Samakal:
2025-04-21@23:49:41 GMT

আমি কি ভুলিতে পারি

Published: 21st, February 2025 GMT

আমি কি ভুলিতে পারি

ফেব্রুয়ারি এলে তোমাদের ভেতর নিশ্চয় অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে। তা হচ্ছে বইমেলায় ঘোরার আনন্দ। প্রিয় বই কেনার আনন্দ। ফাল্গুনের আনন্দ। এত্তো এত্তো আনন্দের মাঝে শোক মেশানো একটা গর্বের দিনও আছে আমাদের; যা পৃথিবীর আর কোনো দেশের নেই। সেই দিনটি হচ্ছে একুশে ফেব্রুয়ারি। আজ থেকে অনেক আগে। সেই ১৯৫২ সালে আমাদের বাবা-ভাইয়েরা যখন কথা বলছিলো বাংলায়। তখন কিছু পচা মানুষ তাদের বাংলায় কথা বলতে নিষেধ করলো। বললো তাদের ভাষায় কথা বলতো। আচ্ছা তোমরাই বলো, ঘুম থেকে উঠে রোজ জেগে আম্মু বলে ডাক দাও। এই ডাকটা শুনেই কাজ ফেলে ছুটে আসেন মা। তখন মায়ের গলা জড়িয়ে আদর দিয়ে বাংলায় যেই কথা বলো। যে বায়নাটা ঘুম থেকে উঠেই করো মায়ের কাছে তা তো বাংলাতেই করো নাকি? বাংলায় মায়ের সঙ্গে কথা বলে, বাবার সঙ্গে কথা বলে যেই মজাটা পাও তাকি অন্য ভাষায় পাওয়া যায়? নিশ্চয়ই যায় না। আমাদের বাবা-ভাইয়েরা কেন এই মজাটা পাবে অন্য ভাষায়? তাছাড়া তোমাদের কথাও তো তাদের ভাবনায় ছিলো। তারা সব ভুলে অন্যদের ভাষা মেনে না নিয়ে প্রতিবাদ করলেন। অনেকে ভাষার জন্য বুকটাও পেতে দিলেন। বুক পেতে দিয়ে তারা চলে গেলেন দূর আকাশে। কিন্তু তোমাদের জন্য মধুর ভাষাটা আপন করে দিয়ে গেলেন। তারপর থেকে তো বাংলাটা আমাদের ভাষাই হয়ে গেলো। তাদের সেই ত্যাগের দিনটি ছিলো ২১ ফেব্রুয়ারি। গতকাল ছিলো সেই মহান দিন। এই দিনে বড়দের সঙ্গে তুমিও নিশ্চয়ই শহীদ মিনারে গিয়ে সেই ভাষার জন্য বুক পেতে দেওয়া শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছো। শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে তাদের কথা দিয়ে এসেছো যে, আমরা বাংলার জন্যই লড়ে যাবো। এই ভাষার জন্য, এই দেশের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি আমরা। আসছি বাংলাটাকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে! n

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য আম দ র আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ