কুড়িগ্রামের সোনাহাট সেতু দিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক
Published: 22nd, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙে একটি পাথর বোঝাই ট্রাক আটকে যায়। এরফলে ওই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন যানবাহনের চালক, যাত্রী ও এলাকাবাসী। পরে মেরামত শেষে সেতুটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম এতথ্য জানান।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক সোনাহাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে ওঠে। এসময় সেতুর স্টিলের অংশে পাটাতন ভেঙে ট্রাকটি আটকে যায়। এ কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল। দ্রুত সেতুটির মেরামত কাজ শুরু করে কৃর্তপক্ষ। রাত ১০টার দিকে মেরামত শেষে যান চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আরো পড়ুন:
পদ্মা সেতুতে বাসের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেল অ্যাম্বুলেন্স, আহত ৫
যমুনা রেল সেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেন উঠছে আজ
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা থানা, কেদার, মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়। ব্রিটিশ আমলে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয় ১০০ বছর। সেই মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। সোনাহাট স্থলবন্দর চালু হলে এই সেতুর ওপর দিয়ে পরিবহন শুরু হয় পাথর ও কয়লা।
সোনাহাট স্থলবন্দর এবং ভুটানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য ঝুঁঁকিপূর্ণ রেল সেতুর পাশে দুধকুমার নদের দক্ষিণে ২০১৮ সালে ৬৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি নতুন পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চার দফা মেয়াদ এবং বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুল বলেন, “এই সেতুদিয়ে আগে ট্রেন চলতো। এখন বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চালাচল করে। পাথরবোঝাই ট্রাক যাওয়ার সময় সেতুটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। সরু এই সেতু দিয়ে যখন একটি ট্রাক যায় তখন পাশ দিয়ে অন্য কোনো যানবাহন যাওয়ার জায়গা থাকে না। যে কারণে সেতুর দুই প্রান্তে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হয়।”
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, “সেতুটি মেরামত করা হয়েছে। রাত ১০টার দিকে এই সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই স ত ম র মত র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির অস্পস্টতা দূর করতে নতুন প্রজ্ঞাপন
ভারতের সুতা আমদানি বন্ধের প্রজ্ঞাপনের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নতুন ব্যাখ্যা অনুসারে, গত ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির জন্য যাঁরা ঋণপত্র খুলেছেন, তাঁরা আগের মতো স্থলবন্দর দিয়ে ওই সুতার চালান খালাস করতে পারবেন। এমনকি ১৩ এপ্রিল বা এর আগে যাঁরা এ–সংক্রান্ত ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, তাঁরাও একই সুবিধা পাবেন।
গতকাল বুধবার এনবিআর এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
আগে গত ১৩ এপ্রিল আরেক প্রজ্ঞাপনে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে এনবিআর। যাঁরা ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ঋণপত্র খুলেছিলেন, তাঁরা কী করবেন—এ নিয়ে মাঠপর্যায়ের অস্পষ্টতা দূর করতে নতুন ব্যাখ্যা দিল এনবিআরের শুল্ক বিভাগ।
এনবিআরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, যেসব আমদানিকারক ১৩ এপ্রিল বা তার পূর্বে সুতা আমদানির ঋণপত্র স্থাপন করেছেন বা উক্ত তারিখের পূর্বে সুতা আমদানির ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, সেসব ঋণপত্রের পণ্য চালান উক্ত প্রজ্ঞাপনের (১৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন) আওতায় পড়বে না।
স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার দাবি দীর্ঘদিন করেছেন দেশীয় স্পিনিং মিলমালিকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস আগে সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। অবশ্য এই অনুরোধ করার আগে বিটিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল ট্যারিফ কমিশন।
ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইলশিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্ত–সংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন।