রাজশাহী মহানগরে গৃহবধূ হেলেনা খাতুনকে (৩৫) পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী আলমগীর হোসেন রয়েল (৪২) ও সতিন মোসা. সেলিনাকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। 

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে কিশোরগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজশাহীর র‌্যাব-৫ ও  কিশোরগঞ্জের র‌্যাব-১৪ এর যৌথদল তাদের গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-৫ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় শিশু কন্যাকে পুড়িয়ে ও মাকে পিটিয়ে হত্যা 

দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মৃত্যু, গ্রেপ্তার ৪

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নগরের ভদ্রা এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে গৃহবধূ হেলেনার আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দ্বিতীয় স্ত্রী হেলেনাকে নিয়ে ওই বাসায় উঠেছিলেন রয়েল। ঘটনার দিন থেকে রয়েল ও তার প্রথম স্ত্রী সেলিনা আত্মগোপনে ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন হেলেনার মা।

র‌্যাব জানায়, দুই বছর আগে হেলেনাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন রয়েল। সংসারে সতীন থাকায় বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। হেলেনাকে তারা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ আছে। এ অভিযোগে থানায় মামলা হলে র‌্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে।

র‌্যাব আরো জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তদন্তে আসামি রয়েল ও তার প্রথম স্ত্রী সেলিনা নিজেদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনের চেষ্টা করেন। তাদের রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তাদের আদালতে তুলবে।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই আন্দোলন চলাকালে ধর্ষণের অভিযোগ

জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের কর্মীদের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা, নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্যদের বিষয়টি জানালেও কাউকে পাশে না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি। 

শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন তিনি। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (পুনাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

অনুষ্ঠানে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া গোল চত্বর থেকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাকে কলেজ রোডের পেছনে আজমেরি ওসমানের বাসার নিচের একটি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে অনেক গালিগালাজ করে। গালিগালাজের এক পর্যায়ের অফিস থেকে সবাই বেরিয়ে যায়। তবে দুইজন অফিসে ছিলেন। তারা সেখানে আমাকে ধর্ষণ করে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সমন্বয়কদের ধর্ষণের বিষয়টি জানিয়েও কোনো সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, উমামা ফাতেমাকে যখন জানাই, তখন তিনি বলেন- ‘ও তোমার সঙ্গে অনেক খারাপ হইছে, দেখব বিষয়টা।’ নুসরাত তাবাসসুমকে যখন বলি, তখন তিনি বলেন- ‘আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস।’ এরপর তাকে একাধিকবার মেসেজ করেছি। তিনি মেসেজ সিন করে রেখে দিয়েছেন। সারজিসও হোয়াটসঅ্যাপে নক দিতে বলেছিল। তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে সারজিস ভাইও কোনো কিছু করেননি।

ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, আমার এই ঘটনা এমন কেউ নেই যে জানে না। যাদের কারণে আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে তারা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই আন্দোলনের পরও আমাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য আমি একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছি। গত ডিসেম্বরে আমার বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। জুলাই আন্দোলনের ছয় মাস পার হলেও আমি ন্যায্য বিচার পাইনি।

ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আহনাফ নামে একজন বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করে একটি পোস্ট দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম আহনাফের পোস্টটি শেয়ার করে লেখেন, আদৃতাকে একবার আমার সামনে এনে অভিযোগ করতে বলেন যে- তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি। আদৃতাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা সবকিছুর কথা বলা হয়েছিল।

তিনি আরও লেখেন, কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু, কিন্তু তার অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না। আদৃতাকে বলুন নাম নিয়ে অভিযোগ করতে, অন্যথায় তার স্টেটমেন্ট এবং আপনার বিরুদ্ধে না জেনে অভিযোগ করার নিন্দা একসঙ্গে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে দেয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ