২০১৩ সালে দেওয়া হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি মেনে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুফতি এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী। তিনি বলেছেন, ‘সরকারকে বলছি, হেফাজতের ১৩ দফা মেনে নিতে হবে। নতুবা আরেকটা বিপ্লব হবে এবং সেটা হবে সশস্ত্র বিপ্লব।’

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে এক সমাবেশে এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী এ কথা বলেন। এর আগে তিনি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটেও বক্তব্য দেন।

এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘যাঁরা ইসলামি রাজনীতির ব্যানারে আন্দোলন করেন, আপনাদের বাংলাদেশের মানুষ চিনেছে শাপলা চত্বর থেকে। অসংখ্য আলেমের রক্তের ওপর পা দিয়ে আপনারা নেতৃত্ব পেয়েছেন। অতএব আপনারা যদি বর্তমান সরকারের সুযোগ-সুবিধা নেন, আপনাদের বয়কট করা হবে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, জাতীয়তাবাদী—সব দল তাদের বয়ান দিয়েছে, আপনাদের বয়ান কোথায়।’

ইসলামি দলগুলোর উদ্দেশে এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘আমরা শুনতে চাই, ক্ষমতায় গেলে হেফাজতের ১৩ দফার অন্তত ৩টি দফা আপনারা পূরণ করবেন, তার ওয়াদা দিতে হবে। প্রথমে কুখ্যাত কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। নাস্তিকদের শায়েস্তা করতে ব্লাসফেমি আইন করতে হবে। ভারতের তাঁবেদারি চলবে না, যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদারি করা যাবে না।’

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে ‘তাওহিদি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভুলবশত বিতাড়িত ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মার্কিন সিনেটর

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত এল সালভাদর বংশোদ্ভূত কিলমার আবরেগো গার্সিয়ার সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে স্বীকার করেছেন, কিলমারকে ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড থেকে বিতাড়িত করে এল সালভাদরের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কিলমারের সঙ্গে সাক্ষাতের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন ম্যারিল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন।

মার্কিন এক ফেডারেল বিচারকের আদেশ সত্ত্বেও কিলমারকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এই সাক্ষাতের পর কিলমারকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে। তিনি বলেছেন, কিলমার দেশটির কারা হেফাজতেই থাকবেন।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, কিলমার ট্রান্সন্যাশনাল সালভাদোরিয়ান গ্যাং এমএস-১৩-এর সদস্য।

এমএস-১৩ যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন। কিলমারের আইনজীবী হোয়াইট হাউসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনাটি এমন একসময় ঘটল, যখন অভিবাসন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও দেশটির বিচার বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

গত বুধবার অন্য একটি মামলায় এক মার্কিন বিচারক বলেছেন, বিতাড়ন ফ্লাইটের জেরে প্রশাসনকে আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত করা যেতে পারে।

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘আমি বলেছি, আমার এই সফরের মূল লক্ষ্য ছিল কিলমারের সঙ্গে দেখা করা। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে আমার সেই সুযোগ হয়েছিল। আমি তাঁর স্ত্রী জেনিফারকে ফোন করে তাঁর (কিলমার) ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। আমি দেশে ফিরে আসার পর পূর্ণ হালনাগাদ তথ্য জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’

এল সালভাদরের সেন্টার ফর দ্য কনফাইনমেন্ট অব টেররিজমে (সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগার) বন্দী আছেন কিলমার।

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন জানান, এদিন কারাগারটিতে কিলমারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় সশস্ত্র রক্ষীরা তাঁকে থামিয়ে দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনকারাগারে রাখার জন্য ভেনেজুয়েলার ২৩৮ নাগরিককে এল সালভাদরে পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র১৬ মার্চ ২০২৫

সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন কয়েক দিন ধরে এল সালভাদরে অবস্থান করছেন। তিনি কিলমারের মুক্তির জন্য কাজ করছেন। তাঁর অঙ্গরাজ্যেই বসবাস করে আসছিলেন কিলমার।

এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট এক্সে (সাবেক টুইটার) সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেনের সঙ্গে কিলমারের সাক্ষাতের ছবি রিপোস্ট করেন। এই রিপোস্টে তিনি কিলমারের সুস্থতা নিয়ে উদ্বেগকে উপহাস করেছেন বলে মনে হয়।

আরও পড়ুনভুলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত ব্যক্তিকে ফেরত দেবে না এল সালভাদর: প্রেসিডেন্ট নায়েব১৫ এপ্রিল ২০২৫

বিবিসির খবরে বলা হয়, গত ১২ মার্চ মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ আইসিই মেরিল্যান্ডে চলন্ত গাড়ি থেকে কিলমারকে গ্রেপ্তার করে। কোনো ধরনের নোটিশ, আইনিপ্রক্রিয়া বা শুনানি ছাড়াই তিন দিনের মাথায় গত ১৫ মার্চ তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করে এল সালভাদরের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বিবিসির খবরে আরও বলা হয়, কিশোর বয়সে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কিলমারের বয়স এখন ২৯ বছর। ২০১৯ সালে আরও তিন ব্যক্তির সঙ্গে মেরিল্যান্ডে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় একজন অভিবাসন বিচারক তাঁকে বিতাড়ন থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার দিয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে বিচারক বলেছিলেন, কিলমারকে দেশে ফেরত পাঠানো হলে স্থানীয় সন্ত্রাসী দল তাঁর ক্ষতি করতে পারে।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনি বাবার ছেলে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্পের নয়া বন্ধু কে এই নায়েব বুকেলে১৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ