ইতিহাসের নামে আমরা আর কোনো গল্প দেখতে চাই না: জামায়াতের আমির
Published: 21st, February 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ইতিহাসের নামে আমরা আর কোনো গল্প দেখতে চাই না। ইতিহাসটা উঠে আসুক।’
এর ব্যাখ্যা দিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ ইতিহাসে যার যেখানে জায়গা রয়েছে, সেটা অবশ্যই দিতে হবে। আপনার ভালো লাগুক কিংবা না লাগুক, এরই নাম ইতিহাস। যদি ভালো লাগার মানুষকে সামনে নিয়ে আসেন, আর ভালো না লাগার মানুষকে যদি ফেলে দেন; এটা ইতিহাস নয়, এটা হবে গল্প।’
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে শহীদদের কথা স্মরণ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তাঁরা ইতিহাস রচনা করেছেন। নিজেদের জীবন দান করেছেন। তাঁদের কারও মা জীবিত নেই। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অনেকে কষ্টে আছেন। এই রাষ্ট্রের কি এতই অভাব পড়েছে যে তাঁদের দিকে একটু সুদৃষ্টি দেওয়া যায় না।’
শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা লজ্জিত। আমরা রাজনীতি করি, কিন্তু দায়িত্ব পালন করি না। এই দায়িত্ব রাষ্ট্রের, জনগণ রাষ্ট্র চালায় না। সরকার রাষ্ট্র চালায়। যুগ যুগ ধরে যাঁরা সরকারে ছিলেন, তাঁদের অবহেলা, উপেক্ষা এবং অপরাজনীতির দায় তাঁদের নিতেই হবে।’
বর্তমান সরকারকে জন–আকাঙ্ক্ষার সরকার বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তাঁরা যত দিন আছেন, অনুরোধ করব ইতিহাসের এই অচলায়তন ভেঙে ফেলুন। সম্মানের সঙ্গে তাঁদের (ভাষাশহীদদের পরিবার) কাছে যান, পরিবারগুলোকে সম্মানিত করুন।’
বিগত সরকার এই জাতির প্রায় প্রত্যেক নাগরিকের সঙ্গে শুধু তাদের গোষ্ঠী ছাড়া জুলুম করেছে বলেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘এই জুলুমের শিকার ছিল জামায়াতে ইসলামীও। এরপর পর্যায়ক্রমে সবার ওপরে এসেছে, কেউ বাদ যাননি। এই চ্যাপ্টারের অবসান হওয়ার পরে বাংলাদেশে এখন আবার কারও ওপর জুলুম করা হোক, এটা কি এই জাতি মেনে নেবে?’
শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে শতভাগ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে ক্যাঙারু কোর্ট বসিয়ে জুডিশিয়াল মার্ডার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘একে একে সবাইকে বিদায় করা হয়েছে। একজন বান্দা (জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম) বেঁচে আছেন। আজকে পটপরিবর্তনের ছয় মাসের অধিক হয়ে গেলে এখন পর্যন্ত তাঁকে কেন বন্দী থাকতে হবে।’
জামায়াতের আমির এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘আমাকে কয়েকজন বলেছেন অনেক ধৈর্য ধরেছেন, আরেকটু ধৈর্য ধরুন। আমরা রাষ্ট্রে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই না। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কেউ যদি খেলেন, তাহলে আমরা কারও দাবার ঘুঁটি হব না।’ এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া না হলে স্বেচ্ছায় জেলে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শফিকুর রহমান।
ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজির কারণে প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বহুগুণ বাড়ছে উল্লেখ করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান জামায়াতের আমির।
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবদুল মান্নান, দক্ষিণের নায়েবে আমির হেলাল উদ্দীন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির। অনুষ্ঠানে ভাষার গান পরিবেশন করেন হাসান আল বান্না ও তাওহীদুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র ল ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ৭১ এর শহীদ বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার সকাল ৬টার দিকে তিনি ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি।
প্রধান উপদেষ্টার পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর একে একে বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক–সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।