অস্বচ্ছল ৩৯ মুক্তিযোদ্ধার বীর নিবাস বিত্তবানদের দখলে
Published: 21st, February 2025 GMT
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ‘বীর নিবাস’ পাওয়া ৫৫ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৩৯ জনই বিত্তবান। অথচ একাত্তরের অনেক মুক্তিযোদ্ধা এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এখানে তাদের উদ্দেশ্যে সরকারের দেওয়া বীর নিবাসে বসবাসের সুবিধা ভোগ করছেন সম্পদশালীরা।
এ অনিয়মের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখায় একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি করে বিত্তবানদের বীর নিবাস বরাদ্দ দেওয়ার ঘটনায় উপজেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প’।
প্রতিবেদ থেকে জানা যায়, প্রকল্পের দুইটি পর্যায়ে মাধবপুর উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫৯টি বীর নিবাস বরাদ্দ হয়। পরে ৫৫টি নির্মাণ হলেও ভূমি জটিলতার কারণে চারটি নির্মাণ করা যায়নি। নির্মিত ৫৫টি বাড়ির মধ্যে ৩৯টি বাড়ি স্বচ্ছল ও বাকি ১৬টি অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা পেয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প বাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এনাম খাঁসহ আওয়ামী লীগের পরিচয়ধারী প্রভাবশালীরা ৩৯টি বীর নিবাস দখলে নিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে বাড়ি বরাদ্দ দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিন জানান, বীর নিবাস বরাদ্দ দেওয়ার জন্য টাকা লেনদেন হয়েছে। অনেক অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বীর নিবাস পাননি। যারা পেয়েছেন তাদের বেশিরভাগ স্বচ্ছল ও বিত্তবান। কয়েকজনের বাড়ি-গাড়িও রয়েছে।
অপর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. মিয়াব আলী বলেন, “অনেক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আছেন- যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। কষ্টেসৃষ্টে জীবন যাপন করছেন। তাদের বীর নিবাস দেওয়া হয়নি। বিত্তবানদের সরকারি বাড়ি দেওয়া হয়েছে স্বজনপ্রীতি ও টাকা লেনদেনের মাধ্যমে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাশেম বলেন, “আমরা তদন্ত করে যা পেয়েছি, তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তার আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মামুন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর দ দ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
বগুড়ার শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মোক্কাছ আলী (৪৮)। তিনি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
এই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রুবি আক্তার (৩০)। তাঁর বাড়ি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামে।
ভুক্তভোগী রুবি আক্তার বলেন, তাঁর বোনের জমিজমাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। থানায় এই লিখিত অভিযোগের বাদী ছিলেন তাঁর বোন উর্মিলা খাতুন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় কর্মরত মুক্কাস আলী ৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তে আসেন। তদন্তে এসে তিনি তাঁর বোনের কাছে মোটরসাইকেলের তেলের খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ৫০০ টাকা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরের দিন তিনি জমির কাগজপত্র নিয়ে মির্জাপুর বাজারে দেখা করতে বলেন। প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও পুলিশ কর্মকর্তা আসেননি। সন্ধ্যায় তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে জমির কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে আরও পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
রুবি আক্তার বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে দারোগা মুক্কাস আলী আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন। তবে অসাবধানতাবশত তিনি ফোন না কেটে রেখে দেন, যার ফলে আমি অপর প্রান্তে আমার বিবাদী রুবেল ও সোহেলের কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। কৌতূহলী হয়ে আমি তাদের কথোপকথন শুনতে থাকি এবং জানতে পারি যে মুক্কাস আলী বিবাদীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন।’
এএসআই মোক্কাছ আলী ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ নিয়ম মেনে তদন্ত করেছি। আগামী সোমবার বিকেলে দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বৈঠক করার কথা হয়েছে।’ এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (শেরপুর সার্কেল) কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।