ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘ইসলাম বিজয়ী হওয়া এখন এ দেশের গণমানুষের জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। তবে ইসলামের গণজোয়ার ঠেকাতে একটা স্বার্থান্বেষী মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি, রাষ্ট্রে ইসলাম বিজয়ী হলে সর্বস্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সবাই যার যার অধিকার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারবেন। সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’

আজ শুক্রবার সকালে চরমোনাই দরবার শরিফের তিন দিনব্যাপী মাহফিলের শেষ দিনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চরমোনাই পীর এ কথাগুলো বলেন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, দেশের মানুষ স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর থেকে ইসলামের দিকে ধাবিত হচ্ছে। স্বাধীনতা লাভের পর ৫৪ বছরে দেশের মানুষ সব রাজনৈতিক দলের শাসন দেখেছে। কিন্তু কোনো শাসনব্যবস্থা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। হানাহানি, লুটপাট, দুর্নীতি, জুলুম বন্ধ করতে পারেনি। তাই দেশের মানুষ বুঝে গেছে, ইসলামি দলগুলোর শাসন ছাড়া এটা সম্ভব নয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির আরও বলেন, ‘বস্তুবাদী রাজনৈতিক সংগঠনগুলো ছাত্ররাজনীতির নামে সন্ত্রাসী তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। এসব ছাত্রসংগঠনের প্রতি এখন দেশের শান্তিপ্রিয় ছাত্র-জনতার আস্থা নেই। বিপরীতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নিরলসভাবে আদর্শিক জনশক্তি গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের স্লোগান হলো “সাহাবাদের অনুসরণ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন”। তাই সাহাবাদের চরিত্রে মানবজীবন গঠনের লক্ষ্যে আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। যেভাবে স্বৈরাচার পতনের জন্য কাজ করা হয়েছে, সেভাবেই দেশ গঠনের জন্য ছাত্রসমাজকে প্রস্তুতি নিতে হবে, কাজ করে যেতে হবে।’

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুরের সভাপতিত্বে গণজমায়েতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমদ। তিনি বলেন, অন্যান্য সংগঠনে নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতা নির্ধারিত হয় সন্ত্রাসী কার্যক্রম, কেন্দ্র দখল, চাঁদাবাজি ও মাদকের সাম্রাজ্য গঠনের ওপর। কিন্তু ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে জ্ঞান ও সৎকর্ম যাচাই করে থাকে। তারা আদর্শিক নৈতিক শিক্ষা ও সমাজসেবা এবং দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে। দেশের মানুষের যেকোনো দুর্যোগে ত্রাতা হয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে। অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করছে।

গণজমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার সাকি, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক লোকমান হোসাইন জাফরী, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম।

অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের মধ্যে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাদেত পার্টির সামেত সামি তেমেল, ইন্দোনেশিয়ার হেড অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অব ইসলামিক উম্মাহ ইউনিয়ন আদেহ নুয়ানসা ইউবিসোনু ও মিসরের আল–আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহমাদ সিদকী উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল শনিবার সকাল আটটায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তিন দিনের মাহফিল শেষ হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চরম ন ই ক জ কর গঠন র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবিতে গণজমায়েত

চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবিতে গণজমায়েত ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আজ বুধবার বেলা ১১টার পর ‘পঞ্চগড় জেলাবাসী’র ব্যানারে জেলা জজ আদালত চত্বরের সামনে এবং পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ জড়ো হন। পরে একটি মিছিল বের হয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে যায়। সেখানে মহাসড়কে গণজমায়েত ও মানববন্ধন হয়।

ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচির কারণে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে।

সমাবেশে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির ইকবাল হোসাইন, সাবেক পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, আইনজীবী মাহমুদ আল মামুন, বাপার আজহারুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, ‘চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে একটি এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা মনে করি, পঞ্চগড়ই এ হাসপাতাল স্থাপনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে হলে ভুটান, নেপাল ও চীনের ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসবেন। চিকিৎসাসেবা নিতে আসবেন। পঞ্চগড়ের মানুষও বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন।’

বক্তারা অভিযোগ করেন, পঞ্চগড় এখনো চিকিৎসাসেবার দিক থেকে অবহেলিত। পাশের জেলা নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুরে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থাকলেও পঞ্চগড়ে নেই। এখানকার হাসপাতালেও পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও আধুনিক সুবিধা নেই। রোগীদের রংপুর বা দিনাজপুরে পাঠাতে হয়, অনেক সময় পথেই মারা যান তাঁরা।

বক্তারা বলেন, জমির প্রয়োজন হলে এখনই তাঁরা জমি দিতে প্রস্তুত। তবু পঞ্চগড়ের অবহেলিত মানুষের কথা বিবেচনা করে এই জেলায় হাসপাতালটি করা হোক। পঞ্চগড়ে শুধু ১২ একর জমি নয়, শত শত একর নির্ভেজাল জমি আছে। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল করার জন্য সরকার চাইলেই তাঁরা দিতে প্রস্তুত। তাঁরা চান, হাসপাতালটি পঞ্চগড়েই হোক। না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন।

সমাবেশে আগামী শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর একই দাবিতে আবারও গণজমায়েতের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে লাগাতার কর্মসূচি চলবে বলেও জানানো হয়। এর আগে গত সোমবার চৌরঙ্গী মোড়ে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন জেলার লোকজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবিতে গণজমায়েত