সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে পেটানোর প্রতিবাদে সিলেটে পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ হয়েছে। আজ শুক্রবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার এসব কর্মসূচি থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় নগরের কাজলশাহ এলাকা থেকে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এমসি কলেজে মিজানুর রহমানকে পেটানোর ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত এ মিছিল নগরের চৌহাট্টা এলাকায় এসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। কর্মসূচিতে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক হোসেন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মিছিল–পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রদল নেতা দেলোয়ার বলেন, ‘এমসি কলেজে এক মেধাবী ছাত্রের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। মব জাস্টিট হয়েছে। এই কালচার থেকে সরে আসুন। ছাত্রলীগ অতীতে কুকর্ম করেছে, এখন কোনো ছাত্রসংগঠন যেন ক্যাম্পাসকে আর কলুষিত না করে। গুপ্ত রাজনীতিকে মানুষ পছন্দ করে না। ছাত্রদল এসব প্রতিহত করবে। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সব সময় ছাত্রদল বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। এমসি কলেজের শিক্ষার্থী পেটানোর ঘটনায় যে বা যারা সম্পৃক্ত, সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’

গতকাল বিকেলে মিজানুরের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে নগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট মহানগর শাখা। কর্মসূচিতে সংগঠনের সিলেট মহানগরের সভাপতি হুসাইন আহমদ, পূর্ব জেলা সভাপতি মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান, পশ্চিম জেলা সভাপতি শেখ রেদওয়ান হোসেন, সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বেলাল আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে আজ শুক্রবার বাদ জুমা নগরের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে ছাত্রশিবির একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এটি নগরের চৌহাট্টা এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এমসি কলেজে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ছাত্রশিবিরের ওপর অন্যায়ভাবে দায় চাপানো, কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্রের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ছাত্রশিবিরের মিছিলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শাহীন আহমদ। এ সময় সিলেট মহানগরের সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে মহানগর ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মিছিল–পরবর্তী সমাবেশে শাহীন আহমদ বলেন, ‘এমসি কলেজের দুই পক্ষের হতাহতের ঘটনার দায় শুরু থেকেই ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। ছাত্রদল নতুন বাংলাদেশে আবারও ট্যাগিংয়ের রাজনীতি সক্রিয় করে নির্যাতন ও সন্ত্রাস কায়েম করতে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশে আর ত্রাসের রাজত্ব চলবে না উল্লেখ করে শাহীন আহমদ আরও বলেন, ট্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন-নিপীড়ন চলবে না। আধিপত্যের নামে নব্য ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেওয়া হবে না।

উল্লেখ্য, বুধবার রাত ১২টার দিকে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থী মো.

মিজানুর রহমানকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তিনি আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার এমসি কলেজ শাখার সহতথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক। মিজানুর রহমানের দাবি, তাঁকে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা রড দিয়ে মারধর করেছেন।

তবে কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাঈল খান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নন। ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে তৃতীয় একটি পক্ষ কলকাঠি নাড়াচ্ছে। মূলত কলেজ ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান নামের ওই শিক্ষার্থী ও একই কলেজের জাকিরুল ইসলাম নামের অন্য একজন শিক্ষার্থী নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছেন। এতে দুজনই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন উপস থ ত ছ ল ন কল জ ছ ত র র র ওপর ছ ত রদল ন আহমদ কল জ র র ঘটন নগর র ইসল ম স গঠন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রলীগ নেতা ‘ছিনতাই’, গ্রেপ্তার ৪

বড়লেখায় রাজনৈতিক মামলার আসামি এক ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কাজে তাঁর স্বজন ও স্থানীয় লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার কলাজুরা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন– উপজেলা কলাজুরা গ্রামের তাজুল ইসলাম, জামিল আহমদ, গৌরধন সিংহ ও মুরাদ আহমদ। স্থানীয়দের অভিযোগ, মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে পুলিশ নিরীহ তিন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতেই বড়লেখা থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

থানা পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কলাজুরা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজির উদ্দিনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে।

শনিবার রাতে বড়লেখা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ কলাজুরা বাজারে অভিযান চালিয়ে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে। পরে গাড়িতে তোলার সময় স্বজন ও স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাঁকে ছিনিয়ে নেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা মাসুম পালিয়ে যান। পরে বড়লেখা থানার ওসি আবুল কাশেম সরকারসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার বাদী বড়লেখা থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার রোববার দুপুরে জানান, ছাত্রলীগ নেতা মাসুমকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় এবং আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

বড়লেখা থানার ওসি আবুল কাশেম সরকার জানান, রোববার বিকেলে গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখার বিষয়টি মানব সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত
  • মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আর নেই
  • মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আহমদ বাদাওয়ি মারা গেছেন
  • আওয়ামী রাজনীতির মৃত্যু ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহ উদ্দিন
  • জাতি এবার হিন্দুত্ববাদ প্রভাবমুক্ত বাঙলা নববর্ষ উদযাপন করল: ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ
  • নারায়ণগঞ্জে খেলাফত মজলিস ফিলিস্তিন-বাংলাদেশ সংহতি সমাবেশ
  • বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে বর্ষবরণ
  • নববর্ষের ঐতিহ্যকে একটি গোষ্ঠী কুক্ষিগত করে রেখেছিল: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
  • অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলাম আর নেই
  • পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রলীগ নেতা ‘ছিনতাই’, গ্রেপ্তার ৪