বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মাদারীপুরের শিবচরে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রদূত, ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তুল্লাহ রহমাতুল্লাহ আলাইহির স্মৃতি বিজড়িত বাহাদুরপুর মাদ্রাসার ৮০তম বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি- আগামীতে বইপুস্তকে হাজী শরীয়তুল্লার জীবনী ও সমাজ সংস্কারে তার অবদান তুলে ধরা হবে।

তিনি আরো বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা সবাই এক হই। ঐক্য গড়ে তুলি, ঐক্যই শান্তি, ঐক্যই বল। আমাদের মনটা বড় করি, ছোট মনের মানুষ দ্বারা সমাজের বড় কোনো কাজ করা সম্ভব হয় না।

এ সময় বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান ও জেলা-উপজেলা ফরায়েজী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফর য় জ

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তপ্রদীপের মতো’ জ্বলে আছে বরুণের ফুল

ভোরের আলো ফুটেছে অনেক আগেই। সেই অর্থে মানুষের জেগে ওঠার সরবতা তখনো ছড়িয়ে পড়েনি। চারপাশে সুনসান স্তব্ধতা গা এলিয়ে আছে। ছিটেফোঁটা দু-চারজন করে বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বের হয়ে আসছেন, পথে হাঁটছেন। মনু নদের পাড়টি আরও নীরব, জনমানবহীন শান্ত একটুকরা নির্মল হাওয়ার ভূমি হয়ে আছে। তখন ‘সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ/ সেখানে বারুণী থাকে গঙ্গাসাগরের বুকে, সেখানে বরুণ...।’

জীবনানন্দ দাশের নাটার রঙের মতো রাঙানো সূর্যের জেগে ওঠার এই মুহূর্তে একফালি মনু নদ কি আর গঙ্গাসাগরের মতো কোনো উপমার সঙ্গে সমান হতে পারে, চলতে পারে! তা না-ই হলো, তবু সেখানে গঙ্গাসাগরের বুকের কাছে যেমন বরুণ থাকে, তেমনই এখানেও এই মনু নদের পাড়ে চুপি চুপি, শাখায় শাখায় ফুলের বন্যা নিয়ে জেগে আছে বরুণের গাছ।

বসন্তের সকাল, মৃদু বাতাসে তখনো কিছুটা ঠান্ডার মতো ভাব আছে। সময় উড়ছে সকালের নরম রোদের পালকে। এ রকম একটা সময়ে পথ চলতে চলতে মৌলভীবাজার শহরের ফরেস্ট অফিস সড়কের ভৈরব থলির কাছে পৌঁছেই দেখা হয়ে যায় তার সাথে, তাহাদের সাথে। ‘বাসা তোমার সাতসাগরের ঘূর্ণী হাওয়ার বুকে!/ ফুটছে ভাষা কেউটে ঢেউয়ের ফেনার ফণা ঠুকে!/ প্রায়ণ তোমার প্রবালদ্বীপে, পলার মালা গলে/ বরুণরানি ফিরছে যেথা, মুক্তপ্রদীপ জ্বলে।’ অনেকটা তা–ই, গাছের শাখায় শাখায় সবুজ পাতার ফাঁকে মুক্তপ্রদীপের মতো জ্বলে আছে সাদা, গোলাপি, সবুজের মিশ্রণে অসংখ্য বরুণ ফুল।

ফুলটির পোশাকি নাম বরুণ হলেও আরও অনেক নাম আছে। যেমন: বৈন্যা, শ্বেতপুষ্প, কুমারক, সাধুবৃক্ষ, শ্বেতদ্রুম।

বছর ঘুরে বরুণ রানির ফেরাটা এ রকমই মনে হয় রাজকীয়, এ রকমই জাঁকজমকের। গাছজুড়ে ফুটে আছে ফুল। দু-চারটা শালিক, ঘুঘু পাখি উড়ে আসছে, ফুলের ওপর বসছে। এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। ফোটা ফুলের পাপড়িরা বাতাসের আহ্লাদে টুকটুক করে ঝরে পড়ছে গাছের নিচে। পাপড়ির নকশিকাঁথা যেন কেউ বিছিয়ে রেখেছে ঘাসের ওপর। বেশ বড়সড় ঝাঁকড়া মাথার গাছ। ডালগুলোও চারদিকে ডানা মেলে আছে। পাশেই মনু নদ। হয়তো কোনো একদিন এই নদের পানিতে ভেসে এসেছিল এই বরুণগাছের ফল। সেই পাকা ফলটি চরের মতো জেগে থাকা পাড়ের মাটিতে আশ্রয় পেয়ে গাছ হয়ে মাথা তুলেছে। তারপর বসন্তের মাঝামাঝি এলেই ডালে ডালে ফুলের জলসা বসছে।

ওখানেই, বরুণগাছটির কাছে এই সাতসকালে দেখা শহরের সৈয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা সাংস্কৃতিক সংগঠক শৈলেন রায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, গাছটি বেশ অনেক বছর ধরে দেখছেন। তবে গাছে যে এত ফুল ফোটে এবং এই গাছের নাম যে বরুণ, তা আগে সেভাবে খেয়াল করেননি। গাছটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর বা এর আশপাশে হতে পারে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গাছটি এখানে কেউ রোপণ করেননি, গাছটি এমনিতেই গজিয়ে উঠেছে। গাছটি কারও হাতে কাটা পড়েনি বলে এখনো ফুলে ফুলে সাজতে পারছে।

বরুণ গাছের সবচেয়ে পছন্দের আবাসই হচ্ছে জলাভূমি এলাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ