চট্টগ্রামে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি আবৃত্তি অনুষ্ঠান মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে চট্টগ্রাম আবৃত্তি সম্মিলন।

একটি কবিতায় বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণের পর জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতা-কর্মীরা গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। এ সময় এমন কবিতা পড়ার জন্য এক আবৃত্তিশিল্পীকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ।

জাসাসের নগর সভাপতি মুসা বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। মামুনুর রশিদ প্রথম আলোর কাছে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চলছিল। তাই আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রশাসন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।’

চট্টগ্রাম আবৃত্তি সম্মিলন প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ মিনারের পাশে টিঅ্যান্ডটি কার্যালয়ের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে আসছে। চট্টগ্রামের প্রায় ২০টি সংগঠন এতে যোগ দেয়। এবারও আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ওই স্থানে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এতে বিভিন্ন সংগঠনের আবৃত্তিশিল্পীরা কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। পাশাপাশি গান ও কথামালাও চলছিল।

আয়োজকদের মধ্যে কয়েকজন জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে এক আবৃত্তিশিল্পী কবি রবিউল হুসাইনের ‘এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট’ কবিতাটি পড়ছিলেন। এই কবিতার কয়েকটি লাইনে বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা, একাত্তর, সাতই মার্চ, মাওলানা ভাসানী ইত্যাদি শব্দ ছিল। এই লাইনগুলো পড়ার পর মঞ্চের উল্টো পাশে পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে জাসাসের নেতা-কর্মীরা এসে প্রতিবাদ জানান। যিনি কবিতাটি পড়ছিলেন, তাঁকে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তাঁকে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করা হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে আয়োজকদের অন্যতম নরেন আবৃত্তি একাডেমির মিশফাক রাসেল বলেন, ‘ওই শিল্পী এমন কবিতা পড়বেন, আমরা জানতাম না। ওই কবিতার কয়েকটি লাইনের কারণে কয়েকজন এসে প্রতিবাদ জানান। এরপর অনুষ্ঠান মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।’

জানতে চাইলে জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘তারা পতিত শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করছিল। কবিতায় তারা বলছিল একাত্তর ভুলে গেছি, মুক্তিযুদ্ধ ভুলে গেছি। তাই আমরা প্রথমে তাদের নিষেধ করেছি। পরে প্রতিবাদ জানিয়েছি। এরপর যে ছেলেটি কবিতা পড়ছিল, সে ক্ষমা চেয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘ছেলেটাকে হেনস্তা করা হয়েছে কি না, আমি দেখিনি। আমাদের পরে পুলিশ প্রশাসন অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করে।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওখানে একটা অনুষ্ঠানে আবৃত্তির মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বলেছে বলে আমাদের জানানো হয়। পরে আমাদের ভ্রাম্যমাণ দল ওখানে গেছে। ততক্ষণে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।’

উল্লেখ্য, এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সিআরবিতে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠানের অনুমতি মাঝপথে বাতিল করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবু, সাধারণ সম্পাদক খোকন

যশোর জেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব হাতে নিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও দেলোয়ার হোসেন খোকন। সাধারণ সম্পাদক পদে শুধুমাত্র দেলোয়ার হোসেন খোকন মনোনয়ন কেনায় আগেই তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওই পদে নির্বাচিত হন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জেলা সম্মেলন শেষে বাকী পদগুলোর নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটের আয়োজন করা হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন মিজানুর রহমান খান। এ পদে মারুফুল ইসলাম তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছেন। 

সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে বিজয়ী হয়েছেন রবিউল ইসলাম, মুনীর আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু ও শহিদুল বারী রবু। এ পদে পরাজিত হয়েছেন কাজী আজম।

উল্লেখ, শনিবার দুপুর ২টা থেকে আলমগীর সিদ্দিকি হলে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পরে ভোট গনণা শেষে রাত সাড়ে আটটায় টাউন হল মাঠে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমান উল্লাহ আমান। 

এ সময় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও এসময় নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. ইসহক, সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মুকুল, অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, ডা. এস এম রবিউল আলম এবং সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সজল উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রিটন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ