সেলফি তোলার নাম করে পুনম পান্ডেকে যৌন হয়রানি যুবকের
Published: 21st, February 2025 GMT
তিনি নিজেই নানান কাণ্ড ঘটিয়ে সংবাদের শিরোনাম হন। কখনো কখনো বিতর্কও হয়। গত বছর নিজের মৃত্যুর খবর নিজেই রটিয়েছিলেন। ব্যতিক্রম পোশাকের কারণে বেশ কয়েকবার আলোচনায় আসেন পুনম পান্ডে । তবে এবার ঘটল অন্য রকম অঘটন। এবার অন্যের কারণে শিরোনামে তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, এক ভক্ত সেলফি তুলতে এসে যৌন হয়রানি করেছেন এই বলিউড তারকাকে। ঘটনার আংশিক দৃশ্যসংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটা লাল রঙের গাউন পরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছেন পুনম। তিনি যখন পাপারাজ্জিদের জন্য পোজ দিচ্ছিলেন তখন পেছন দিয়ে এক ব্যক্তি এসে বলেন যে তিনি ছবি তুলতে চান। কিন্তু তারপরই দেখা যায় পুনমকে জাপটে ধরেন তিনি। এ পর্যায়ে তাঁকে চুমু খাওয়ারও চেষ্টা করেন। আকস্মিক ঘটনায় চমকে ওঠেন তারকা, সরিয়ে নেন নিজেকে।
ভিডিওতে অবশ্য নানা রকম মন্তব্য আসছে। অনেকের মতে, পুরো ঘটনা বানানো। মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, ‘কী অভিনয় করছেন। দারুণ দারুণ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘পুরোটাই বানানো। সেটা দেখেও লোকজন রে রে করছে। কী অবস্থা!’ কেউ আবার লোকটিকে উদিত নারায়ণের সঙ্গে তুলনা করেছেন চুমু খেতে যাওয়ার জন্য। আরেকজন লিখেছেন, ‘ভীষণই নিম্নমানের চিত্রনাট্য আর অভিনয়। আরও উন্নতি করতে হবে।’
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নিজের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হন পুনম। তাঁর অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে বলা হয়, ক্যানসারে প্রাণ হারিয়েছেন বিটাউনের এই অভিনেত্রী। এরপর তাঁর ম্যানেজারের বরাতে এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডেসহ ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে পুনমের মৃত্যুর খবর আসে। পরে ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও বার্তা দিয়ে পুনম জানিয়েছেন, তিনি বেঁচে আছেন। মূলত জরায়ু ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতেই মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়েছেন।
২০১৩ সালে ‘নাশা’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পুনমের অভিষেক হয়। ২০১১ সালে ভারত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা জিতলে নগ্ন হওয়ার ঘোষণা দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন পুনম পান্ডে। টেন্ডুলকার-ধোনিরা বিশ্বকাপ জিতলে নিজের ওই অবস্থান থেকে সরে আসেন পুনম।
এরপর নিজের কিছু ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে এবং ‘নাশা’ ছবিতে খোলামেলা অভিনয়ের জন্য আলোচনায় আসেন এই অভিনেত্রী। খোলামেলা পোশাকের কারণে বারবার তাঁকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠত। তবে এসব কোনো কিছুকেই পাত্তা দিতেন না তিনি। ২০১৪ সালে গভীর রাতে মুম্বাইয়ের রাস্তায় অশালীন আচরণের অভিযোগে পুনমকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তপ্রদীপের মতো’ জ্বলে আছে বরুণের ফুল
ভোরের আলো ফুটেছে অনেক আগেই। সেই অর্থে মানুষের জেগে ওঠার সরবতা তখনো ছড়িয়ে পড়েনি। চারপাশে সুনসান স্তব্ধতা গা এলিয়ে আছে। ছিটেফোঁটা দু-চারজন করে বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বের হয়ে আসছেন, পথে হাঁটছেন। মনু নদের পাড়টি আরও নীরব, জনমানবহীন শান্ত একটুকরা নির্মল হাওয়ার ভূমি হয়ে আছে। তখন ‘সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ/ সেখানে বারুণী থাকে গঙ্গাসাগরের বুকে, সেখানে বরুণ...।’
জীবনানন্দ দাশের নাটার রঙের মতো রাঙানো সূর্যের জেগে ওঠার এই মুহূর্তে একফালি মনু নদ কি আর গঙ্গাসাগরের মতো কোনো উপমার সঙ্গে সমান হতে পারে, চলতে পারে! তা না-ই হলো, তবু সেখানে গঙ্গাসাগরের বুকের কাছে যেমন বরুণ থাকে, তেমনই এখানেও এই মনু নদের পাড়ে চুপি চুপি, শাখায় শাখায় ফুলের বন্যা নিয়ে জেগে আছে বরুণের গাছ।
বসন্তের সকাল, মৃদু বাতাসে তখনো কিছুটা ঠান্ডার মতো ভাব আছে। সময় উড়ছে সকালের নরম রোদের পালকে। এ রকম একটা সময়ে পথ চলতে চলতে মৌলভীবাজার শহরের ফরেস্ট অফিস সড়কের ভৈরব থলির কাছে পৌঁছেই দেখা হয়ে যায় তার সাথে, তাহাদের সাথে। ‘বাসা তোমার সাতসাগরের ঘূর্ণী হাওয়ার বুকে!/ ফুটছে ভাষা কেউটে ঢেউয়ের ফেনার ফণা ঠুকে!/ প্রায়ণ তোমার প্রবালদ্বীপে, পলার মালা গলে/ বরুণরানি ফিরছে যেথা, মুক্তপ্রদীপ জ্বলে।’ অনেকটা তা–ই, গাছের শাখায় শাখায় সবুজ পাতার ফাঁকে মুক্তপ্রদীপের মতো জ্বলে আছে সাদা, গোলাপি, সবুজের মিশ্রণে অসংখ্য বরুণ ফুল।
ফুলটির পোশাকি নাম বরুণ হলেও আরও অনেক নাম আছে। যেমন: বৈন্যা, শ্বেতপুষ্প, কুমারক, সাধুবৃক্ষ, শ্বেতদ্রুম।বছর ঘুরে বরুণ রানির ফেরাটা এ রকমই মনে হয় রাজকীয়, এ রকমই জাঁকজমকের। গাছজুড়ে ফুটে আছে ফুল। দু-চারটা শালিক, ঘুঘু পাখি উড়ে আসছে, ফুলের ওপর বসছে। এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। ফোটা ফুলের পাপড়িরা বাতাসের আহ্লাদে টুকটুক করে ঝরে পড়ছে গাছের নিচে। পাপড়ির নকশিকাঁথা যেন কেউ বিছিয়ে রেখেছে ঘাসের ওপর। বেশ বড়সড় ঝাঁকড়া মাথার গাছ। ডালগুলোও চারদিকে ডানা মেলে আছে। পাশেই মনু নদ। হয়তো কোনো একদিন এই নদের পানিতে ভেসে এসেছিল এই বরুণগাছের ফল। সেই পাকা ফলটি চরের মতো জেগে থাকা পাড়ের মাটিতে আশ্রয় পেয়ে গাছ হয়ে মাথা তুলেছে। তারপর বসন্তের মাঝামাঝি এলেই ডালে ডালে ফুলের জলসা বসছে।
ওখানেই, বরুণগাছটির কাছে এই সাতসকালে দেখা শহরের সৈয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা সাংস্কৃতিক সংগঠক শৈলেন রায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, গাছটি বেশ অনেক বছর ধরে দেখছেন। তবে গাছে যে এত ফুল ফোটে এবং এই গাছের নাম যে বরুণ, তা আগে সেভাবে খেয়াল করেননি। গাছটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর বা এর আশপাশে হতে পারে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গাছটি এখানে কেউ রোপণ করেননি, গাছটি এমনিতেই গজিয়ে উঠেছে। গাছটি কারও হাতে কাটা পড়েনি বলে এখনো ফুলে ফুলে সাজতে পারছে।
বরুণ গাছের সবচেয়ে পছন্দের আবাসই হচ্ছে জলাভূমি এলাকা