Samakal:
2025-04-18@11:01:02 GMT

শ্রদ্ধায় স্মরণ ভাষাশহীদদের

Published: 21st, February 2025 GMT

শ্রদ্ধায় স্মরণ ভাষাশহীদদের

শামীম রেজা ও ফারদীন ইফতেখার। দুই বন্ধু। থাকেন ইস্কাটনে। দিনের কাজ সেরে রেখেছেন আগেই। রাতে যাবেন ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাদের সঙ্গে দেখা হলো। হাঁটতে হাঁটতে গল্প। জানালেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থা থেকেই প্রভাতফেরিতে আসা হতো। কর্মজীবনে ব্যস্ততা বাড়লেও দিনটি এলে ঘরে থাকতে ইচ্ছে করে না। বন্ধুদের নিয়ে ছুটে আসেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

শামীম ও ফারদীনের মতন এমন হাজারো মানুষের দেখা মিললো শহীদ মিনারে। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে, কারও সঙ্গে পরিবার। বাবা-মায়ের সঙ্গে এসেছে ছোট্ট শিশুও।

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিবসটিতে হাজারো মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আজ ভোর থেকেই প্রভাতফেরি করে শ্রদ্ধার ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি পৃথকভাবে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। রাত ১২টার পর প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো.

সাহাবুদ্দিন। এরপর রাত ১২টা ১২ মিনিটের দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ দলে দলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংঘ, সংগঠন, আর্থিক, সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হল, ক্লাব, ইউনিয়নের হয়ে কিংবা ব্যক্তি ও পারিবারিকভাবে শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। তাঁদের কারও হাতে একগুচ্ছ ফুল, ফুলের তোড়া কিংবা শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁদের পোশাক ও সজ্জায় শোকের কালো রং। কণ্ঠে সেই বেদনাবিধুর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…’।

বিভিন্ন দল, সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের বাইরেও ব্যক্তি উদ্যোগে শত শত মানুষকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে। ৮ বছর বয়সী মেয়ে সানজানাকে সঙ্গে নিয়ে উত্তরা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন বেসরকারি কর্মকর্তা সোহেল রানা। মেয়ের পাঁচ বছর বয়স থেকেই মেয়েকে সঙ্গে করে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসছেন বলে জানালেন তিনি।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এক শ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কীভাবে জিন জাতির সৃষ্টি হলো

ইসলামি ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী জিন হলো অগ্নি দেহী, বুদ্ধিমান অদৃশ্য জীব। আল্লাহর আদেশ পালনের জন্যই তাদের সৃষ্টি। তারা প্রয়োজনে নানা আকার ধারণ করতে পারে। পবিত্র কোরআনের অনেক সুরায় জিনের উল্লেখ আছে। যেমন ‘সুরা জারিয়াত’-এর ৫৬ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘আমার সেবার জন্যই আমি মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করেছি।’

আরবি ‘জিন্ন’ থেকে জিন শব্দটি এসেছে। জিন্ন অর্থ আচ্ছন্ন বা মোহাবিষ্ট করা। কারও ওপর পাগলামি ভর করলে চলতি ভাষায় তাকে বলে ‘মজনু’, যার মূল শব্দ মাজনুন বা ভূতগ্রস্ত। মানে যাকে জিন আছর করেছে।

এর আরেকটি অর্থ ‘আবরণ’। জিন শব্দের ধাতু থেকে উৎপন্ন সব শব্দেই আবরণের অর্থ পাওয়া যায়। জিন ও মানুষের মাঝে টেনে দেওয়া হয়েছে আবরণ। ফলে মানুষ তাদের দেখতে পায় না, কিন্তু তারা ঠিকই মানুষকে দেখতে পায়। আল্লাহ তায়ালা জিন ও শয়তানদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘সে (শয়তান) ও তার দলবল তোমাদের যেভাবে দেখতে পায়, তোমরা তাদের সেভাবে দেখতে পাও না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ২৭)

আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫

জিন জাতি কারা

প্রাক-ইসলাম আরবে জিন সম্পর্কে এক রকম ধারণা প্রচলিত ছিল। তবে তা পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত জিন থেকে আলাদা। ইসলামের আবির্ভাবের আগে আরবের মানুষ জিন বলতে বুঝত মরুবাসী পরি বা বনদেবতাকে। তাদের মানুষের শত্রু বলে গণ্য করা হতো।

কিন্তু পবিত্র কোরআনের জিন সে রকম কোনো অপদেবতা নয়। তারা মানুষের মতোই আল্লাহর সৃষ্ট এক ধরনের জীব। তাদের মধ্যে ভালো-মন্দ উভয়ই আছে। মানুষ ও জিন উভয়েরই হেদায়তের জন্য আল্লাহ কিতাব ও নবীদের পাঠিয়েছেন। আর মন্দ কাজের জন্য মানুষের মতোই তাদের শাস্তি পেতে হবে।

পবিত্র কোরআনের ‘সুরা আনাম’-এর ১৩০ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি বলব, হে জিন ও মানুষ সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্য থেকে কি রাসুলরা তোমাদের কাছে আসেনি যারা আমার নিদর্শন তোমাদের কাছে বয়ান করত এবং তোমাদের এদিনের মোকাবিলা করার জন্য সতর্ক করত?’

অন্য ধর্ম কী বলে

অন্যান্য ধর্মও জিনের কথা বলে। খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীরা মনে করেন, সব জিনই ইবলিস শয়তান। তাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। সৃষ্টি গতভাবে তারা মানুষ থেকে শক্তিশালী। তারাই মানুষের সব পাপের নেপথ্যে ক্রিয়াশীল। তাই তাদের অপবিত্র আত্মা বা শয়তানের আত্মা বলে ডাকা হয়। (আল-মাওসুআতুল ইয়াহুদিয়া, ৫/১৫২৬)

ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থ তালমুদ অনুসারে, ‘শয়তান অর্থাৎ জিন কয়েক ধরনের, যাদের ভিন্ন ভিন্ন উপাদান থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের কাউকে সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন থেকে, কাউকে পানি থেকে, কাউকে আবার বাতাস থেকে। মাটি থেকেও তৈরি করা হয়েছে তাদের এক দলকে। তবে সবার রুহ সৃষ্টি করা হয়েছে চাঁদের আলোর এক বিশেষ ধরনের উপাদান দিয়ে।’ (আসাতিতুল ইয়াহুদ, লুইস গিন্সবার্গ, ১/২১৩)

আরও পড়ুনইবলিস কি জিন নাকি ফেরেশতা১৬ মার্চ ২০২৫

জিনের উদ্ভব

‘সুরা হিজর’-এর ২৭ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘খুব গরম বাতাসের ভাপ থেকে আমি জিন সৃষ্টি করেছি।’ আর সুরা রহমানের ১৫ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তিনি (আল্লাহতায়ালা) জিনদের সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন অগ্নিশিখা থেকে।’

জিনদের আল্লাহ তায়ালার মানুষের মতোই ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মানুষ ও জিনকে একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ৫৬)

মানবজাতির মতো কিয়ামতের মধ্য দিয়ে জিনেরাও ধ্বংস হয়ে যাবে। হাশরের ময়দানে মানুষের সঙ্গে তাদের হিসাব-নিকাশ হবে, বুঝিয়ে দেওয়া হবে ভালো ও মন্দ কর্মের প্রতিদান। সুরা হুদ-এর ১১৯ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি জিন ও মানুষ উভয়কে দিয়ে জাহান্নাম পূর্ণ করব।

আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ