ানট-মহীরুহ। গত শতকের ষাট দশকে জাতির জাগরণের উত্তাল সময়ে ছায়ানট হয়ে ওঠে বাঙালির সাংস্কৃতিক যাত্রার দিশারী সংগঠন। আর স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রতিক্রিয়াশীলতার প্রত্যাঘাতের সময় ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামেও ছায়ানট থাকল একই অবস্থানে অবিচল প্রত্যয়ে। গোড়ায় ছিলেন অনেকের একজন, ক্রমে কঠিন থেকে কঠিনতর বাস্তবতায় যখন ছায়ানটের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বেড়েছে, এবং যখন জাগরণে ও প্রতিরোধে বৃহত্তর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অনুঘটকের ভূমিকায় ছায়ানট তখন বা ততদিনে এ প্রতিষ্ঠানের কাণ্ডারী সনজীদা খাতুন। প্রতিষ্ঠান অনেকের ভূমিকা ও অবদানেই রূপ পায়, তবে তখনই পায় যখন নেতৃত্ব থাকে সঠিক।
বাঙালি মুসলিম সমাজের রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদের প্রথম প্রজন্মের একজন তিনি, তবে তিনি কেবল সেই ভূমিকায় আবদ্ধ থাকলেন না, নিজেকে ছড়িয়ে দিলেন এবং ছাড়িয়ে উঠলেন সংগীত শিক্ষকের ও সংগঠকের দায় কাঁধে নিয়ে। সাহিত্যই তাঁর আগ্রহ ও চর্চার আদি বিষয় হওয়ায় তাঁর শিক্ষা সাঙ্গীতিক ব্যাকরণের পাঠ ছাপিয়ে জীবন, সমাজ ও সংস্কৃতি অবধি পরিব্যাপ্ত।
ছায়ানট জন্মাবধি ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীলদের হুমকির মুখেই ছিল। কিন্তু ২০০৩-এ সেটা আড়াল সরিয়ে সরাসরি যখন আঘাত হানল নববর্ষের অনুষ্ঠানে তখন অনেকেরই মনে হল শুধু সঙ্গীত ও সংস্কৃতির কাজে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, হাত দিতে হবে মানুষ গড়ার আরও মৌলিক ক্ষেত্রে—শিক্ষায়। সেই ভাবনায় ও কাজে এদেশে রবীন্দ্রসংস্কৃতি বিকাশের প্রাণপুরুষ প্রয়াত ওয়াহিদুল হক ছিলেন অগ্রণী। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানেরও ধাত্রী এবং ওয়াহিদ ভাইয়ের মৃত্যুর পর, এর অভিভাবক, সনজীদাআপাই।
আজ বিশ্বায়ন ও বাণিজ্যায়ন যেন পরিপূরক ভূমিকায় মানুষের সামনে সম্পূর্ণ জগত খুলে ধরে ক্ষান্ত নয়, মেলে ধরেছে ভোগের সীমাহীন সম্ভার এবং তা স্বভাবতই মানুষকে, বিশেষত তরুণদের, ঠেলে দিয়েছে ব্যস্ততা-অস্থিরতার এক কোলাহলময় জঙ্গম জীবনে। তোড়ের মুখে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভেসে যাচ্ছে অনেকে, কেউ পথ হাতড়ে মরছে, কেউবা ধর্মান্ধতার বিবরে আশ্রয় নিচ্ছে।
কিন্তু কবির জীবনসায়াহ্নের সাবধানবাণী শোনে নি কেউ। প্রাচ্যও, পশ্চিমেরই মত, এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি আজ। ব্যবহারিক সংস্কৃতিতে এত বিপুল পরিবর্তন ঘটে চলেছে যে তার প্রভাব মানুষের চিন্তার জগৎকেও কেবল আলোড়িত করছে না, নতুন বা ভিন্ন সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে সকলকে। তবে দেশে ও বিশ্বে অনেকেরই বিশ্বাস—এবং তা বাড়ছে, বেড়েই চলেছে—এ সময়ে রবীন্দ্রনাথ থেকে নেওয়ার প্রয়োজন ও সুযোগ উভয়ই বাড়ছে।
আশি বছরের দ্বারপ্রান্তে এসে নতুন কালের সামনে দাঁড়িয়ে আজ সনজীদা আপা; তবে তাঁর হৃদয় মাঝে অভয় বাজে নিশ্চয়—কারণ চিরনূতনেরে ডাক দিয়ে যান যে কবি তিনিই তো তাঁর সহায় ও সাথী।