চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মুন্সীরহাট বাজারে চায়ের স্টোভ থেকে সৃষ্ট আগুনে পুড়েছে অন্তত ১২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

আজ শুক্রবার ভোরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ভোর ৬টার দিকে বাজারের একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় আগুনের লেলিহান শিখা চারপাশে ছড়িয়ে পড়লে মানুষের ডাক চিৎকার শুনে এলাকাবাসী ছুটে এসে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল দুই ঘণ্টার চেষ্টায়  আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোর ৬টার দিকে বাজারের আবদুল বাতেনের চায়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে মসজিদের মাইক থেকে আগুন নেভাতে এলাকাবাসীর সহায়তা চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজ করেন। ততক্ষণে বাজারের ১২টি দোকান পুড়ে যায়। এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- আবদুল বাতের চায়ের দোকান, নুরু বকাউলের ভাতের হোটেল, আনাসের মিষ্টির দোকান, আলী আহমেদের ফলের দোকান, হেলালের মুদি দোকান, হাশিম স্টোর ও কসমেটিকস, নয়নের মিষ্টির দোকান, শরীফের মোবাইলের দোকান, সাজুর পানের দোকান ও নুরুর ফলের দোকান।

মতলব দক্ষিণের ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চায়ের দোকানের স্টোভ অথবা বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মতলব ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

‘পেডে দুই মুঠ ভাতই জোডে না, ঈদের সওদা করুম ক্যামনে’

‘প্রায় এক মাস ধইরা মেঘনায় মাছ ধরতে পারতাছি না। সরকার থেইকা সাহায্য-সহযোগিতাও পাই নাই। রোজগার নাই। পরিবার লইয়া খাইয়া না খাইয়া আছি। পেডে দুই মুঠ ভাতই জোডে না। ঈদের কেনাকাটা ও সওদা করুম ক্যামনে। খুব বিপাকে আছি।’

কথাগুলো বলছিলেন মর্তুজা মিয়া। তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার নন্দলালপুর এলাকার জেলেপল্লিতে। ১ মার্চ থেকে মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ সময় সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় ঈদ সামনে রেখে পরিবার নিয়ে কষ্টের কথা জানান তিনি। তাঁর মতো মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১২ শতাধিক জেলে পরিবারেও একই অবস্থা বিরাজ করছেন।

মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস মেঘনার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দুই উপজেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে ১৪ হাজার ৮৪০ জন। মাসে ৪০ কেজি করে ভিজিএফের খাদ্যসহায়তা (চাল) পাচ্ছেন ১২ হাজার ২৯৬ জন জেলে। খাদ্যসহায়তা পাচ্ছেন না ২ হাজার ৫৪৪ জন জেলে। এর মধ্যে সহায়তাবঞ্চিত ইসলাম ধর্মাবলম্বী জেলে ১ হাজার ২৭২ জন।

শুক্রবার সকালে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর, আমিরাবাদ, নন্দলালপুর ও ষাটনল এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাইশপুর ও কাজিরবাজার এলাকার জেলেপাড়ায় দেখা যায়, অনেক জেলে পরিবারে ঈদের আমেজ নেই। মনমরা হয়ে আছেন পরিবারের সদস্যরা। মেঘনায় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় এবং রোজগার না থাকায় অধিকাংশ জেলের পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। ঘরে চুলা জ্বলছে না তাঁদের। আর্থিক সমস্যায় ঈদের কেনাকাটা ও সওদা করাও বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

মেঘনায় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জাল মেরামত করে সময় কাটাচ্ছেন এক জেলে। শুক্রবার সকালে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘পেডে দুই মুঠ ভাতই জোডে না, ঈদের সওদা করুম ক্যামনে’