ক্র্যাম্পকে ‘দোষী’ করে আক্ষেপে পুড়ছেন হৃদয়
Published: 21st, February 2025 GMT
ভারতের বিপক্ষে তাওহীদ হৃদয়ের ১০০ রানের ইনিংসে দু’রকমের দীর্ঘশ্বাস ফেলার কথা ভক্তদের। একটা আক্ষেপ করে, ‘এমন সময় ইনজুরিটা হলো।’ অন্যরা বিরক্তির, ‘একটা সেঞ্চুরি করতেই এই দশা!’ আক্ষেপে পুড়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক করা হৃদয়ও। তার ওই ক্যাম্প দলের বড় ক্ষতি করেছে এটা একপ্রকার স্বীকারই করে নিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটার।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হৃদয় বলেন, ‘আমার ক্যাম্পটা না হলে ২০-৩০ রান বেশি করতে পারতাম। বিশ্বাস ছিল, ডট বলগুলো পূরণ করে দিতে পারব। আমি ও জাকের শেষ করে আসতে পারলে রানটা ২৭০ হতে পারত। তখন ম্যাচের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন হতো।’
তাওহীদ হৃদয় যখন পাঁচে ব্যাট করতে নামেন তখন স্কোরবোর্ডে ২৬ রানে ৩ উইকেট। খানিক বাদেই সেটা ৩৫ রানে হয়ে যায় ৫ উইকেট। শুরুতে উইকেট বেশ কঠিনই মনে হয়েছে। যদিও উইকেট বিলিয়ে ফেরেন নাজমুল শান্ত-মেহেদী মিরাজরা। পরে হৃদয় ও জাকের নির্ভার ব্যাটিংয়ে ১৫৪ রান যোগ করেন।
হৃদয় জানিয়েছেন, বাহির থেকে উইকেট সহজ মনে হলেও আসলে সহজ ছিল না, ‘বাহির থেকে সহজ মনে হলেও ৫ উইকেট হারানোর পর কাজটা সহজ ছিল না। উইকেট ট্রিকি ছিল। মাঝে মধ্যেই কিছু স্পিন বল ভয় ধরাচ্ছিল। আমি কেবল ধৈর্য্য ধরেছিলাম এবং কীভাবে ওই পরিস্থিতি থেকে এগিয়ে যাওয়া যায় ভাবছিলাম।’
জাকেরের সঙ্গে জুটির সময় তাদের মাইন্ডসেট পরিষ্কার ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন হৃদয়। তিনি জানান, দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়ায় জুটি গড়া ভিন্ন কোন উপায় ছিল না তাদের। সেভাবেই খেলেছেন। হৃদয়ের মতে, তাকে লড়াই করতেই হতো। তিনি সেই পথটা কেবল খুঁজছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।
গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।
ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’
তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।