মানিকগঞ্জে একদল লোকের বাধায় সাধুর মেলা হলো না
Published: 21st, February 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে স্থানীয় একদল লোকের বাধায় ফকির মওলা দরবার শরিফের বাউলশিল্পী রশিদ সরকারের সাধুর মেলা পণ্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের আগে উপজেলার আজিমপুরে অনুষ্ঠিত এ মেলায় স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকার একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বাধা দিলে মেলা বন্ধ হয়ে যায়।
এ ঘটনায় ১২ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিঙ্গাইর থানার পুলিশ।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দরবারের একাধিক ভক্ত জানান, বাউলসম্রাট রশিদ সরকার জীবিত থাকা অবস্থায় সিঙ্গাইর উপজেলার আজিমপুরে প্রতিবছর সাধুর মেলার আয়োজন করা হতো। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও মেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হওয়ার কথা ছিল। তবে কয়েক দিন ধরে মেলা করতে দেবে না বলে জানাচ্ছিলেন মিঠু (উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মিঠু)। এরপরও আজ শত শত ভক্ত ফকির মওলা দরবার শরিফে আসেন। ভক্তরা আসায় দুপুরের দিকে বাধাদানকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে কয়েকজনকে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ রশিদ সরকারের স্ত্রী শিরিন রশিদ (৬০), তাঁর বড় ছেলে আবু নাঈম মো. বাশারের স্ত্রী শাহানারা আক্তারসহ (৩৭) কয়েকজনকে থানায় নিয়ে যায়।
মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেলার নামে মূলত সেখানে গাঁজা সেবন করা হয়। এটা গাঁজার মেলা। এই মেলা উপলক্ষে সেখানে অন্তত ১০ টন গাঁজা সেবন হয়। পুরো এলাকার লোকজন ভীষণ বিরক্ত। এ ছাড়া ধর্মীয় রীতিনীতিবহির্ভূত কাজও হয় সেখানে। স্থানীয়সহ পুরো সিঙ্গাইরের লোকজন এটি বন্ধের জন্য সেখানে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও সেখানে গিয়েছিলাম।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা
চট্টগ্রামের রাউজানে এক যুবলীগ কর্মীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত। নিহত ওই যুবলীগ কর্মীর নাম মুহাম্মদ হাসান (৩৫)। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
মুহাম্মদ হাসানের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। হাসানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ি জানিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে হাসান যুবলীগের মুহাম্মদ মোবারকের সহযোগী ছিলেন। ২০১৩ সালে মোবারককে একদল সন্ত্রাসী কুপিয়ে হত্যা করে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা-কর্মীর মতো হাসানও আত্মগোপনে ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে হাসান বাড়িতে যান। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে চৌধুরীহাট বাজারের এক পাশে নিয়ে তাঁকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াপাড়া পথেরহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী ঝিনু আকতার প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যার আগে একদল মুখোশধারী লোক দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে হাসানকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান। রাত ১০টার পর খবর পেয়ে তিনি চৌধুরীহাট বাজারে গিয়ে দেখেন, একটি অটোরিকশায় তাঁর স্বামী পড়ে আছেন।
এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন—জানতে চাইলে ঝিনু আকতার বলেন, ‘যে যাবার সে গেছে। নিজেরা নিরাপদে থাকতে চাই। তাই মামলা বা অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’
তবে তিন বছর আগে হাসান রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান বলে দাবি করেন তাঁর মামতো ভাই ফার্নিচার ব্যবসায়ী আবু তাহের।
এ বিষয়ে আজ সকালে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যুবলীগের এক সন্ত্রাসীর সহযোগী ছিলেন হাসান। তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল সন্ত্রাসী। জেলা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। হাসানের নামে মামলা আছে কি না, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।