সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় গরুবাহী ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচজন।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের দুপচাঁচিয়া মেইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর দিক থেকে গরুবোঝাই একটি ট্রাক বগুড়ার দিকে যাচ্ছিল। দুপচাঁচিয়া মেইল বাসস্ট্যান্ড এলাকা অতিক্রমের সময় একটি অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে আরেকজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন- দুপচাঁচিয়া উপজেলার বানিয়াদিঘীর গ্রামের মোজাহার (৬০) ও সাফিকুল ইসলাম (৪৫), আদমদীঘি উপজেলার বড় আকিড়া এলাকার শহিদুল ইসলাম (৬০), দুপচাঁচিয়ার মাঝিপাড়া গ্রামের মেজবাহ (৩২) ও ডিপুইল গ্রামের অটোরিকশাচালক ময়েন সরদার (৫৫)।

দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, নিহতদের মধ্যে একজন অটোরিকশাচালক ও তিনজন স্থানীয় একটি টাইলস কারখানার শ্রমিক। তারা কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। ঘটনাস্থলে নিহত চারজনের মরদেহ বর্তমানে দুপচাঁচিয়া থানায় রয়েছে। অপরজনের মরদেহ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

‘অভিযুক্ত’ চালক-সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন বাদীর

ঢাকা–রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় হওয়া মামলায় বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় শুক্রবার ভোরে হওয়া মামলার বাদীকে পুলিশ এজাহারের বর্ণনা পড়ে শোনাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারা (যৌন নিপীড়ন) এবং দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় (ডাকাতি) মামলাটি করা হয়। এতে অজ্ঞাতনামা আট–নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। বাসের ভুক্তভোগী যাত্রী ও নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা ওমর আলী এই মামলায় বাদী হয়েছেন।

ওমর আলী আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোর চারটার দিকে পুলিশের গাড়িতে করে তিনি, আরেক যাত্রী সোহাগ হোসেন ও তাঁদের ব্যবসায়িক অংশীদার আবু হানিফকে মির্জাপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। তারপর মামলার এজাহারে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে এজাহার তাঁকে পড়ে শোনানো হয়নি। তিনি জবানবন্দিতে ডাকাতির ঘটনা ও দুই নারীর শ্লীলতাহানির বর্ণনা দিয়েছেন; কিন্তু এজাহারে কী লেখা হয়েছে তিনি জানেন না।

ওমর আলীর কাছ থেকে যখন পুলিশ এজাহারে স্বাক্ষর নিচ্ছিল, তখন ওই বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), তাঁর সহকারী মাহবুব আলম (২৮) ও বাসের সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) থানায় বসে ছিলেন। তাঁরাও মামলা করতে চেয়েছিলেন। যদিও পুলিশ তাঁদের মামলা নেয়নি।

বাদী ওমর আলী তাঁদের থানায় দেখে অবাক হয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ‘ওরা (চালক ও তাঁর সহকারী) ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ওরা আসামি হবে। আবার ওরাই মামলা করার জন্য এসে বসে আছে। এটা কী হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার তদন্তে বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারের জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাঁদেরও আসামি করা হবে। চালক-সুপারভাইজারদের মামলার বিষয়ে বলেন, ‘তাঁদের নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ কারণে যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁদের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

এজাহারে যা বলা হয়েছে

মামলার এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় সময় ও ঘটনার স্থান যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা যাত্রীরা আগে ঠিকমতো বলতে পারেননি। এজাহারে বলা হয়, বাসে ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। রাত প্রায় একটার দিকে বাসটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রা বাইপাসে চা–পানের বিরতির জন্য থামে। এ সময় চন্দ্রা বাইপাস থেকে তিন–চারজন নতুন যাত্রী ওঠেন বাসে। রাত দেড়টার দিকে কালিয়াকৈরের হাইটেক সিটি পার্ক-সংলগ্ন খাড়াজোড়া উড়ালসেতু অতিক্রমের পাঁচ–ছয় মিনিট পরেই হঠাৎ যাত্রীবেশে আট থেকে নয়জন ডাকাত দাঁড়িয়ে যায়। তাঁরা ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে সবাইকে চুপ থাকতে বলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ডাকাত পেছন থেকে সামনে এসে বাসচালকের গলায় চাকু ধরে ‘অনেক চালাইছস আর চালানো লাগবে না’ বলে টেনেহিঁচড়ে গাড়ির পেছনে উল্টো করে ফেলে রাখেন। একজন ডাকাত গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।

এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, রাত পৌনে দুইটার দিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সোহাগপাড়ার পদচারী–সেতুর প্রায় ১০০ গজ পশ্চিমে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর পৌঁছালে ডাকাত দলের ছয়–সাতজন বাদীসহ যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা, মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। দুই-তিনজন নারীর শ্লীলতাহানি করেন। বাসটি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার নাটিয়াপাড়া নাসির গ্লাসের সামনে থেকে ঢাকার দিকে ইউটার্ন নেয়। প্রায় দুই-আড়াই ঘণ্টা কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরানোর পর ভোর প্রায় চারটার দিকে ঢাকার আশুলিয়া থানার বারইপাড়া এলাকার নন্দন পার্কের সামনে গাড়িটি টাঙ্গাইলমুখী করে থামিয়ে চালককে ‘১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোথাও থামালে জানে মেরে ফেলব’ বলে তাঁরা দ্রুত বাস থেকে নেমে যান।

আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন দিন পর মামলা৬ ঘণ্টা আগে

এজাহারে ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বর্ণনা দিয়ে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩৮ বছরের মধ্যে। প্রত্যেকের পরনে ছিল ফুলপ্যান্ট, জ্যাকেট, গেঞ্জি (ফুল ও হাফহাতা) ও শার্ট। একজন লম্বা, ফরসা এবং একজন মোটা, শ্যামলা ও অন্য ডাকাতদের শারীরিক গঠন মাঝারি ধরনের ছিল। তাঁরা ঢাকা ও আশপাশের জেলার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিলেন। বাদী ডাকাতদের দেখলে চিনতে পারবেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে যাত্রীদের কাছ থেকে লুটের টাকার পরিমাণ ও দুজন নারীযাত্রীর শ্লীলতাহানির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এজাহারে ভুক্তভোগী বাসের যাত্রীরা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা হয়ে কীভাবে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় আসেন তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ করা হয়, গাড়িটি বড়াইগ্রাম থানা মোড়ে এলে যাত্রীদের মধ্য থেকে সন্দেহবশত বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার জড়িত সন্দেহ করে পুলিশের হেফাজতে দেয়। বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।

এজাহার পড়ে শোনানো হয়নি বাদীকে

এজাহারে উল্লিখিত বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ওমর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মামলার এজাহার বাদী ওমর আলীকে পড়ে শোনানো হয়নি বলে তিনি জানান। ওমর আলী বলেন, পুলিশ এজাহারে স্বাক্ষর দিতে বলেছে। এ জন্য তিনি স্বাক্ষর দিয়েছেন।

এজাহারে বাসের সুপারভাইজারের কাছ থেকে ডাকাতেরা ৩০ হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন বলে উল্লেখ করা হলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাদী। ওমর আলী বলেন, সুপারভাইজারের কাছ থেকে ডাকাতেরা  সব টাকাপয়সা নিয়ে নিলে তাঁরা যমুনা সেতুর টোল কীভাবে দিলেন? বাসে তেল ভরলেন কীভাবে? তাঁরা হোটেলে খেলেন কীভাবে?’

‘টাঙ্গাইলের পুলিশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে মামলাটি নিয়েছে’

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় আজ বেলা তিনটায় মির্জাপুর থানার ওসির কার্যালয়ে ব্রিফিং করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। এর আগে র‌্যাব-১৪ টাঙ্গাইলের কোম্পানি কমান্ডার মেজর কাউসার বাধন ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান থানায় মামলার বাদী ওমর আলী ও তাঁর সঙ্গে থাকা বাসের যাত্রী মো. সোহাগ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন।

পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি ঢাকা, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল—তিন জেলায় সম্পৃক্ত। ভুক্তভোগীদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে মামলাটি নিয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক দল বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ইতিমধ্যে অনেক এগিয়ে গেছে।

আরও পড়ুনঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির যে বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঘটনাটিকে আন্তজেলা ডাকাত চক্রের কাজ উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, টাঙ্গাইলের পুলিশ ঘটনাটি জানার পর তদন্ত করে স্বপ্রণোদিত হয়ে দ্রুত মামলার প্রক্রিয়ায় যায়। ডাকাত চক্রকে ধরতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাসড়কে দীর্ঘ সময় ধরে ডাকাতির কারণ, যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা। যাত্রীরা কেউ চিৎকার-চেঁচামেচি করতে না পারায় টহল পুলিশ বিষয়টি টের পায়নি। এ ঘটনায় জামিনে থাকা বাসচালক, তাঁর সহকারী ও সুপারভাইজার পুলিশের নজরদারিতে আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিম্মি শিরি বিবাসের মরদেহ শনাক্ত করল পরিবার
  • মাহফুজ উল্লাহর উদ্দেশ্যই ছিল মানুষের কল্যাণে সমাজ পরিবর্তন করা: মির্জা ফখরুল
  • কুয়েটে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
  • পাকিস্তান এবার আরও দু্র্বল, বলছেন মাঞ্জরেকার
  • রাজধানীতে এক রাতে ছয় ডাকাতি
  • পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচ টেপ প্যাঁচানো লাশটি ব্যবসায়ী বাসারের
  • ঝিনাইদহে ৩ জনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার, দায় স্বীকার করে বার্তা
  • শিরোনামহীনের ‘প্রিয়তমা’ প্রশংসা কুড়াচ্ছে
  • ‘অভিযুক্ত’ চালক-সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন বাদীর