দাউদকান্দিতে উত্ত্যক্ত থেকে ছাত্রীদের রক্ষা করায় বখাটের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত
Published: 21st, February 2025 GMT
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় বখাটের উত্ত্যক্তের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করায় বখাটের হাতে শিক্ষক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার গৌরীপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
হেনস্তার শিকার ওই শিক্ষকের নাম আবদুর রহমান ঢালী। তিনি উপজেলার গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি প্রথম আলোর দাউদকান্দি উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত বখাটের নাম মো.
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রনি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করছেন। উপজেলার গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আজ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠান হয়। বিদ্যালয় এলাকায় বখাটে রনি উপস্থিত হয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সীমা রানী দাস ও আবদুর রহমান ঢালী উত্ত্যক্ত থেকে ছাত্রীদের রক্ষার চেষ্টা করেন। দুই শিক্ষক উত্ত্যক্তকারীকে কিছু না বলে অষ্টম শ্রেণির ওই দুই শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তুলে দেন।
আবদুর রহমান ঢালী বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপদে বাড়ি পৌঁছায়। অমর একুশের অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষকেরা চলে যান। ওই দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে না পেরে রনি তাঁর সহযোগীদের নিয়ে গৌরীপুর বাজারে শিক্ষার্থীর মার ওপর আক্রমণ করেন। এ সময় বাজারের লোকজন জড়ো হলে রনি দৌড়ে পালিয়ে যান।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রনি এ এলাকায় ভাড়া থেকে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁর ভয়ে মেয়ের স্কুলে যেতে ভয় পান। রনির কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।
ঘটনার পর বিষয়টি দাউদকান্দি মডেল থানার গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম, দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী, দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলামকে অবহিত করেন আবদুর রহমান ঢালী।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
আজ বিকেলে গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পর আবদুর রহমান ঢালী ভাই আমার কার্যালয়ে এসে পুরো ঘটনাটি জানিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল ও বখাটের বাসায় পাঠানো হয়। কিন্তু সে এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছে। পরে জানতে পারলাম, ওই যুবকের পক্ষে বিষয়টি সমাধানের জন্য একটি পক্ষ আবদুর রহমান ঢালী ভাইকে কল করেছেন। আমি আবদুর রহমান ঢালীকে কল করে বিষয়টি জেনেছি। শুনেছি, এ নিয়ে রোববার বৈঠক হবে। যদি আবদুর রহমান ঢালী ভাই বলেন, তিনি বৈঠক চান না। তাহলে আমরা ওই বখাটেকে গ্রেপ্তার করব। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি জুনায়েত চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, উত্ত্যক্তকারীকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ র রহম ন ঢ ল দ উদক ন দ উপজ ল র ঘটন র এ ঘটন ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের সেরা ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ
এবছরের সেরা ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ হয়েছেন চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাঁকজমকপূর্ণ এক আয়োজনে ষষ্ঠ পর্বের সেরা বাংলাবিদ নির্বাচন করা হয়। ছয়জনের উপস্থিতিতে ইতিহাস, বানান, সাহিত্য, শব্দার্থ, কবিতা, সংস্কৃতি বিভাগে জমজমাট প্রশ্নোত্তর, শব্দসৃষ্টি, শব্দরহস্যসহ বেশকয়েকটি পর্বের প্রতিযোগিতায় সেরাদের বাছাই করা হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা বাংলাবিদ হয় যথাক্রমে রিফা তাসনিয়া ও রশ্মি তুলতুল চৌধুরী। চূড়ান্ত পর্বের উপস্থাপনা করেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম।
দেশজুড়ে দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বাছাইপর্ব এবং স্টুডিও পর্ব শেষে সেরা ছয়জন বাংলাবিদকে নিয়ে আয়োজিত হয় এ প্রতিযোগিতা। চূড়ান্ত পর্যায়ের সেরা ৬ বাংলাবিদ ছিলেন বরিশালের আদিবা মহসিন, সিলেটের প্রিয়ন্তি দাশ প্রান্তি, চট্টগ্রামের রশ্মি তুলতুল চৌধুরী, খুলনার সানিয়ান শুভ্র বিশ্বাস, ঢাকার রিফা তাসনিয়া, চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ। দেশজুড়ে ৯টি অঞ্চলের বাছাই পরীক্ষা এবং ১৯টি স্টুডিও পর্বের জমজমাট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশব্যাপী লক্ষাধিক শিক্ষার্থী থেকে বাছাই করে নেওয়া হয় শীর্ষ ছয় প্রতিযোগিকে। এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিযোগিদের কণ্ঠে গাওয়া গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও আগুন, মাশা এবং ফেরদৌস গান পরিবেশন করেন।
মহোৎসবের সেরা ৬ বাংলাবিদের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকারী জিতে নেবেন ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী পাবেন যথাক্রমে ৩ লাখ ও ২ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। এ ছাড়া প্রথম ১০ জন প্রতিযোগী পাচ্ছেন একটি ল্যাপটপসহ ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার করার জন্য ৫০ হাজার টাকার বাংলা বই ও বইয়ের আলমারি।
নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা, বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননকে শাণিত করা এবং বাংলাকে হৃদয়ে ধারণ করানোর উদ্দেশ্যে ইস্পাহানি মির্জাপুরের উদ্যোগে ও পৃষ্ঠপোষকতায় চ্যানেল আইয়ে প্রচার হয় প্রতিযোগিতাটি।
শুক্রবারের উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি টি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর হান্নান এবং চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ।
ওমর হান্নান তার বক্তৃতায় জানান, এবার প্রথম বাংলাবিদ প্রতিযোগিতায় মাদ্রাসা এবং ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিলেন। শীর্ষ ছয়জনের মধ্যেও একজন ইংরেজি মাধ্যমের একজন রয়েছেন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অতিথি বিচারক বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ফজলুল হক, প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক লেখক আনিসুল হক, বিচারক অভিনয়শিল্পী ত্রপা মজুমদার ও বিচারক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, শাইখ সিরাজ, ইস্পাহানি গ্রুপের পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানী, মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি, ইমাদ ইস্পাহানি, ড. তারিক মনজুর প্রমুখ।
রাজশাহীর ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী বাংলাবিদ তৌফিক আলম এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মুহাম্মাদ ইবরাহিমকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।