অ্যাকাপেলায় একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’
Published: 21st, February 2025 GMT
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারিতে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা এবং আলতাফ মাহমুদের সুরে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটির অ্যাকাপেলা পরিবেশনা নিয়ে এসেছে কয়্যার বাংলা ব্যান্ড।
অ্যাকাপেলা পরিবেশনাগুলো সাধারণত খালি গলায় গাওয়া হয় এবং এই ধরণটি বাংলা গানেও খুব একটা প্রচলিত নয়। আর তাই মাতৃভাষাকে সম্মান জানাতে এই নতুন ধারার সংগঠনটি অ্যাকাপেলার মাধ্যমে আমাদের চিরচেনা গানটিকে নতুন রূপে নিয়ে এসেছে শ্রোতাদের সামনে।
তাছাড়া ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই গানটির কেবল কয়েকটি লাইনই সচরাচর সবাই গেয়ে থাকেন। কয়্যার বাংলা এবারের আয়োজনে গানটির ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ পুরো গানটি পরিবেশন করেছে।
আরো পড়ুন:
হৃদয় খানের সংসার ভাঙার গুঞ্জন
বর্ণালীর ‘কি পিরিতি শিখাইলো বন্ধু কালাচাঁন’
এ নিয়ে কয়ারবাংলা প্রতিষ্ঠাতা তানভীর আলম সজীব বলেন, “ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই গানটি তৈরি, অথচ পুরো গানটি খুব কম মানুষই শুনেছেন। যারা পুরো গানটি শুনেছেন শুধুমাত্র তারাই উপলব্ধি করতে পারেন কিভাবে আব্দুল গাফফার চৌধুরী ২১ ফেব্রুয়ারিতে এক ছাত্রের লাশ দেখে ভেবেছিলেন, এটা যেন তার নিজের ভাইয়েরই রক্তমাখা লাশ এবং তৎক্ষণাত তার মনে গানের প্রথম দুইটি লাইন জেগে উঠে। সুতরাং যে দেশে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে সোনার ছেলেরা, সেই ইতিহাস গানের মাধ্যমে রচিতও হয়েছে, কিন্তু প্রচার হয়নি, তাই তেমন একটা কেউ শোনেনি। সেই তাগিদ থেকেই পুরো গানটি তৈরি করা।”
এই আয়োজনে সংযুক্ত হয়েছিলেন এবং কণ্ঠ মিলিয়েছিলেন গানটির সুরকার শহীদ আলতাফ মাহমুদ এর তার কন্যা শাওন মাহমুদ।
এবারের এ ভিন্নধর্মী পরিবেশনায় কণ্ঠ দিয়েছেন তানভীর আলম সজীব, সুকন্যা মজুমদার, মাহমুদুল হাসান, ইউসুফ আহমেদ খান, মৌমিতা মুমু, প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য ও ইসরাত জাহান মীম।
এ প্রজন্মের কিছু নতুন এবং তরুণ সম্ভাবনাময় সংগীত শিল্পীদের সমন্বয়ে গঠিত কয়্যার বাংলা ব্যান্ডটি গত ১৬ ডিসেম্বর ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটির মাধ্যমে পুনরায় আত্মপ্রকাশ পায়। গানটি কয়্যার বাংলার ফেসবুক ও ইউটিউবে মুক্তি পায় এবং পুরোনো গানটির নতুন আঙ্গীকে পরিবেশনা বেশ আলোড়ন তৈরি করেন শ্রোতাদের মধ্যে।
ঢাকা/হাসান/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন’
জুলাই হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলছেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাচ্ছে। যাঁদের রক্তের ওপর দিয়ে দেশ নতুন করে স্বাধীন হলো, তাঁদের হত্যার বিচারের কথা কেউ বলছেন না।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ নামের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা এ কথাগুলো বলেন। তিনজন উপদেষ্টা নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো. সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, ‘এই সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না, ভাই হত্যার বিচার চাই। দেশে কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন।’
শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাঁদের সরকার। কিন্তু তাঁরা শহীদ পরিবারের কষ্ট বুঝতে পারছে না। হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ ও হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের অনেককেই এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ‘পুলিশ আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেল আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পেলাম না।’
আক্ষেপ করে শাহিনা বেগম বলেন, ‘কান্না করতে করতে এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। তবুও ছেলে হত্যার বিচার পাচ্ছি না।’
ভাই হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নাবিল হোসেন। তিনি বলেন, ১৮ জুলাই তাঁর ভাই সোহেল রানা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলন করেছিলেন। পুলিশ তাঁকে গুলি করে হত্যার পর বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে। আজও ভাইয়ের কবর শনাক্ত করতে পারেননি।
নাবিল হোসেন বলেন, ‘আর কোনো আশ্বাস নয়, রায়েরবাজারে যে ১১৪ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে কবর দেওয়া হয়েছে, তাঁদের শনাক্ত করতে হবে। যাঁরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে।’