বগুড়ায় এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
Published: 21st, February 2025 GMT
বগুড়ার শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মোক্কাছ আলী (৪৮)। তিনি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
এই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রুবি আক্তার (৩০)। তাঁর বাড়ি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামে।
ভুক্তভোগী রুবি আক্তার বলেন, তাঁর বোনের জমিজমাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। থানায় এই লিখিত অভিযোগের বাদী ছিলেন তাঁর বোন উর্মিলা খাতুন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় কর্মরত মুক্কাস আলী ৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তে আসেন। তদন্তে এসে তিনি তাঁর বোনের কাছে মোটরসাইকেলের তেলের খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ৫০০ টাকা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরের দিন তিনি জমির কাগজপত্র নিয়ে মির্জাপুর বাজারে দেখা করতে বলেন। প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও পুলিশ কর্মকর্তা আসেননি। সন্ধ্যায় তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে জমির কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে আরও পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
রুবি আক্তার বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে দারোগা মুক্কাস আলী আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন। তবে অসাবধানতাবশত তিনি ফোন না কেটে রেখে দেন, যার ফলে আমি অপর প্রান্তে আমার বিবাদী রুবেল ও সোহেলের কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। কৌতূহলী হয়ে আমি তাদের কথোপকথন শুনতে থাকি এবং জানতে পারি যে মুক্কাস আলী বিবাদীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন।’
এএসআই মোক্কাছ আলী ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ নিয়ম মেনে তদন্ত করেছি। আগামী সোমবার বিকেলে দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বৈঠক করার কথা হয়েছে।’ এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (শেরপুর সার্কেল) কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রণোদনার চালের স্লিপ নিয়ে গেলেন বিএনপি নেতা
বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নে জেলেদের প্রণোদনার চালের ২৭টি স্লিপ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহে আলম বেপারি ওই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। গত বুধবার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কালাম বেপারির দোকান থেকে স্লিপগুলো নিয়ে যান তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি সেগুলো ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেগুলো ফেরত দেননি শাহে আলম।
কালাম বেপারি জানান, ইলিশ অভয়াশ্রমে মাছ ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা গত ১ মার্চ শুরু হয়েছে। এই সময়ের জন্য তালিকাভুক্ত জেলেরা দু’বারে মোট ৮০ কেজি চাল পাবেন। এ জন্য সুবিধাভোগী জেলেকে স্লিপ দেওয়া হবে, সেটি দেখিয়ে তিনি চাল তুলবেন।
কালাম জানান, তাঁর ওয়ার্ডে চাল পাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত জেলে ১৮০ জন। সংশ্লিষ্টদের স্লিপ বিতরণের পর অবশিষ্ট ২৭টি কাউরিয়া বাজারে তাঁর দোকানে রাখা ছিল। গত বুধবার দোকানে তাঁর ছেলে ছিল। শাহে আলম দোকানে গিয়ে ছেলেকে হুমকি দিয়ে স্লিপগুলো নিয়ে যান। কালাম বিষয়টি ইউএনওকে জানানোয় শনিবার সকালে দোকানে গিয়ে তাঁকে গালাগাল করেন শাহে আলম।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শাহে আলম সমকালকে বলেন, তিনি জেলেদের স্লিপ নেননি।
ইউএনও ইলিয়াস সিকদার বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি শাহে আলমকে স্লিপগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য বলেছেন। উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই স্লিপগুলোর বিপরীতে চাল বিতরণ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গাফফার তালুকদার বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে শাহে আলম গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নে অনেক অপকর্ম করেছেন। তাঁকে বারবার সতর্ক করা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসছেন না। জেলেদের প্রণোদনার চালের স্লিপগুলো তাঁকে ফেরত দিতে বলা হয়েছে।