আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দেখা গেছে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। ফাল্গুনের উষ্ণ রোদ আর সন্ধ্যার শীতল হাওয়ার স্পর্শ নিতে গতকাল শুক্রবার যেন তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না সৈকতে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ দিন অন্তত তিন লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছে।

পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় ১৫ দিন আগেই কক্সবাজারের সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল-রিসোর্টের কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে যায়। এসব হোটেল-রিসোর্টে দেড় লাখ মানুষের রাতযাপনের সুযোগ রয়েছে। সেই হিসাবে অর্ধেক মানুষের থাকার স্থান সংকুলান হওয়ার কথা নয়। এতে যারা বুকিং দিয়ে যাননি তারা দুর্ভোগে পড়তে পারেন।

হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, এবার একুশে ফেব্রুয়ারির ছুটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে পড়ায় পর্যটক কম হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে কক্সবাজারে হোটেল-মোটেলের ধারণক্ষমতার বেশি লোকসমাগম হয়েছে। যারা কক্ষ বুকিং দিয়ে আসেননি তারা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন।

এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সদস্য। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে এবং সমুদ্রে সাঁতার কাটার সময় বিপদাপন্ন পর্যটকদের রক্ষায় প্রস্তুত রয়েছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

আসাদুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকত ও আশপাশে পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিমসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সৈকতে বিচ বাইক নিয়েও রয়েছে টহল। এ ছাড়া রয়েছে বেসরকারি লাইফ গার্ড সংস্থার প্রশিক্ষিত কর্মী। কন্ট্রোল রুম, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো সৈকত পুলিশের নজরদারির আওতায় রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পর্যটকদের সেবা দিতে কক্সবাজারে প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকে। সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্যকেন্দ্র। পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে রয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ২১ ফ ব র য় র

এছাড়াও পড়ুন:

রমজানের আগে পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা

আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। বিগত বছরগুলোতে রমজান মাসে পর্যটকশূন্য ছিল সমুদ্রকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আগামী মাসের শুরু থেকেই পর্যটক আসা কমে যাবে। তার আগে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম এই পর্যটন কেন্দ্র।

সরকারি দুই দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করেই পর্যটকদের আগমন ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন।  

আরো পড়ুন:

খুলছে দেবতাখুম ভ্রমণের দুয়ার

কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল, উৎসবের আমেজ

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতেছেন। অনেকে আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ঘোড়াসহ বিভিন্ন বাহনে চরে সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গেছে অনেককে। একসঙ্গে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বনভোজন কিংবা খেলাধুলায় মেতে থাকতে দেখা যায়। 

এদিকে, কুয়াকাটার হোটেল মোটেলের শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে। বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। মৌসুমের শেষ সময়ে পর্যটকের এমন ভিড়ে উচ্ছ্বসিত ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।

ঢাকার গাজীপুর থেকে আসা মোশারেফ-পারভিন দম্পিতি জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে  রমজান মাস শুরু হবে। তাই আগে ভাগেই আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় বেড়াতে এসেছি। আজকে সৈকতে অনেক মানুষ। এতো মানুষ একসঙ্গে আর দেখিনি। কুয়াকাটার পরিবেশ সমুদ্রের ছোট ছোট ঢেউ আমাদের ভালোই লেগেছে। 

উত্তরা থেকে আসা পর্যটক সোহান হোসেন বলেন, “আমরা এলাকার বন্ধুরা মিলে আজ (শুক্রবার) সকালে কুয়াকাটায় এসে পৌঁছেছি। গতকাল রওনা দেওয়ার আগে কুয়াকাটার কয়েকটি আবাসিক হোটেল যোগাযোগ করেছিলাম, কিন্তু কোথাও রুম পাইনি। কুয়াকাটায় পৌঁছে সোজা সৈকতে নেমে পড়েছি। বন্ধুরা মিলে সাঁতার কটেছি, অনেক মজা করেছি। সময় দারুন কাটছে। সন্ধ্যার মধ্যে যদি কোনো হোটেলে রুম খালি পাই  তাহলে আজও থাকতে চাই। না পেলে রাতের গাড়িতে ঢাকায় চলে যাব।”

ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা (টোয়াক) এর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রাজু বলেন, “কুয়াকাটায় আজ প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। সব হোটেল মোটেলের রুম বুকিং রয়েছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলোতে বিক্রি বেড়েছে। আমাদের সংগঠনের সদস্যরা পর্যটকদের  সেবা দিয়ে যাচ্ছে।” 

কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ রিজিয়নের ইন্সপেক্টর মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। বিভিন্ন স্পটে আমাদের সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আমাদের টহল টিম মাঠে কাজ করছে। থানা পুলিশ এবং নৌ-পুলিশের সদস্যরাও মাঠে তৎপর রয়েছে।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রমজানের আগে পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা
  • কক্সবাজারের পর্যটনে নতুন আকর্ষণ: ‘কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন’