ঝিনাইদহের শৈলকূপায় ৩ জনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রপুর ত্রিবেণী সেচখাল এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দিনের ছেলে হানিফ (৫০), তার শ্যালক লিটন হোসেন (৩৫)। এর মধ্যে, হানিফ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) সক্রিয় নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে। বাকি একজনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিন জনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।

শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম হানিফ। তিনি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন।’’

ওসি আরো বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে দুটি কালো রঙের মোটরসাইকেল, একটি ম্যাগজিন ও গুলি পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

এদিকে হত্যার বিষয়ে চরমপন্থী সংগঠন জাসদ গণবাহিনীর নেতা কালু পরিচয়ে দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন।

ক্ষুদে বার্তায় লেখা আছে, এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনাবাসির উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো, অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।

ঢাকা/সোহাগ/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র গ ল ব দ ধ মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে বিতর্ক, কমতে পারে অংশগ্রহণ

‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ বৈশাখের অন্যতম আয়োজন। প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের নির্দিষ্ট ব্যাচের তত্ত্বাবধানে এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের যৌথ প্রয়াসে আয়োজিত হয়। এবার ভিন্নতা ঘটায় আয়োজন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের একাংশ তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। ফলে এবার অংশগ্রহণ কমবে বলে তারা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারুকলার ১৩তম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী সমকালকে বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনের সম্পূর্ণ অর্থ অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। এখানে কোনো বাণিজ্যিক বিষয় বা স্পন্সর থাকে না। চারুকলার রীতি অনুযায়ী যা এ বছর ২৬তম ব্যাচের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল। 
কিন্তু এবারের আয়োজনে সেই রীতি মানা হচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা নেই। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।’
সীমান্ত ঘোষ নামে চারুকলার এক ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, ‘বৈশাখ ১৪৩২-এ আমাদের ব্যাচ, আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে– ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। তবে এ আয়োজনকে ‘স্বজনপ্রীতিদুষ্ট ও দেশের পরিবর্তনকালীন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী’ আখ্যায়িত করেছে ২৬ ব্যাচ। আয়োজন ও আয়োজক কমিটিকে বর্জন করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার শোভাযাত্রা নিয়ে স্পষ্ট বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এবারের বৈশাখ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের চাটুকারিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে আমরা শিক্ষকদের আয়োজন করা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও শোভাযাত্রা সমর্থন করছি না।’

ভাটা পড়বে আনন্দ আয়োজনে
প্রাক্তন ও বর্তমান একাধিক শিক্ষার্থী জানান, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কমবে। চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের তৈরি শিল্পকর্ম কেনার লোকও কমবে। সেই সঙ্গে এবার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার শঙ্কা রয়েছে। আয়োজন ঘিরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে প্রথম বিতর্ক তৈরি হয় শহীদ আবু সাঈদের মোটিফ তৈরির সিদ্ধান্তে। দ্বিতীয় হচ্ছে, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর আয়োজনের নাম পরিবর্তনের ইঙ্গিতে। তৃতীয় বিতর্ক তৈরি হয়, নির্ধারিত ব্যাচকে দায়িত্ব না দেওয়ায়। এসব কারণে প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে চারুকলা অনুষদের একজন শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আয়োজন ও কমিটিকে বর্জন করেছে বলে শুনেছি। আর শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটা ঠিক আছে। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন অনেক বেশি রাজনৈতিক হচ্ছে। এতে সবার অংশগ্রহণের যে স্বতঃস্ফূর্ততা, তা নষ্ট হয়ে গেছে।’ অনেকে জানান, তাদের ব্যাচ এবং পুরো চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্জন করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল সমকালকে বলেন, ১৯৮৯ সালে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়। তখন থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এর আয়োজন করে। ২০০৬ সালে প্রতিবছর নির্ধারিত একটি ব্যাচকে আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে একটি ব্যাচ আয়োজন করলেও যে এ নিয়ে বিতর্ক ছিল না, তা নয়। সেখানে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হতো না। এ ছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই আয়োজন একাডেমিক কার্যক্রমের অংশ করা হবে। এ কারণে কোনো ব্যাচকে আলাদাভাবে দায়িত্ব দেওয়া যাচ্ছে না। ২৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পাস করে বের হয়ে গেছে। তারা এসে কখনও বলেওনি যে, তারা আয়োজন করতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ৯ ও ১২ মার্চ অনুষদের সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করি। সেখানে কোনো নির্ধারিত ব্যাচকে দিয়ে আয়োজন না করানোর সিদ্ধান্ত হয়। ১৩ মার্চ ছাত্র-শিক্ষক সমন্বয়ে একটা বৈঠক হয়। সেখানে নানা ধরনের কমিটি ও উপকমিটি গঠন করা হয়। কমিটিগুলোতে বর্তমান ছাত্রদের যুক্ত করা হয়। তবে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এসে কাজ করতে চাইলে তাদেরও যুক্ত করা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ড. ইউনূসকে এক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই: সারজিস
  • বিএমডিএর আরো ২ প্রকৌশলী সাময়িক বরখাস্ত, ব্যাখ্যা তলব
  • লুঙ্গি পরার কারণ ব্যাখ্যা করলেন বুবলী
  • হলান্ড, এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস—কার বেতন বেশি
  • শখের কলের গান ও একজন আব্দুল আলী
  • বাল্যবিয়ে: সক্ষমতার বিলুপ্তি, সম্ভাবনার অপমৃত্যু
  • প্রকাশ্যে ‘চাঁদ মামা’, নেটিজেনরা বলছেন ‘আগুন’
  • আমাকে কেন বাজে কথা শুনতে হলো, প্রশ্ন কাজী মারুফের
  • মিয়ানমারে ভূমিকম্পে বড় ক্ষতির আশঙ্কা, বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
  • মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে বিতর্ক, কমতে পারে অংশগ্রহণ