মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে স্থানীয় একদল লোকের বাধায় ফকির মওলা দরবার শরিফের বাউলশিল্পী রশিদ সরকারের সাধুর মেলা পণ্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের আগে উপজেলার আজিমপুরে অনুষ্ঠিত এ মেলায় স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকার একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বাধা দিলে মেলা বন্ধ হয়ে যায়।

এ ঘটনায় ১২ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিঙ্গাইর থানার পুলিশ।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মেলায় সমস্যাটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। রশিদ সরকারের বড় ছেলে সিঙ্গাইর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার। পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত ১৫ বছর তাঁদের বিতর্কিত কার্যক্রমে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবারটির ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে ক্ষোভ থেকে যেন কোনো ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু মেলা করতে গেলে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আয়োজকদের উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে রশিদ সরকারের পরিবারের সদস্যসহ ১২ জনকে হেফাজতে আনা হয়েছে। তাঁদের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দরবারের একাধিক ভক্ত জানান, বাউলসম্রাট রশিদ সরকার জীবিত থাকা অবস্থায় সিঙ্গাইর উপজেলার আজিমপুরে প্রতিবছর সাধুর মেলার আয়োজন করা হতো। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও মেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হওয়ার কথা ছিল। তবে কয়েক দিন ধরে মেলা করতে দেবে না বলে জানাচ্ছিলেন মিঠু (উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মিঠু)। এরপরও আজ শত শত ভক্ত ফকির মওলা দরবার শরিফে আসেন। ভক্তরা আসায় দুপুরের দিকে বাধাদানকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে কয়েকজনকে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ রশিদ সরকারের স্ত্রী শিরিন রশিদ (৬০), তাঁর বড় ছেলে আবু নাঈম মো. বাশারের স্ত্রী শাহানারা আক্তারসহ (৩৭) কয়েকজনকে থানায় নিয়ে যায়।

মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেলার নামে মূলত সেখানে গাঁজা সেবন করা হয়। এটা গাঁজার মেলা। এই মেলা উপলক্ষে সেখানে অন্তত ১০ টন গাঁজা সেবন হয়। পুরো এলাকার লোকজন ভীষণ বিরক্ত। এ ছাড়া ধর্মীয় রীতিনীতিবহির্ভূত কাজও হয় সেখানে। স্থানীয়সহ পুরো সিঙ্গাইরের লোকজন এটি বন্ধের জন্য সেখানে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও সেখানে গিয়েছিলাম।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

শোভাযাত্রার কাজে যুক্ত কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয় দেখানো হচ্ছে: চারুকলা অনুষদ

চারুকলা অনুষদের বিশিষ্ট অ্যালামনাই শিল্পী-ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

শোভাযাত্রা কার্যক্রমে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও জানায় চারুকলা অনুষদ৷

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ১৪৩২ ইতিমধ্যে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে আগের দিন নস্যাৎ প্রচেষ্টার লক্ষ্য নিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় চারুকলা নির্মিত দুটি মোটিফ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা মেরামত এবং পুনর্নিমাণ করার মাধ্যমে আনন্দ শোভাযাত্রা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ওই একই দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আজ বুধবার ভোররাত আনুমানিক সাড়ে তিনটায় চারুকলা অনুষদের বিশিষ্ট অ্যালামনাই শিল্পী-ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনি অন্য শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে মোটিফ নির্মাণে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছেন। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ১৪৩২ কমিটি এবং চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে আমরা এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি দ্রুত অপরাধী শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি করছি।’

আরও উল্লেখ করা হয়, কয়েক দিন ধরে শোভাযাত্রা কার্যক্রমে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরনের কটূক্তি প্রচার অব্যাহতভাবে চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮
  • চট্টগ্রাম নগরে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে একদল যুবকের দৌড়াদৌড়ি
  • হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর প্রথম বক্তৃতায় ট্রাম্পের সমালোচনা করলেন বাইডেন
  • শোভাযাত্রার কাজে যুক্ত কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয় দেখানো হচ্ছে: চারুকলা অনুষদ