রাজধানীর উত্তরায় চীনের নাগরিক ওয়াং বু (৩৭) হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুই-তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াং বুর এক আত্মীয় বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় এ মামলা করেন। এদিকে পুলিশ বলছে, ওয়াং বু–কে হত্যার পর সন্দেহভাজন দুই আসামি থাইল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন। তবে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তাঁদের আটক করে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে।

গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ভাড়া বাসা থেকে ওয়াং বুর (৩৭) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর মাথার পেছনেসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ওয়াং বুর আত্মীয় লিও রুই উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন। তাঁর মামলার বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওয়াং বু ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে বাস করছিলেন। এখানে পাথরের ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ওয়াংয়ের সঙ্গে চীনের দুই নাগরিককে তাঁর ভাড়া বাসায় প্রবেশ করতে দেখা যায়। বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে তাঁরা ওই বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর রাত ৩টা ১১ মিনিটে তাঁরা থাইল্যান্ডে চলে যান। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুজন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, সন্দেহভাজন ওই দুজনকে যে গাড়িতে করে বাসাটি থেকে বের হয়েছিলেন, সেই গাড়ি জব্দ করাসহ তাঁদের আটকের চেষ্টা চলছে। চীনে থাকাকালে ওয়াং বুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটে। ওসি বলেন, ওয়াং বুকে হত্যার পর সন্দেহভাজন দুই আসামি থাইল্যান্ডে পালিয়ে গেলেও সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তাঁদের আটক করে দেশে ফেরত আনা হবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, এক মাস আগে ওয়াং বু উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে ১ হাজার শয্যার হাসপাতালের দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন

চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন করেছে জেলার বাসিন্দারা। পঞ্চগড় জেলা সমিতির আয়োজনে শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকায় অবস্থানরত জেলাটির কয়েক শতাধিক বাসিন্দা মানববন্ধনে অংশ নেন।

এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ ড. আব্দুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, সমিতির সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আইনুল হক পিইঞ্জ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম, আনজারুল হক, মুক্তার আলম, মাখদুম মাসুম মাশরাফি যুক্তি, মাসুদ, সরোয়ারসহ জেলা সমিতির অন্যান্য নেতারা।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পঞ্চগড় জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা 
মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঢাকা থেকে সবচেয়ে দূরের জেলা পঞ্চগড়। এই কারণে সম্ভবত পঞ্চগড়ের মানুষের আর্তনাদ আপনাদের কানে পৌঁছায় না। আপনারা ঢাকায় বসে অনুভব করতে পারবেন না, পঞ্চগড়ের ১২ লাখ মানুষের জন্য শুধু প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এর পরের চিকিৎসার জন্য পারি দিতে হয় রংপুর অথবা দিনাজপুর। পথেই অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। 

তারা আরও বলেন, আমরা পঞ্চগড়ের মানুষ রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে আর মৃত্যুবরণ করতে চাই না, চিকিৎসা নিয়ে নিজ মাটি পঞ্চগড়ে মৃত্যুবরণ করতে চাই। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে পঞ্চগড়ের অনেক এমপি, মন্ত্রী, স্পিকার দেখেছি, অনেক সরকার বাহাদুর দেখেছি। একটা উন্নত হাসপাতাল দেখি নাই। তাই ৫ আগস্ট এর পরের বৈষম্যহীন বাংলাদেশে বৈষম্যহীন সিদ্ধান্ত নিন, চীনা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল পঞ্চগড়ে স্থাপন করুন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের উত্তর জনপদের সম্ভাবনাময় জেলা পঞ্চগড়। সমতল ভূমিতে বিস্তৃর্ণ চা-বাগান, পাথর-নদীতে সমৃদ্ধ জেলাটির ভৌগলিক অবস্থান পর্যটনের অপার সম্ভাবনার হাতছানি দেয়। পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব মাত্র ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে হলে ভুটান, নেপাল ও চীনের ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসবেন। চিকিৎসাসেবা নিতে আসবেন। পঞ্চগড়ের মানুষও বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন।

দাবি না মানলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ