যশোরের মনিরামপুরে একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে শৌচাগার নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকসহ দু’জনকে পুলিশ আটক করে। পরদিন বৃহস্পতিবার আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান। তবে শুক্রবার শিক্ষার্থীরা ইট ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরা করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

জানা যায়, উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাশাপাশি অবস্থিত। একই মাঠের এক পাশে ৩০ বছর আগে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এ শহীদ মিনারে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিজয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ জানুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে শৌচাগার (ওয়াশরুম) নির্মাণের উদ্যোগে নেন। এ ব্যাপারে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা দিলেও কোনো কর্ণপাত করা হয়নি। ফলে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করে। পরে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করা হয়। ইউএনও নিশাত তামান্নার নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোত্তালিব আলম সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান ১১ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও তার সহযোগী সুকুমার মল্লিককে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, গত বুধবার আসামিদের গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়। পরদিন তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।

এদিকে শুক্রবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইট ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার।

বৃহস্পতিবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন। এ সময় ইউএনও নিশাত তামান্না জানান, ইতোমধ্যে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নতুন করে শহীদ মিনার তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ‘অন্যায়ভাবে’ সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলার সাংবাদিকেরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী মাধব দত্ত, চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, সময় টিভির প্রতিনিধি মমতাজ আহমেদ, আরটিভির প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, বাসসের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি শরিফুল্লাহ কায়সার, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁ, মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস এম বিপ্লব হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।

বক্তারা বলেন, সরকারি নির্মাণকাজের অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে কালের কণ্ঠ পত্রিকার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম ছাতা দিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি টিপু তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেলের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ শুনে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে একতরফাভাবে তাঁদের নিজস্ব লোকজনের সাক্ষী নিয়ে সাংবাদিক টিপুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেন। অথচ উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুনতালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ২১ ঘণ্টা আগে

বক্তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক টিপুর অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে একতরফাভাবে সাজা প্রদান করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুকে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী কাজ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় নেমেছেন। ওই নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ডিলার বিএনপি নেতার ৬ মাসের কারাদণ্ড
  • সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • কেন্দ্র সচিব পদে আ’লীগ নেতা, তিন পরীক্ষার পর অব্যাহতি
  • বদরগঞ্জে বিএনপির কর্মী লাভলু হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত
  • তালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ
  • খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির চেষ্টা, কৃষক দল নেতা বহিষ্কার