পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ভারতের ক্রিকেটার ভারতেই জয় চাইবেন—এমনটাই স্বাভাবিক। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও চাইবেন তাঁর দেশের জয়। শক্তিতে যে দলই এগিয়ে থাকুক না কেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, টেলিভিশনের টক শোতে নিজ দলের জয়ই সবার চাওয়া।

তবে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে একজন ব্যতিক্রমী সাবেক ক্রিকেটার পাওয়া গেল, যিনি প্রতিপক্ষের জয় চান। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার অতুল ওয়াসান আগামীকাল দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় দেখতে চান। চাওয়াটা অদ্ভুত। কিন্তু নব্বই দশকের ক্রিকেটার অতুলের কেন এমন চাওয়া?

ভারতের হয়ে ৪ টেস্ট ও ৫ ওয়ানডে খেলা অতুল আসলে পাকিস্তানের চেয়ে টুর্নামেন্টের স্বার্থই বেশি দেখছেন। এই মুহূর্তে পাকিস্তান ও ভারত দুই দল দুই মেরুতে।

আমি চাই পাকিস্তান জিতুক। কারণ টুর্নামেন্টের জন্য এটাই ভালো হবে। পাকিস্তানকে জিততে না দিলে তারা কী করবে?ভারতের সাবেক ক্রিকেটার অতুল ওয়াসান

পাকিস্তান প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে, অন্যদিকে ভারত জিতেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল দুবাইয়ে খেলবে ভারত-পাকিস্তান। এই ম্যাচে পাকিস্তান হেরে গেলে টুর্নামেন্ট থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়বে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। তাই পাকিস্তানকে টুর্নামেন্টে টিকিয়ে রাখতেই অতুল পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের হার চান।

আরও পড়ুনভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান চাপে থাকবে যে কারণে১ ঘণ্টা আগে

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে অতুল বলেছেন এভাবে, ‘আমি চাই পাকিস্তান জিতুক। কারণ টুর্নামেন্টের জন্য এটাই ভালো হবে। পাকিস্তানকে জিততে না দিলে তারা কী করবে? পাকিস্তান যদি জেতে তাহলে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হবে। একটা সমান সমান লড়াই হওয়া উচিত।’

ঋষভ পন্ত ওয়ানডে একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ