কুমিল্লায় জামায়াত আমিরের পথসভায় এসে কর্মীর মৃত্যু
Published: 22nd, February 2025 GMT
কুমিল্লায় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের পথসভায় যোগ দিতে এসে বাসচাপায় জসিম উদ্দীন (৫২) নামের এক জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রয়াত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
দলীয় নেতারা জানান, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান সাংগঠনিক সফরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে লক্ষ্মীপুর যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার পর লালমাইয়ের উত্তর বাজার এলাকায় তার বহরের চারটি গাড়ি যানজটে আটকা পড়ে। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তার গাড়িবহর যানজটে আটকা পড়ে। তখন তিনিসহ সংগঠনের ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী যানজট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। আমিরকে নিয়ে তারা পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীন বাসচাপায় মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক আবু তালেব বলেন, তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস চাপা দিলে জসিম উদ্দীনের মাথা থেকে অনেক রক্ত বের হয়। নিহত ব্যক্তির ভাই মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, দুর্ঘটনার পর জসিম উদ্দীনকে সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমাদের দল জসিম উদ্দীনের পরিবারের পাশে থাকবেন। জসিমের তিন ছেলের মধ্যে একজন এখনো শিশু। তাই দল থেকে এ পরিবারকে সহায়তা দেয়া হবে।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম সমকালকে বলেন, বাগমারা উত্তর বাজারে বাসচাপায় জসিম উদ্দীন নামের একজন ব্যক্তি মারা গেছেন। পরিবারের লোকজন মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন। পরিবার মামলা করবে না বলে জানিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজস্ব আদায়ে পদক্ষেপ নিন
স্টেশন বন্ধ। কিন্তু ট্রেন আসে, ট্রেন যায়। যাত্রীরাও ওঠানামা করেন। তবে টিকিট ছাড়া। কারণ, স্টেশন বন্ধ থাকায় কোনো টিকিট বিক্রি হয় না। কুমিল্লার লাকসাম থেকে রেলপথে নোয়াখালী পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটারের দূরত্বে এ রকম ছয়টি স্টেশন আছে। প্রায় দুই দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে স্টেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতগুলো স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠানামা করেন। ফলে প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দীর্ঘ রেলপথটিতে মোট ১২টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে লাকসামের দৌলতগঞ্জ, মনোহরগঞ্জের খিলা ও বিপুলাসার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর বজরা, নোয়াখালী সদরের মাইজদী ও হরিনারায়ণপুর স্টেশনের কার্যক্রম ২০০৩ সালের পর থেকে পর্যায়ক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে লাকসাম পৌর শহরের দৌলতগঞ্জ স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আগে এই রেলপথে প্রতিদিন আন্তনগর, এক্সপ্রেস, লোকাল, ডেমুসহ অন্তত ১২টি ট্রেন চলাচল করত। এ রেলপথে এখন আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন চলাচল করে। আর তিনটি ভিন্ন নামে আরেকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে, যেটি স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে লোকাল ট্রেন হিসেবে পরিচিত।
পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, জনবলসংকটসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মানুষের কথা চিন্তা করে এখনো ট্রেনসেবা চালু রাখা হয়েছে। এসব স্টেশনে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠার পাশাপাশি বুকিং ছাড়াই মালামালও পারাপার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয় যে মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেনসেবাটি তারা বন্ধ করেনি। তবে স্টেশনগুলো আবার চালু করাও সময়ের দাবি। কারণ, স্থানীয় লোকজনই বলছেন স্টেশনগুলো দিয়ে বিপুল মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এক ব্যক্তি বলছেন, ‘খিলা ও বিপুলসার স্টেশন আমাদের গ্রামের দুই দিকে কাছাকাছি। একসময় এই স্টেশনগুলো জমজমাট ছিল। দিনরাত ট্রেনের হুইসেল বাজত। কিন্তু এখন জৌলুশ নেই। স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় রাতে সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডাসহ অসামাজিক কার্যক্রমও চলে। আমরা চাই, রেলের সোনালি দিনগুলো ফিরে আসুক।’
দৌলতগঞ্জ স্টেশনটি দেড় দশক আগেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্টেশনটি ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথে আসা মালামাল ট্রেনে আনা-নেওয়ার জন্য এটিকে ব্যবহার করা হতো। এখন টিকিট বেচা ও মালামাল পরিবহনে বুকিং কার্যক্রম বন্ধ। কিছু জায়গা এখন দখল হয়ে কয়েক শ অস্থায়ী দোকান বসে গেছে, যার মধ্যে গড়ে উঠেছে লাকসামের বৃহৎ কাঁচাবাজার।
আমরা আশা করব, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে স্টেশনগুলো আবারও চালু করা হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারছি। এখন কবে নাগাদ পরিবর্তন দেখতে পাব আমরা, সেটিরই অপেক্ষা।