বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারুকলা সংসদ (ববিচাস) আয়োজিত কনসার্টে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ব্যান্ড কৃষ্ণপক্ষকে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ‘বাসন্তিক’ উৎসবের অংশ হিসেবে কনসার্ট চলছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কিছু শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে চেয়ার ভাঙচুর করে।

এ ঘটনায় ব্যান্ডটি তাদের ‘ভাঙা সাইকেল’ গানটি দ্রুত শেষ করে মঞ্চ থেকে নেমে যায়। বিক্ষোভ বাড়তে থাকলে তারা তাদের গাড়িতে করে পাশের জঙ্গলের রাস্তায় অবস্থান নেয়। সেখানেই প্রায় দুই ঘণ্টা লুকিয়ে থাকে ব্যান্ডটির ৭ সদস্য।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন দলটির গায়ক তারেক হোসেন। তিনি জানান, রাত ১২টা ৫০ থেকে ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তারা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হন তারা। এ সময় গাড়ির সব লাইট বন্ধ রেখে নীরবে অপেক্ষা করেন।

তিনি বলেন, ‘ববিচাসের আয়োজকদের প্রাণভরা আমন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা সবই ভীষণ সুন্দর ও অমায়িক ছিল। সমস্যা যা কিছু তা শুরু স্টেজ এ নামার কিছুক্ষণ আগ থেকে। স্টেজের বিপরীত প্রান্ত থেকে উন্মত্ত চিৎকার চেঁচামেচি ও গালাগালি শোনা যায়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সংসদের আয়োজকদের চোখে মুখে আমি মূর্তিমান আতংক দেখি। পেশী শক্তির প্রদর্শনও তখন স্পষ্ট ছিল।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শুরুতে ব্যান্ড সদস্যদের কোনো নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা করেননি বলে কৃষ্ণপক্ষের সদস্যরা অভিযোগ করেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারুকলা সংসদ (ববিচাস) কনসার্টের আয়োজন করে, যা চলছিল রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত। হঠাৎ শেরেবাংলা হল ও বিজয়-২৪ হলের কয়েকজন ছাত্র পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটার কথা বলে হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে দুই হলের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মুক্তমঞ্চের দিকে আসেন। সেসময় বেশ কিছু চেয়ার, মনিটর ও বাশের বেড়া ভেঙে ফেলা হয়।

রাত দেড়টার পর নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড.

সোনিয়া খান সনি ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সিদ্ধান্ত দেন, এখন থেকে রাত ৯টার পর ক্যাম্পাসে আর কোনো অনুষ্ঠান হবে না।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের আগে বগুড়ার ‘বেনারসি শাড়ি গ্রামের’ হাল-চাল

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রাম। উৎসব এলে এই গ্রামের মানুষের মধ্যে আনন্দ বয়ে যেত। মুখর হয়ে উঠত গ্রামের তাঁতগুলো। তাঁতের ‘ঠক, ঠক’ শব্দ কেমন ছন্দের মতো লাগত। এখন আর সেই দিন নেই। নানা কারণে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক তাঁত। কারিগরদের চোখেমুখে এখন দুশ্চিন্তার ছাপ।

তাঁতের কয়েকজন মালিক ও কারিগরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে এই গ্রামে তাঁতশিল্প গড়ে ওঠে। তখন ৭২টি তাঁত ছিল। কারিগর ছিলেন এই গ্রামেরই নারী ও পুরুষেরা। সংখ্যায় তাঁরা ছিলেন অন্তত ১৫০ জন। ঢাকার মিরপুর-১২ নম্বর থেকে আনা সুতা ও শাড়ির নকশায় এই গ্রামে গড়ে ওঠে বেনারসি তাঁতশিল্প। অন্তত ১০ ধরনের বেনারসি শাড়ি তৈরি হতো। দাম ছিল সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকার মধ্যে।

গত সোমবার বিকেলে সরেজমিন গ্রামটিতে দেখা যায়, এখন তাঁত আছে ৪০টির মতো। সব কটি তাঁত এখন বন্ধ। এখানে আর কোনো বেনারসি শাড়ি তৈরি হয় না। ফলে শাড়ি নিতে আসা মানুষের আনাগোনাও নেই।

এ গ্রামের খোরশেদ আলম বলেন, মিরপুর থেকে তিনি বেনারসি শাড়ি তৈরির প্রশিক্ষণ নেন পাঁচ বছর ধরে। পরে তিনি গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে ১৯৯৪ সালে পাঁচটি তাঁত বসান। গ্রামের নানাজন তাঁর কাছ থেকে শিখে তাঁত বসান। এভাবে একসময় এখানে ৭২টি তাঁত হয়। সারা বছর তাঁরা বেনারসি শাড়ি বানাতেন। দেশের বিভিন্ন বাজারে তাঁদের শাড়ির চাহিদাও ছিল অনেক। বগুড়াসহ আশপাশের জেলাগুলোর মানুষের কাছে গ্রামের নাম হয়ে যায় ‘বেনারসি শাড়ির গ্রাম’।

তাঁত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মালিক-কারিগর সবাই দিনমজুর হয়ে গেছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ