অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই। এই গল্প যারা নতুন নতুন সংস্কার শিখেছে, তাদের মধ্যে আর আপনাদের মধ্যে রেখে দিন। ৩১ দফা সংস্কার আকাশ থেকে পড়েনি। এটি প্রণয়নের পেছনে অনেক বিতর্ক, আলোচনা ও প্রস্তাবনা এসেছে। সবার ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই আমরা ৩১ দফা প্রণয়ন করেছি। বাংলাদেশের মানুষের আগামী দিনের পরিবর্তনের বার্তা এই ৩১ দফার মাধ্যমেই দেওয়া হয়েছে। এই বার্তা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছি এবং সংস্কারের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

শুক্রবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পো‌রেশনের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, কোনো ব্যক্তির ভিশন বা কোনো গোষ্ঠীর মিশনের ভিত্তিতে সংস্কার হবে না। বাংলাদেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংস্কার হবে। ৩১ দফার জন্য আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ যখন এসব দফার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ভোট দেবে, তখন আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারব।

বিএনপির ৩১ দফা ও অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, এখন যারা সংস্কারের কথা বলেন, তাদের কাছে কোনো ম্যান্ডেট আছে? তাদের পক্ষে কার সমর্থন আছে? তাদেরকে কে বলেছে? হ্যাঁ, প্রণয়ন করুন, কমিশন হয়েছে, ভালো কথা। এগুলো সব আমরা আগামী সংসদে প্রস্তাব আকারে উপস্থাপন করবো। আপনারা কষ্ট করে করেছেন, অনেক ধন্যবাদ। এগুলো আমরা আগামী সংসদে পেশ করব। ৩১ দফা সংসদে আলোচনা হবে। আমরা বলেছি, হয়ে যাবে, তা নয়, সংসদে আলোচনা হবে। অন্য কোনো দলের যদি কোনো প্রস্তাব থাকে, সেটাও সংসদে উপস্থাপন করুক। কারণ, আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের চিন্তার প্রতিফলন রাষ্ট্র পরিচালনায় ও দৈনন্দিন জীবনে ঘটাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যে নতুন পথ তারেক রহমান দেখিয়েছেন, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের প্রতি সহনশীলতা ও সহানুভূতি দেখানো। অন্যমত হলেও সেটি গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু সংস্কার করলেই হবে না, রাজনৈতিক সংস্কারের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। আমার বিরুদ্ধে কেউ বললেও তাকে সম্মান জানাতে হবে, তার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। দ্বিমত পোষণ করবো, কিন্তু সম্মান দিতে হবে। আপনারা দেখেছেন, তারেক রহমানকে একটি পত্রিকায় কার্টুনের মাধ্যমে সমালোচনা করা হয়েছিল। পরে তিনি বলেছেন, এটার জন্যই তো আমরা যুদ্ধ করেছি, এ স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য। এ স্বাধীনতা পাওয়ার জন্যই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি।

আমীর খসরু বলেন, বইমেলা জিনিসটা আমি ভুলে গিয়েছি। কারণ, বিগত দিনে বইমেলা বলতে যা বোঝানো হতো, তা হলো, একটি দলের প্রতিষ্ঠাতা, তার মেয়ে, তার পরিবার, তাদের চিন্তা ভাবনা ও দর্শন প্রতিফলিত হতো সেই বইমেলায়। এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও তাদের পরিবারের দর্শন ও চিন্তা ভাবনা কারিকুলামের মাধ্যমে পড়তে, শিখতে বাধ্য করা হয়েছে। কোনো বিশেষ দর্শন, চিন্তা বা পরিবার যেন বাংলাদেশের মনোজগতে এককভাবে প্রবেশ করতে না পারে, সেটা আমরা আগামী দিনে নিশ্চিত করবো। কাজ করুক, তাহলে বিএনপি লাভবান হবে। শেখ হাসিনার পথে হাঁটলে চলবে না।

নতুন নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতীয়তাবাদী চিন্তার অনুসারীদের আগামী দিনে এই স্বাধীনতার চেতনাতেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা সংঘর্ষের রাজনীতি চাই না, প্রতিশোধের রাজনীতি চাই না। হ্যাঁ, বিচার অবশ্যই করতে হবে, যারা খুন করেছে, গুম করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কাউকে বিচারের বাইরে রাখা যাবে না। একই সঙ্গে দেশ গঠনের প্রকল্পে বিএনপির যে চিন্তা রয়েছে, সেটিই মাথায় রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

চসিক মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও বইমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রকাশক শাহাবুদ্দিন হাসান বাবুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিছ মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র র পর ব র র জন র জন য র জন ত বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনীতিতে উত্তাপ: নতুন দল, সুইং ভোটার ও মাইনাস ফর্মুলা

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরবর্তিত রাজনীতি জমে উঠেছে। নানা বাগ্‌বিতণ্ডা, পক্ষ–বিপক্ষে তর্ক–বিতর্ক, আলোচনা, সমালোচনা সবই চলছে। ক্ষণে ক্ষণে দেখা যাচ্ছে উত্তপ্ত পরিস্থিতিও। ‘সংস্কার’ ‘নির্বাচন’ ‘নিষিদ্ধ’ ‘ফেসবুক পোস্ট’ ‘ভূরাজনীতি’ ‘বিভক্তি’ ‘কারও এজেন্ডা’ ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পরিণতি’ ‘বৈঠক’ ‘বিবৃতি’ ‘পাল্টা বিবৃতি’ নানা পক্ষের নানা রকম কথায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের পরিস্থিতি। অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে’ সব পক্ষ নিজেদের অবস্থান থেকে নানা ভাষায় হুংকার দিচ্ছে। যদিও পাশাপাশি চলছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক।

ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের প্রচণ্ডতায় ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন, পলায়নে ও পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার চমৎকার সুযোগ এসেছিল আমাদের সামনে। সেই প্রত্যয়ে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে মতামত দিচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এমন এক প্রসঙ্গে কিছুদিন আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘নেতারা আমার সঙ্গে বৈঠকে আলাপ–আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে একমত পোষণ করেন, বাইরে গিয়েই সাংবাদিকদের সামনে বলেন ভিন্নকথা।’ এমন দ্বিচারিতা যেন বাংলাদেশের রাজনীতিকদের নিত্যদিনের চর্চিত বিষয়।

যদিও জুলাই-আগস্ট ২০২৪–এর আন্দোলনে রাজপথে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাজপথে নেমে আসা দেশের সব শ্রেণি–পেশার মানষের মধ্যে গড়ে ওঠা ঐক্য বৃহৎ শক্তিতে রূপ নেবে, একটা শক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি এখন বদলে যাচ্ছে দ্রুত। বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত চরিত্র এবং সেই চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে। একেক পক্ষের চাওয়া-পাওয়া, দাবি, আকাঙ্ক্ষা একেক রকম। এঁদের কেউ বুঝেশুনে অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির আলোকে নিজস্ব রাজনৈতিক কৌশল অনুযায়ী কথা বলছেন; কেউ আবার ভাবাবেগে আক্রান্ত কথাবার্তার আবরণে ইস্যু তুলে পরিস্থিতি ও জনমত নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু তারুণ্যনির্ভর নেতাদের চিন্তাচেতনায় যথেষ্ট রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা না থাকায় তাঁদের ইদানীংকার কর্মকাণ্ড তাঁদেরকে যে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষগুলোর সামনে ভুল বার্তাসহ দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে, তা উপলব্ধি করার সক্ষমতাও হয়তো এঁদের তৈরি হয়নি এখনো। দিন দিন এটা স্পষ্ট হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর আন্দোলনের তেজ এক কথা নয়।

আবার চর্চিত নিজস্ব রাজনৈতিক আদর্শ কর্মী–সমর্থকদের মনোবলকে পুঁজি করে কোনো কোনো দল মধ্যপন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে কুশলী খেলোয়াড় হিসেবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

এর বাইরে নানা মোর্চা ধর্মভিত্তিক নানা প্ল্যাটফর্মের ছায়াতলে থেকে স্বনামে পরিচিত অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চলমান অস্থির এই সময়ে আগামীর রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন, পাশাপশি সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে সবাইকে সংযত থাকতে বলছেন।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুবাদে পরিচিত এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই নেতা সেনানিবাসে গিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের পর পরবর্তী সময়ে তাঁদের ফেসবুক পোস্ট টক অব দ্য কান্ট্রি হয়ে যায়। তাঁদের বক্তব্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত তো হয়ই, নিজেরাও দলের ভেতরে অস্বস্তি তৈরি করেন। যাত্রার শুরুতেই দুই নেতার এমন বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেছেন। তাঁদের অনেক ‘খেয়ালি কাজ’ রাজনৈতিক মহলে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছেন তাঁদের দলের নেতা–কর্মীরাই। রাজনীতির মাঠে যাঁরা দীর্ঘদিন আছেন, তাঁদের সঙ্গে নবীন নেতৃত্বের চিন্তাচেতনায় বক্তব্য অভিব্যক্তিতে পার্থক্য হবে, এটা জানা কথা। তবে এটা দেশের জনগণ, তথা আগামী দিনে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ভোটারদের জন্য একটা বার্তা।

ভুলে গেলে চলবে না যে নানা রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে বিভক্ত রাজনৈতিক বিশ্বাসের বাইরে ভোটারদের একটা বড় অংশ রয়েছে, যারা ‘সুইং ভোটার’ নামে পরিচিত। এঁরাই ’৯১–এর জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা শহরে শেখ হাসিনার মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর নৌকাও ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। সেবার আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ঢাকায় জিততে পারেননি।

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু সেবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শেখ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হারতে হয়েছিল তেজগাঁও আসনে মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কোতোয়ালি সূত্রাপুরে সাদেক হোসেন খোকার কাছে। সেই ভয়ে শেখ হাসিনা নিজের এলাকার বাইরে প্রার্থী হতে সাহস দেখিয়েছেন খুব কমই। আবার পাঁচ বছরের মাথায় ‘সুইং ভোটার’রা ’৯৬–এর নির্বাচনে কোতোয়ালি সূত্রাপুরে সাদেক হোসেন খোকা ছাড়া আর কোনো বিএনপি প্রার্থীকে ঢাকার কোনোর আসনে জিতে আসতে দেননি। সবাই চড়ে বসেছিল নৌকায়।

মনে রাখতে হবে, রাজপথে আন্দোলনের সময়কার আবেগ আর রাজনীতির বাস্তবতা আলাদা জিনিস। রাজনীতির বড় খেলোয়াড়রা সবাই এখন সম্ভাব্য লাভ–ক্ষতির হিসাব কষায় ব্যস্ত। ওদিকে নানা ঘাত–প্রতিঘাতে পোড় খাওয়া দেশের জনগণও এবার প্রস্তুত। ভোট দেবেন বুঝেশুনে। আগামী দিনের সংসদ সদস্য হিসেবে আইন প্রণয়ন ও দেশ পরিচালনার ভার কাকে দেবেন, সেটাও এবার নির্ধারণ হবে চিন্তার নিরিখে।

একটি বড় দল অনতিবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বলেছে, রাজনৈতিক সংস্কার নির্বাচনের পর সংসদে বসেই তারা করবে। ‘অনির্বাচিত’ সরকারের রাষ্ট্রীয় সংস্কারের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। যদিও ‘যে যায় লঙ্কায় সে–ই হয় রাবণ’ এমন আশঙ্কা নানা কারণেই এক্কেবারে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না দেশের জনগণের পক্ষে।

ওদিকে দেশের একটা বড় রাজনৈতিক দলের আশঙ্কা, রাজনীতি থেকে তাদের মাইনাস করা হতে পারে। বলতেই হচ্ছে, বিএনপিকে কোনো কৌশলে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা কোনোভাবেই দেশের রাজনীতির জন্য ভালো হবে না। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল বিএনপিকে মাইনাস করতে, তাদের কোণঠাসা করে রাখতে; কিন্তু আমরা দেখলাম কী? আওয়ামী লীগকেই পালিয়ে যেতে হলো দেশ থেকে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। শান্তিতে নোবেলজয়ী এই মানুষ ও তাঁর উপদেষ্টামণ্ডলী উপলব্ধি করতে পারছেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক প্রস্থানের জন্যও একটা গ্রহণযোগ্য অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিকল্প নেই। সেই অনুধাবন থেকেই তাঁরা দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছেন গুরুত্বসহকারে। না হলে যে দীর্ঘ ‘স্বৈরাচারী’ শাসন অবসানের পর ভোটবাক্সে মতামত জানানোর অপেক্ষায় থাকা জনগণের প্রত্যাশা আবারও মাঠে মারা যাবে।

এ কথা মনে রাখতে হবে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবপ্রসূত পরিস্থিতিতে দেশের ছাত্র- তরুণ-জনতার পছন্দের সরকার। যে কারণে অনেকে এমনটাও বিশ্বাস করেন যে রাজপথের আন্দোলন–সংগ্রামে জীবন দেওয়া, আহত হওয়া এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে অবিশ্বাস্য রকম কম সময়ের মধ্যে স্বৈরাচারী সরকারকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের প্ল্যাটফর্ম নানা কারণে সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে।

এখন দেখার বিষয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক ও তাদের প্রস্তাবের আলোকে দেশের নিপীড়িত জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার জন্য চূড়ান্তভাবে কী রূপরেখা তৈরি হয়। স্বাধীনতার ৫৫ বছরের মাথায় উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশের সারিতে উত্তরণের প্রাক্কালে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মুহাম্মদ লুৎফুল হায়দার ব্যাংকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনীতিতে উত্তাপ: নতুন দল, সুইং ভোটার ও মাইনাস ফর্মুলা
  • ঈদে নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করছে অন্তর্বর্তী সরকার, বললেন রিজভী
  • ইউক্রেনে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রস্তাব পুতিনের
  • নির্বাচন সুষ্ঠু করেনি বলেই তো আন্দোলন হয়েছে: রিজভী
  • বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার মালদ্বীপের
  • রাজনীতির ‘নতুন বন্দোবস্ত’ দেখতে কেমন?
  • সিদ্ধিরগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মদলের দোয়া ও ইফতার মাহফিল
  • সংস্কার ও নির্বাচন দুটিই যখন প্রয়োজন
  • চীনকে ভালো বন্ধু হিসেবে পেতে চাই: প্রেস সচিব