বাংলাদেশ–ভারতের সম্পর্কের সংকট কোথায়, সমাধান কী
Published: 21st, February 2025 GMT
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে যেন একটা ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলছে; দুই দেশেরই রাজনীতিবিদদের কথাবার্তায় কেমন যেন লাগামহীন অসতর্কতা। খোলাচোখে দেখলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা নেই। কিন্তু নিবদ্ধ মনে আমরা অনেক সমস্যা বের করতে পারি। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, ‘চোখ সব দেখে, কিন্তু মন আমাদের দেখায়, যা আমরা দেখতে চাই।’ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে চোখে দেখা এবং মনের দেখানো সংকটগুলো নিয়েই এ আলোচনা।
কী নিয়ে বিরোধ
যেকোনো দুটি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট হলো যদি কোনো সীমানা নিয়ে তাদের বিরোধ থাকে—চীন ও ভারতের এবং ভারত ও পাকিস্তানের বিবাদ। ইউক্রেনের রুশভাষী অঞ্চলগুলো নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংকট নিয়ে বেশ কয় বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমানা নিয়ে এখন বড় কোনো বিরোধ নেই। একসময় তিনবিঘা ও বেরুবাড়ি নিয়ে উত্তেজনা ছিল। ওগুলো প্রায় সব মিটে গেছে ২০১৫ সালের এক দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তিস্তা ও ফারাক্কা নিয়ে অবশ্যই বিবাদ আছে। যাঁরা এটাকে উৎস ও নিম্নধারা পানিপ্রবাহ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যে বিরোধ চলছে, তার বাইরে দেখবেন, তাঁরা অবশ্যই ভুল করবেন। নিজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যেও এই বিরোধ অনেক সময় বেশ প্রকট হতে পারে।
পাকিস্তানে সিন্ধু নদের পানি ও হাইড্রোইলেকট্রিক বাঁধ নিয়ে পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশের বিরোধ অনেক পুরোনো। ভারতে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে এ ধরনের বিবাদ অন্তত দশটা নদীর পানি নিয়ে আছে। যেমন কৃষ্ণা নদীর পানি নিয়ে কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের বিরোধ। এসব বিরোধ আলাপ-আলোচনার মধ্যেই মেটানো হয় কিংবা বছরের পর বছর আলোচনা চলতে থাকে।
বাণিজ্যিক বিষয়েও কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ যদি ভারত থেকে বিদ্যুৎ কিনতে না চায়, তাহলে অন্য দেশ থেকে কিনবে। ভারতীয় শাড়ি আমদানিও যদিও বন্ধ করতে হয়, সেটাও খারাপ কিছু নয়। বাংলাদেশ যদি নিজ ভূমির মধ্য দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন চলতে না দেয়, তা-ও বাংলাদেশের অধিকার।
আবার ভারত যদি কোনো কারণে বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সীমিত করতে চায়, সেটাও তাদের অধিকার। পবিত্র রোজার সময় ভারত যদি পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ রপ্তানি না করে, তাহলে আমরা জোর করতে পারি না। অন্য দেশের অধিকার নিয়ে আলোচনা চলতে পারে, কিন্তু কেউ কারও ওপর দাবি চাপিয়ে দিতে পারে না।
হাসিনা ফ্যাক্টর
হাসিনার ভারতে উপস্থিতি নিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা বাংলাদেশে তুমুল হইচই করছেন। শেখ হাসিনাকে আটকাতে চাইলে বাংলাদেশ আগেই আটকাতে পারত। বাংলাদেশের শক্তিধর কোনো গোষ্ঠীই তাঁকে ভারতে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সুতরাং যে কুমিরকে খাল না কেটেই আটকানো যেত, এখন খাল কেটে সেই কুমির আনার কি কোনো দরকার আছে?
ভারতের দ্য প্রিন্ট সংবাদমাধ্যমের প্রধান সম্পাদক শেখর গুপ্তা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তিনি বলেছেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বড় কোনো সমস্যা নেই। শুধু ভাগ করা স্বার্থ ও পারস্পরিক সুবিধার ক্ষেত্র রয়েছে। যদি ভারতের ওপর আপনার একমাত্র বিরক্তির কারণ এই হয় যে হাসিনা এখানে আছেন, আপনি সত্যিই আশা করবেন না যে ভারত তাঁকে আপনার হাতে তুলে দেবে।’
যদি আমরা বাস্তব মেনে নিই, ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, বাংলাদেশের এমন কোনো লেভারেজ বা উপরিশক্তি নেই যে আমরা ভারতকে বাধ্য করতে পারি হাসিনাকে ফেরত দিতে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে, এগুলো সম্ভবত তাঁর অনুপস্থিতেই এগিয়ে নিতে হবে।
নয়াদিল্লি থেকে বাংলাদেশ নিয়ে শেখ হাসিনার ভাষণ ও পরবর্তীকালে এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িসহ অন্যান্য জায়গায় ভাঙচুর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে অস্থিরতায় হাসিনা ফ্যাক্টরের অবদান খুবই স্বচ্ছভাবে তুলে ধরেছে। দিল্লিতে হাসিনার কার্যকলাপে বাংলাদেশ যেমন ভারতের ওপর দারুণভাবে ক্রুদ্ধ, তেমনি বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ায় ভারতও খুব বিরক্ত।
ভারত বলেছে, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে বাংলাদেশ সরকারের নিয়মিত বিবৃতিগুলোয় ভারতকে ক্রমাগত নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে; তারা তাদের অভ্যন্তরীণ সুশাসন প্রশ্নে আমাদের দোষারোপ করছে। বাস্তবিক অর্থে বাংলাদেশের এসব বিবৃতিই বিরাজমান নেতিবাচক পরিস্থিতির জন্য দায়ী।’
বাংলাদেশ যদি হাসিনাকে ফেরত চায় বা তাঁকে চুপ রাখতে চায়, তা বাংলাদেশকে উচ্চপর্যায়ে ভারতের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতকে বুঝিয়ে রাজি করাতে হবে। ভারত হাসিনাকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে না দিলে বাংলাদেশ সরকার বিকল্প প্রস্তাবও ভারতকে দিতে পারে। যেমন বাংলাদেশ হাসিনাকে সৌদি আরবে আশ্রয় দেওয়া নিয়েও কথা বলতে পারে।
সৌদি আরবে হাসিনাকে পাঠিয়ে দিতে পারলে নিশ্চিতভাবে হাসিনার মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। সাম্প্রতিক কালে সৌদি আরব যেসব পাকিস্তানি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আশ্রয় দিয়েছে, কেউ ওখান থেকে কখনো নিজ দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে পারেননি। হাসিনাকে যদি সৌদিতে আশ্রয় দেওয়া যায়, তাহলে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই চিরতরে ‘হাসিনা ফ্যাক্টর’ থেকে মুক্তি পাবে। আবারও বলছি, এ জন্য প্রয়োজন কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং উদ্যোগটা বাংলাদেশকেই নিতে হবে।
কিছু অস্বস্তি
আমাদের দুই দেশেই একটা অস্বস্তির ব্যাপার হলো সাম্প্রদায়িকতা। বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর। এই সাম্প্রদায়িকতার আত্মনির্ভরশীলা নিয়ে কেউ কথা বলে না। বাংলাদেশে মনে করা হয়, কয়টা হিন্দুবাড়ি পাহারা দিলেই সব মিটে যাবে। ভারতে মনে করা হয়, কিছু হিন্দু ভোট বাড়িয়ে আগামী ভোটটা পার হলেই আর মুসলিমবিদ্বেষের প্রয়োজন হবে না।
একটা বিষয় সত্য, ভারত সরকারের মুসলমানবিরোধী নীতিমালার জন্য, বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলমান সম্প্রদায় ভারতের ওপর বেশ অসন্তুষ্ট। ভারত সরকার তাদের মুসলমানবিরোধী কর্মকাণ্ডকে ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ’ ব্যাপার বলে প্রচার করেন। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশের মুসলমানদের মানসিক অস্বস্তির দিকটা তারা কখনো ভেবে দেখেনি। ভারতের দ্বিমুখী আচরণের একটি দিক হচ্ছে নিজ দেশে মুসলিম বিরোধী নীতির চর্চা অব্যাহত রাখা ও অন্যদিকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা। কিন্তু এই দুই দেশে সংখ্যালঘুরা বিপদে পড়লে এবং তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে দুই দেশেই পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া হয়। এই ব্যাপারগুলো খুবই জটিল। যেহেতু রাজনীতিবিদেরাই এগুলো চাপিয়ে দেন সাধারণ মানুষের ওপর, তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে সমাধানের জন্য।
আজকাল বাংলাদেশে একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে—রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা সংখ্যালঘুদের মন্দির পাহারা দেন, তাঁদের বাড়িতে গিয়ে অভয়বার্তা জানান। এগুলো সংখ্যালঘুদের মনে কতটুকু নিরাপত্তার বোধ তৈরি করে সেটা এক বড় প্রশ্ন। কারণ, তাঁদের পূর্ণ অধিকার আছে কারও ‘ছাতার নিচে’ না গিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মতো নিজ বাড়ির শান্তিতে বসবাস করার। মন্দির পাহারা দেওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধ করা উচিত। আশা করি, দুই দেশের রাজনীতিকেরা এই ব্যাপারগুলো ভালো করে চিন্তা করবেন, যাতে এক দেশের নীতি অন্য দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আতঙ্কগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত না করে।
অহংবোধ
দুই দেশের মধ্যে আরেরটা অস্বস্তি হলো ‘ইগো’ বা অহংবোধ। ভারত বড় দেশ, শক্তিশালীও, তাদের অহংবোধ প্রবল। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের মানসিক চেতনাও এখন খুব প্রবল। তাঁরা মনে করেন, হাসিনাকে তাঁরা তাড়িয়েছেন, তাঁদের শক্তিও-বা কম কীসে? বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাফল্যকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ স্বাগত জানিয়েছে। তবে ভারত ছিল একদম নীরব, যদিও তারা বাংলাদেশের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। এই নীরবতাও বাংলাদেশের নতুন সরকার ভালো চোখে দেখেনি।
ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদি গত জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে দেয়ালে টাঙানো মানচিত্র দেখিয়ে বলেন, বাংলাদেশ খুব ছোট্ট—এই অংশ ছাড়া পুরো সীমান্তেই রয়েছে বিশাল এক ভারত। তাঁর এই মূল্যায়ন সত্য হলেও কিছুটা অহংবোধ আছে এতে। তবে অহংবোধ ছাড়া তিনি যে কথাটা বলেছেন, সেটা আরও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে, একে অপরকে বুঝতে হবে এবং কোনো ধরনের শত্রুতা করলে আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ব্যক্তিগত অহংবোধের কোনো স্থান নেই, নিজ দেশের স্বার্থ ও মঙ্গলই হবে প্রধান লক্ষ্য। রাষ্ট্রনেতাদের বাস্তববাদী ও কৌশলী হতে হবে। দুই দেশের মানুষের সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা যেন এই দুই দেশের নেতারা অগ্রাধিকার দেন, সেটা অত্যন্ত জরুরি।
রাজনীতিবিদদের রাজনীতি
যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা যেকোনো বিষয়ে সুযোগ পেলেই রাজনীতি করবেন—এ আর নতুন কি? এ ব্যাপারে বাংলাদেশি ও ভারতীয় রাজনীতিকদের মধ্যে মিল দেখা যায়। বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি, রাজনীতিবিদেরা ঠিক নির্ধারণ করতে পারছেন না, কে কার প্রতিপক্ষ। সবাই একে অপরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের প্রতিপক্ষ নির্ধারণ ও প্রতিনির্ধারণ করছেন।
বাংলাদেশের অনেক রাজনৈতিক নেতা মনে করেন, ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনা অনেক গোপন চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যা বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী। যদি তা-ই হয়, তাহলে গোপন চুক্তিগুলো প্রকাশ করা উচিত এবং অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। এগুলো উত্তেজনা ছড়ানোর কিছু নয়। যেকোনো চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।
রাজনীতিবিদদের উত্তপ্ত কথাবার্তা দুই দেশের সীমান্তের জনগণের মধ্যেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে। গাছ কাটা ও সামান্য বিরোধ নিয়ে হয়েছে বোমাবাজি ও মারামারি। রাজনীতিবিদেরা সংযত না হলে সাধারণ জনগণের মধ্যে এই উত্তাপ দাবানলের মতো পুরো সীমান্তে ছড়িয়ে যেতে পারে। আশার কথা এই যে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে সীমান্তের দুপাশের গ্রামবাসীকে শান্ত করেছেন।
আলোচনায় সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে
যেকোনো দুটি দেশের উত্তেজনা কমানো বা সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রধান ভিত্তি হলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা। ভারত ও বাংলাদেশের জন্য সময় এসেছে ধারাবাহিক দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় ফিরে যাওয়ার। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বিমসটেকের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য থাইল্যান্ড সফরে যাবেন। সময় হলে তাঁদের সেখানে কথা বলা উচিত। তবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে প্রয়োজন বাংলাদেশ-ভারত ধারাবাহিক আলোচনা।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব ভালো বা খুব মধুর রাখতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বাংলাদেশ যেন বৈরিতার পথে না যায়। ভারত এখন বড় শক্তি। অনেক আন্তর্জাতিক সংকটে ভারতকে আমাদের দরকার হতে পারে। মিয়ানমার যেভাবে বাংলাদেশের পূর্ব সীমানায় আগ্রাসী ভূমিকা নিচ্ছে, সেটা বাংলাদেশের জন্য অশনিসংকেত। চীনের অর্থনৈতিক আগ্রাসনও অনেক দেশের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠতা আমাদের জন্য তেমন কিছু আনবে না, বরং পুরোনো রক্তক্ষরণকে পুনর্জীবিত করবে।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মুষ্টিযোদ্ধা মাইক টাইসন বলেছিলেন, ‘তুমি যাদের সঙ্গে সংঘর্ষ করছ, তারা সবাই তোমার শত্রু নয় এবং যারা তোমাকে সাহায্য করছে, তারা সবাই তোমার বন্ধু নয়।’ আমাদের শত্রু-মিত্র ভালো করে চিনে সামনে এগোতে হবে।
সালেহ উদ্দিন আহমদ: লেখক, শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক; ডাকসুর সাবেক সম্পাদক (১৯৭০-৭২)
[email protected]
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ব দ আম দ র দ র র জন ত র জন ত ক ম সলম ন র জন য সরক র র ওপর করব ন ভ রতক
এছাড়াও পড়ুন:
নেপালের দায়িত্বে বাংলাদেশের সাবেক কোচ
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটার স্টুয়ার্ট ল নেপালের হেড কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন। আগামী দুই বছরের জন্য তাকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে নেপাল ক্রিকেট বোর্ড। গত ফেব্রুয়ারিতে কোচ মন্টি দেশাইয়ের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে তার স্থলাভিষিক্ত হলেন স্টুয়ার্ট ল।
স্টুয়ার্ট ল এর আগে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কোচ ছিলেন, তবে নিয়োগের সাত মাস পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে তার কোচিংয়ে দারুণ সাফল্য পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তার অধীনে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারায় তারা এবং প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে জায়গা করে নেয়।
আগামী জুনে স্কটল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে নেপাল, যেখানে স্কটল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা। বিশ্বকাপ লিগ-২ এর অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত এই সিরিজই হবে স্টুয়ার্ট ল'র প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট।
বাংলাদেশের সঙ্গে স্টুয়ার্ট ল'র সম্পর্ক বেশ পুরোনো। তার কোচিংয়েই ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। জাতীয় দলের পাশাপাশি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সেন্টার অব এক্সেলেন্সের দায়িত্বেও ছিলেন এই অভিজ্ঞ কোচ।